শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > অর্থ-বাণিজ্য > ঈদের পর পুঁজিবাজারে আসছে চীনের সাড়ে ৯শ’ কোটি টাকা

ঈদের পর পুঁজিবাজারে আসছে চীনের সাড়ে ৯শ’ কোটি টাকা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥

ঢাকা: চীনের দুই পুঁজিবাজার সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) দিচ্ছে ৯৪৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৫ টাকা। ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে ২৫ শতাংশ শেয়ারের বিনিময়ে এ টাকা দিচ্ছে চীনা দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। ডিএসইর অংশীদার হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়াম পুঁজিবাজরে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।

এর ফলে দেশের পুঁজিবাজার আন্তর্জাতিকভাবে মর্যাদায় উন্নীত হচ্ছে। অন্যদিকে তারল্য সংকটের বাজারে ডিএসইর ২৫০জন শেয়ারহোল্ডার বিনিয়োগ করবেন। ফলে বাজারের তারল্য সংকট কিছুটা কমবে বলে প্রত্যাশা বাজার সংশ্লিষ্টদের।

চীনের কাছ থেকে পাওয়া এ টাকার ৮০-৯০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে বলে আশা করেন ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন ডিএসইর ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে চীনা কনসোটিয়ারে কাছে। সেই চুক্তি অনুসারে চীনা দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ঈদের পর অর্থাৎ আগস্ট মাসের শেষদিকে টাকা দিচ্ছে। কোনো সমস্যা হলে হয়তো সেটা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দিবে।

তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে বাজারে আস্থা ও তারল্য সংকট দূর করতে এই টাকা বিনিয়োগ করবো। সেই লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রীকে একটি প্রস্তাবও দিয়েছি যাতে করে এই টাকার ওপর কর প্রত্যাহার করেন।

ডিএসই সূত্র জানায়, এই টাকা জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট করাসহ অন্যান্যসব কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন সর্বশেষ এ টাকার ওপর থাকা ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহার এবং ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেনের ওপর উৎসে কর দশমিক ০১৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হবে। এ দাবিসহ সব কিছু ঠিকঠাক পূরণ হলে আগস্টের শেষ সপ্তাহে এই টাকা পাবে ডিএসইর শেয়ারহোল্ডাররা। নয় তো সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ হবে।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখা ও বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আরো বেশি আকৃষ্ট করতে ডিএসইর শেয়ারের ওপর ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহারের কথা বলেছি। এটি হলে আমরা সব টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবো। তাতে বাজারে ফ্রেশ ফান্ড আসবে। তারল্য সংকট কিছুটা দূর হবে।

পাশাপাশি শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা চেয়েছি, এটি দেওয়া হলে পুরো টাকা ডিএসইর উন্নয়নে ব্যয় করবো। এ টাকায় ডিএসইতে ডাটা সেন্টার ও ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলম্যান্ট করপোরেশন করা হবে। কারণ চীনা করসোটিয়াম ৩৭ মিলিয়ন ডলার অর্থদিবে কারিগরি সহযোগিতায়।

সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সাংহাই ও শেনজেন চীনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুঁজিবাজার। বাজার মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের সেরা দশ স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকায়ও রয়েছে এ দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। ফলে তারা ডিএসইর মালিকানায় আসায় দেশের পুঁজিবাজার আন্তর্জাতিকভাবে মর্যাদা পেয়েছে। এর ফলে পুঁজিবাজারে বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আকৃষ্ট হবে।

এ ছাড়াও কারিগরিভাবে শক্তিশালী হবে বলে জানান তিনি।

চলতি বছরের ১৪ মে রাজধানীর লা-মেরিডিয়ান হোটেলে ডিএসইর স্ট্রাটেজিক পার্টনার (কৌশলগত বিনিয়োগকারী) হিসেবে সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে চীনা স্টক এক্সচেঞ্জ। অনুষ্ঠানে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এ এম মাজেদুর রহমান, শেনজেনের প্রেসিডেন্ট ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ওয়াং জিয়ানজুন এবং সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জর চেয়ার অব সুপারভাইজরি বোর্ডের প্যান জুইজিয়ান চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এসময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেন, ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাশেম, ডিএসইর পরিচালক ও সদস্য এবং পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

তবে তার আগে নানা টালবাহার পর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়ামের আবেদনের প্রস্তাব গত ৩ মে অনুমোদন দেয় বিএসইসি। ডিএসইর এ মালিকানা পেতে চীনা কনসোর্টিয়াম ছাড়াও ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, ফ্রন্ট্রিয়ার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক-এর কনসোর্টিয়াম আবেদন করেছিলো। বাংলানিউজ