শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > আওয়ামী লীগের তৃণমূল দ্বন্দ্ব মেটানোর উদ্যোগ

আওয়ামী লীগের তৃণমূল দ্বন্দ্ব মেটানোর উদ্যোগ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥

বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে আসবে এমনটা ধরে নিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ, এ জন্য একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দলের কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত, বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন- আমরা মনে করছি আগামি সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে তাই এখন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে দল। সব দলের অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতির উদ্দেশে আগে নিজেদের মধ্যে বিবাদ মিটিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালি করছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ মাঠ পর্যায়ে বিরাজমান কোন্দল-দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করে দিয়েছে।

গত রোববার থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ধারাবাহিকভাবে তৃণমূলের ভেতরের দ্বন্দ্ব- বিরোধ মেটাতে বিরোধপূর্ণ জেলার নেতা ও এমপিদের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক শুরু করেছেন।

ওবায়দুল কাদের ওই দিন চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। সোমবার বৈঠক করেছেন যশোরের নেতাদের সঙ্গে। গতকাল মঙ্গলবার বসেছেন সাতক্ষীরা জেলার নেতাদের নিয়ে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার নীলফামারী জেলার নেতাদের সাথে বৈঠকে বসবেন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই পেশাজীবী সংগঠন আইনজীবী এবং সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনের জন্য আজ বুধবার বিকালে সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে এবং ৩০ এপ্রিল আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ২২ এপ্রিল চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, যারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন তাদেরকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, দলের কিছু লোক আছে যারা আওয়ামী লীগ করে, আবার নৌকার বিরুদ্ধে ও কাজ করে। যারা নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, দলের প্রতি তাদের আনুগত্য নেই। যারা দলে থেকেও দলের পিঠে ছুরি মারে তারা বিশ্বাসঘাতক।

এদিকে আওয়ামী লীগের ভিতরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত থামছেই না। কিছুদিন পরপর নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়াচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। সর্বশেষ সংঘাতে জড়িয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা। মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের সঙ্গে জেলা সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর দ্বন্দ্ব রবিবার সংঘাতে রূপ নেয়।

গত এক সপ্তাহে কুমিল্লার মুরাদনগরে এবং নরসিংদীর রায়পুরায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে তিনজনের প্রাণ গেছে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছিরের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধে চলছে।

কুমিল্লা উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের মধ্যে দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্য। কুমিল্লা মহানগরে দলের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও প্রবীণ নেতা আফজল খান পরিবারের দ্বন্দ্ব বহু পুরনো। যার সর্বশেষ রূপ দেখা গেছে সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও। দলের এ বিরোধের বিষয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম না বলা শর্তে বলেন, একটা বড় রাজনৈতিক দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু স্থানে যে সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। একথাও সত্য কয়েকজন সংসদ সদস্যের কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিরোধ নিরসনে দল কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিরোধপূর্ণ জেলাগুলোর নেতাদের ঢাকায় ডেকে কথা বলা হচ্ছে।