ঢাকা: টার্মিনালে আর্বজনার চেয়ে মানুষের মূল্য অনেক কম। এখানে মানুষের চেয়ে টাকার মূল্য অনেক বেশি। অসৎ পথে টাকা আয় করলে আজ মশার কামড় খেতে হতো না। এভাবে খোলা জায়গায় মশার যন্ত্রণায় ঘুমোতে পারি না। আমাদের ঘুম মশা শেষ করে দেয়। মশা যেন রক্ত নয় কলিজা খায়।
রোববার রাত আড়াইটার দিকে সদরঘাট টার্মিনালে এসব কথা বলছিলেন রিকশা চালক মো. সামাদ(৬০)।
সামাদের বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। প্রায় ৫০ বছর আগে ঢাকা শহরে আসেন তিনি। গত ৪৬ বছর ধরে রিকশা চালিয়ে সংসার চালান।
রিকশা চালিয়ে সংসার ও ভারতে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করা দুই ছেলের পড়ার খরচ জোগাড় করেন। ঘুমান সদরঘাট টার্মিনালের ফ্লোরে। তার মতো প্রায় হাজার খানেক ছিন্নমূল মানুষ ঘুমান সেখানে।
বৃদ্ধ সামাদ আক্ষেপ করে বলেন, “মাত্র ১০ বছর বয়সে ঢাকা শহরে আসি। প্রায় ৫০ বছর ধরে রিকশা চালাই। ঢাকায় যখন আসি তখন ঢাকা শহরে হাতেগোনা কয়েকটি বিল্ডিং ছিল।”
সৎ থাকাতে কিছুই করতে পারিনি। নিজের বাসা তো দূরে থাক ভাড়া করেও বাসায় থাকার সাধ্য নেই। সৎ থাকলে হায়াত বাড়ে বলে তিনি মন্তব্য করেন তিনি।
দুই ছেলে সম্পর্কে বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল ছেলেদের আল্লাহর রাস্তায় দেব। এ জন্য নিজে কখনো খেয়ে না খেয়ে সাখাওয়াত, আল-আমিনকে ভারতের দেওভোগ মাদ্রাসায় পড়াচ্ছি।”
আগামী দুই /তিন বছরের মধ্যে তারা পড়া শেষ করে বের হয়ে আসবো। তখন হয়ত আমার দু:খ শেষ হবে।”