শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > আন্তর্জাতিক > আফ্রিকান ইউনিয়নে মিশরের কার্যক্রম স্থগিত অভুত্থ্যানের প্রতিবাদে মুরসি সমর্থকদের বিক্ষোভ

আফ্রিকান ইউনিয়নে মিশরের কার্যক্রম স্থগিত অভুত্থ্যানের প্রতিবাদে মুরসি সমর্থকদের বিক্ষোভ

শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ ৫৪ জাতির আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) মিশরকে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে স্থগিত ঘোষণা করে এর সদস্যপদ স্থগিত করেছে। আল-জাজিরা জানিয়েছে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে উৎখাত করার পর গতকাল এইউ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এদিকে মিশরে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মুরসির সমর্থকরা কায়রোর নসর সিটিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে তিনজন মুরসি সমর্থক নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল এক বৈঠক শেষে এইউ এর শান্তি এবং নিরাপত্তা কাউন্সিলের সেক্রেটারি অ্যাডমোর কামবুদজি বলেছেন এইউ এর ধারা অনুযায়ী আফ্রিকান ইউনিয়নের শান্তি এবং নিরাপত্তা পরিষদ মিশরে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনবর্হাল না হওয়া পর্যন্ত মিশরকে এইউ’র সব ধরনের কর্মসূচি থেকে এর অংশগ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কোন সদস্য দেশের সাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থা বিঘ্নিত হলে এইউ সদস্য পদ স্থগিত করার মাধ্যমেই সাধারণ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে থাকে। সরকারবিরোধী জন বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে বুধবার সেনাবাহিনী মুরসিকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণ করে। এদিকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে অপসারণের প্রতিবাদে মুরসি সমর্থকরা নসর সিটিতে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়েছে। ইসলামপন্থিদের সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে গতকাল বিকালে এ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল। ব্রাদারহুড বৃহস্পতিবার বিকালে জনগণকে জুমার নামাজের পর এ বিক্ষোভে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। এ সমাবেশকে মিশরে মুরসির সমর্থকদের একটা পরীক্ষা হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। জন বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে সামরিক বাহিনী মুরসিকে উৎখাতের উদ্যোগ নিলেও সামরিক বাহিনীর এ পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে মুসলিম ব্রাদারহুড। তারা এ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় অভিমুখে যাত্রা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। ওদিকে মিশরের সামরিক বাহিনী আপসের আহ্বান জানিয়ে যে কোন ধরনের সহিংসতার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। শুক্রবারের পরিকল্পিত বিক্ষোভের প্রাক্কালে পুলিশ বিভিন্ন ইসলামপন্থি নেতার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। গতকাল কর্তৃপক্ষ গাজার রাফা সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছিল। জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিরি নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী ফেইসবুকে বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেছে প্রত্যেকেরই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। তবে এ অধিকারের অপব্যবহার করা উচিত নয়। সেনাবাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে মাত্রাতিরিক্ত বিক্ষোভ জনগণের মধ্যে অস্থিরতার সৃৃষ্টি করতে পারে।
একই সঙ্গে তারা আবারও বলেছে কোন রাজনৈতিক সংগঠন তাদের লক্ষ্যবস্তু নয়। এমনকি নব্য শপথগ্রহণকারী অর্ন্তর্র্বতী নেতা আদলি মনসুর বৃহস্পতিবার দেয়া এক বক্তব্যে বলেছেন তিনি ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে চান। তিনি বলেন, মুসলিম ব্রাদারহুড জনতারই অংশ। জাতি গঠনের কাজে তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তারা যদি এ আমন্ত্রণে সাড়া দেন তাহলে তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান নাভি পিল্লাই মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতাদের আটকের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মুখপাত্র রূপার্ট কোলভিল গতকাল জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ ধরনের আটকের বৈধতার জন্য সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগ থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন এসব নেতৃবৃন্দকে কেন আটক করা হয়েছে সে বিষয়ে মিশরের নতুন শাসককে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া উচিত বা তাদের মুক্তি দেয়া উচিত। আটক হওয়া ব্রাদারহুডের নেতৃবৃন্দের মধ্যে এর সর্বোচ্চ নেতা মোহামেদ বাদিও রয়েছেন। গত সপ্তাহে কায়রোর ব্রাদারহুডের হেডকোয়ার্টারের বাইরে আট বিক্ষোভকারীকে হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাদি এবং তার সহযোগীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় হাজির হবার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।