শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > ইরান-যুক্তরাষ্ট্র: উন্মোচিত হচ্ছে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র: উন্মোচিত হচ্ছে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মধ্যে, ইরানের কূটনীতিকদের সঙ্গে মার্কিন কূটনীতিকদের বৈঠক, ফোনালাপ তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে এ দু’টি দেশের মধ্যে দীর্ঘ ৩৪টি বছরেরও বেশি সময় ধরে যে ঘোর শত্রুতা বিরাজ করছে তার অবসান হতে চলেছে। এমনটা আঁচ করতে পেরে হাসান রুহানিকে ওভাল অফিসে বসেই সরাসরি টেলিফোন করেন বারাক ওবামা। এ দু’টি দেশের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে এক রকম মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ ছিল। বিশ্লেষকরা সে অবস্থাকে ‘তালাকের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষ হয়েছে। তার আগে তাকে বহনকারী গাড়িটি যখন নিউ ইয়র্কের জট পাকানো ট্রাফিক জ্যামের পাশ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই তার ফোন বেজে ওঠে। ওপাশ থেকে পরিচয় দেয়া হয়- আমি বারাক ওবামা। এরপর তাদের মধ্যে ১৫ মিনিট আলাপ হয়। একে অন্যকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এমন সম্পর্কের কথা কেউ চিন্তা পর্যন্ত করতে পারেননি। কিন্তু রুহানি এবার জাতিসংঘে সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এক অন্যরকম ইরানকে তুলে ধরেছেন। আগে যে ইরান ছিল কট্টর। তিনি সেই ইরানকে অনেকটা উদার হিসেবে তুলে ধরেছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ দীর্ঘ সময় পরে নতুন এক সম্পর্ক গড়তে চলেছে ইরান। গতকাল ইরানের নাগরিকরা জানতে পারেন তাদের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সরাসরি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময়ে তারা ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্া নিয়ে যে উদ্বেগের দেখা দিয়েছে তা সমাধানের বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এ পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে বিশ্ব সমপ্রদায় থেকে ইরানকে একঘরে করে রাখা হয়েছে। তাতে ইরানের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে তিগ্রস্ত হয়েছে। ইরান এখন যে মনোভাব দেখাচ্ছে তার প্রশংসা করছেন পশ্চিমা অনেক কূটনীতিকও। এ নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫ সদস্য ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছে। তারা সবাই মিলে এ নিয়ে একটি নতুন পথ নির্দেশনা তৈরি করছেন। তারা চাইছেন, আগামী ১৫-১৬ই অক্টোবর জেনেভায় যে দ্বিতীয় দফা সমঝোতা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে তার আগেই ইরান বিস্তারিত তথ্য জানান দিক। জাতিসংঘ সম্মেলনের ফাঁকে ওবামা-রুহানি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে সে তি পুষিয়ে দিয়েছেন ওবামা। তিনি রুহানিকে ফোন করে বলে দিয়েছেন, তারা চান ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে যুগান্তকারী একটি সিদ্ধান্ত। তাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক গভীর হবে। বিগত বছরগুলোতে এ দু’দেশের মধ্যে এমন সম্পর্ক দেখা যায়নি। ওদিকে রুহানিকে ওবামা ফোন করার আগে নিউ ইয়র্কে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন হাসান রুহানি। তিনি এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানকে মহৎ জাতি হিসেবে উল্লেখ করেন। এ উদ্যোগকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা ভূয়সী প্রশংসা করেন। ওদিকে ইসলামি কট্টরপন্থিদের সমর্থন দেয়ায় ও মানবাধিকার ইস্যুতে রুহানির ওপর চাপ সৃষ্টিতে ব্যর্থতার অভিযোগে বারাক ওবামার সমালোচনা করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের সংখ্যাগুরু নেতা এরিক ক্যান্টর। তবে নিজ দেশে সমর্থকরা রুহানির ব্যাপক প্রশংসা করেছেন। বিরোধীরা রাজধানী তেহরান বিমানবন্দরে তার দিকে ছুড়েছে জুতা। এ সময় তারা ‘আমেরিকা নিপাত যাক’ ‘ইসরাইল নিপাত যাক’ স্লোগান দেয়। তবে রুহানি বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশে হাত নাড়েন।