শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > আন্তর্জাতিক > ইরানে আক্রমণ করতে বলেছিল ইসরায়েল, সৌদি ও মিসর : জন কেরি

ইরানে আক্রমণ করতে বলেছিল ইসরায়েল, সৌদি ও মিসর : জন কেরি

শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু শক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনার সমাপ্তি হওয়ার আগেই ইসরায়েল, সৌদি আরব ও মিসর ইরানের বোমা ফেলার আহবান জানিয়েছিল। ওয়াশিংটনে একটি অনুষ্ঠনে গত মঙ্গলবার জন কেরি এ ধরনের বক্তব্যে বলেন, ইসরায়েল ইরানে আক্রমণ করতে সবচেয়ে বেশি চাপ সৃষ্টি করেছিল। ইসরায়েলের মিডিয়া সবসময় ইরানের সঙ্গে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কয়েকটি দেশের এ পারমানবিক চুক্তি করার জন্যে সাবেক এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে। জন কেরি ছিলেন এ চুক্তির একজন উল্লেখযোগ্য মধ্যস্ততাকারী।

জন কেরি বলেন, ইসরায়েল, সৌদি আরব ও মিসরের শাসকদের প্রত্যেকেই আমাকে বলেছিল, ইরানে বোমা হামলা করতেই হবে। এটিই একমাত্র উপায় যার ফলে তারা বুঝতে পারবে। কেরি সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ, মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নামও উল্লেখ করেন কেরি। কেরি বলেন, নেতানিয়াহু যথাযথভাবে চড়াও হয়ে ইরানের ওপর আক্রমণের জন্যে বলেছিলেন। টাইমস অব ইসরায়েল/হার্তেজ/আইইউভিএম প্রেস

জন কেরি বলেন, কিন্তু ইরানের আক্রমণ করতে বলার বিষয়টি ছিল আসলে ফাঁদ। আরব দেশগুলো ইরানের ওপর আক্রমণ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করত। আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ফরেইন রিলেশন কমিটির চেয়ারম্যান তখন ওই তিনটি দেশের শাসকরা আমাকে ইরানে হামলার জোর জবরদস্তি করে। জন কেরি ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন, রাশিয়া ও চীন এবং জার্মানি ইরানের সঙ্গে পারমানবিক সমঝোতামূলক ওই চুক্তিটি করে ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই। এ চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হয় গত বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে। এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর এ চুক্তি বাতিলের কথা বলে আসছে এবং নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বলেছিলেন ক্ষমতায় গেলে তিনি এ চুক্তি ছিড়ে ফেলবেন। কংগ্রেস এ চুক্তিটি পুনর্বিবেচনা করে দেখছে।
তবে জন কেরি বলেন, এ চুক্তিটি সবচেয়ে ভাল চুক্তি যা যুক্তরাষ্ট্র করেছে। টাইমস অব ইসরায়েলকে তিনি আরো বলেন, কোনো রকমের অতিরঞ্জন ছাড়াই বলতে পারি এধরনের চুক্তি না হলে বরং ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব আরো বৃদ্ধি পেত। বরং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন এ চুক্তি নিয়ে পানি ঘোলা করতে চাচ্ছেন। ইরানের সঙ্গে চুক্তি বাতিলে আমেরিকান ইহুদি সম্প্রদায়ের এধরনের রাজনৈতিক আবেদন সরল ও নির্লজ্জ এবং তাদের অধিকাংশই চুক্তিটি পড়ে দেখেননি।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া যে সব দেশে এ চুক্তির অংশীদার তারা এখনো এ চুক্তি বহাল রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে এ থেকে সরে না যাওয়ার আহবান জানিয়েছে।