শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী জব্বারের মৃত্যু

আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী জব্বারের মৃত্যু

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে আমেরিকার ফ্লোরিডায় তার মেয়ের মারা যান তিনি। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এ আসামি এতদিন সেখানে আত্মগোপনে ছিলেন। তার বাড়ি মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের খেতাচিড়া গ্রামে।

তার মৃত্যুর বিষয়টি পারিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যানসার আক্রান্ত অবস্থায় আমেরিকায় তার বড় মেয়ের বাসায় আত্মগোপনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার অভিযুক্ত হন। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন-১৯৭৩ এর ৩(২)/এ, ৩(২)/সি, ৩(২)/ডি, ৩(২)/জি ও ৩(২)/এইচ এবং ২০(২) ধারা অনুসারে গঠন করা এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ৩৬ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ১৫ জনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও গুরুতর জখম, ২০০ জনকে ধর্মান্তরিতকরণ এবং লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে ৫৮৭টি বাড়ি-ঘর ধ্বংস করার অভিযোগ। এসব অভিযোগের মধ্যে সবগুলো অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে।

রায়ে এক নম্বর (দুই মুক্তিযোদ্ধা হত্যা ও ১৬০টি বাড়িতে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ), ২ নম্বর (শারদা কান্ত পাইককে হত্যা ও ৩৬০টি বাড়িতে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ), ৩ নম্বর (১২ জনকে গণহত্যা ও ৬০টি বাড়িতে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ) এবং ৪ নম্বর (২২ জনকে গণহত্যা ও ১৫ জনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুরুতর জখম) অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন আবদুল জব্বার। এছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে ২০০ জনকে ধর্মান্তরিতকরণের দায়ে আরও ২০ বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে তাকে।

মুসলিম লীগের নেতা আব্দুল জব্বার ১৯৫৬ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। স্থানীয় মুসলিম লীগ নেতা শ্বশুরের হাত ধরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তৎপরতায় জড়ান জব্বার। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার নেতৃত্বে মঠবাড়িয়া থানায় রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। জব্বার ছিলেন থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান। আত্মীয় ইস্কান্দার মৃধাকে তিনি রাজাকার কমান্ডার করেন।

জব্বারের নেতৃত্বে ও তার উপস্থিতিতে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার ফুলঝুড়ি, নলী ও আঙ্গুলকাটা গ্রামে মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

১৯৮৮ ও ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার।