বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৭ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > আসছে ঈদে কাঁচা চামড়ার বাজারে ধ্বসের আশঙ্কা

আসছে ঈদে কাঁচা চামড়ার বাজারে ধ্বসের আশঙ্কা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: বাংলাদেশের রফতানিজাত পণ্যের মধ্যে কাঁচা চামড়া প্রথম সারির একটি। রফতানি আয়ের দিক দিয়ে কাঁচা চামড়ার অবস্থান তৃতীয় স্থানে। দেশে প্রস্তুতকৃত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের প্রায় ৯৫ ভাগই বিদেশে রফতানি হয়। কিন্তু সেই রফতানিতে এবার ভাটা পরতে যাচ্ছে।

যেসব দেশে বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়ার তৈরি জিনিসপত্র রফতানি করা হয় সেখানেই দাম কমেছে ২০ শতাংশ। দাম কমার এ হার দেশীয় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। আসছে ঈদেই চামড়া ব্যবসার উপর বড় ধরনের ধ্বসের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

আসছে ঈদুল আযহায় কাঁচা চামড়ার দাম কমার আশঙ্কা প্রকাশ করে ফিনিস লেদার অ্যান্ড লেদার গুডস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি হাজী মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বাংলানিউজকে মোবাইল ফোনে বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে চামড়ার দাম অনেক কম। আমরা সাধারণত যেসব দেশে চামড়া ও চামড়া জাতীয় দ্রব্য পাঠাই সেখানে এখন শতকরা ২০ শতাংশ কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এই প্রভাব আমাদের বাজারেও পরবে।

তিনি বলেন, আমাদের কাঁচা চামড়ার সিংহভাগই আসে ঈদুল আযহার সময়। কিন্তু এই সময় বিশ্ববাজারে দাম পড়ে যাওয়া চামড়া শিল্পের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এ চামড়া ব্যবসায়ী আরো জানান, ঈদ উপলক্ষে চামড়ার দাম নির্ধারণে দুই এক সপ্তাহের মধ্যেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসা হবে। আগে থেকেই চামড়া দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। তবে যাইহোক এবার চামড়ার দাম গত বারের চাইতে শতাংশ কমবে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

আসছে ঈদে চামড়া ব্যবসীয়দের উপর বড় ধরনের ক্ষতির কথা উল্লেখ করে বলেন, কোরবানির ঈদের আমাদের দেশে সবচাইতে বেশি চামড়া সংগ্রহ করা হয়। চামড়া প্রায় ৬০ শতাংশই আসে এই ঈদে। অথচ এখন প্রতিদিনই প্রায় ফরেন মার্কেটে চামড়ার দাম পরে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গত দুই মাসে ৩০/৪০ লাখ বর্গফুট কাঁচা চামড়ার এলসি বাতিল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা আমাদের চামড়া শিল্পের পরিবেশগত কারণ দেখিয়ে এই এলসি বাতিল করে। এটা এ ব্যবসার জন্য বড় ধরনের হুমকি। এখন যদি ঈদের সময় এভাবে এলসি বাতিল হতে থাকে তাহলে ব্যবসা করাই কষ্ট।

ব্যবসায় ঝুঁকির কথা শিকার করে আনোয়ার টেনার প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক দিলজাহান ভূইয়া বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে আমাদের ফরেন মার্কেট খুবই খারাপ। ফরেন মার্কেটে চামড়ার চাহিদা অনেক কমে গেছে। গত রমজানের ঈদে যেসব চামড়া স্টকে রাখা ছিলো সেগুলোই এখনও বিক্রি করতে পারিনি। তাই আসছে কোরবানির ঈদে চামড়া বাজার কি হবে তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।

তিনি বলেন, দাম কমা বা বাড়া বড় কথা নয়। আমরা চামড়া রফতানি করতে পারবো কি না সেটাই দেখার বিষয়।

তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরেক টেনারি ব্যবসায়ী আজমেরী টেনারির মালিক মো. শহিদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ব্যবসার অবস্থা একদম বাজে। গত দুই তিন মাস আমাদের রফতানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে যেখানে মাসে ৪/৫ কোটি টাকা রফতানি করতাম এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগামী ঈদে কি অবস্থা হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।

বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যরে বড় বাজার হলো র্জামানি, ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, রাশিয়া, ব্রাজিল, জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ঈদুল আজহার সময় কোরবানি চামড়ার সিংহভাগ আসে। কাঁচা চামড়ার মধ্যে গরু, মহিষ, ছাগলের চামড়াই উল্লেখযোগ্য।

তবে এবার বিশ্বের বাজারে দাম কমার অযুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ী সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করতে পারেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। বিশেষ করে মধ্যসত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীরা। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম