শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > খেলা > ‘ঈশ্বর’কে আউট করার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড!

‘ঈশ্বর’কে আউট করার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড!

শেয়ার করুন

স্পোর্টস ডেস্ক ॥
২০১১ সাল, ভারতীয় ক্রিকেট দল তখন ইংল্যান্ড সফরে। ওভাল টেস্টের একদিনের খেলা শেষে বিখ্যাত দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের খেলার পাতার প্রতিবেদন, ‘শচিনকে শততম সেঞ্চুরি করতে দেয়া হলো না, গোটা ভারত অপেক্ষায় ছিল।’ এটি দেখে মনে হতে পারে, কেউ হয়তো অন্যায়ভাবে শচিনকে সেঞ্চুরি করতে দেননি।

ঘটনা আসলে ঠিক তেমন না হলেও, ভারতীয় ভক্ত-সমর্থকরা অন্তত তাই মনে করতেন। তা না হলে কী আর নিজেদের ক্রিকেট ঈশ্বরকে আউট করায় বোলারকে এবং আউটের সিদ্ধান্ত দেয়ায় আম্পায়ারকে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হতো?

ইংলিশ পেসার টিম ব্রেসনান কখনও হয়তো ভাবেনওনি, কাউকে আউট করার কারণে পেতে হবে প্রাণনাশের হুমকি। আম্পায়ার রড টাকারের দূরতম কল্পনায়ও হয়তো ছিল না এটি। কিন্তু প্রসঙ্গ যখন ভারতীয় ক্রিকেট, আউট করা ব্যাটসম্যান যখন ভারতের মানুষের কাছে ঈশ্বরতূল্য শচিন টেন্ডুলকার, তখন আসলে সবকিছুই সম্ভব।

২০১১ সালের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ৯৯তম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন শচিন। পরে শততম সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করতে হয় ২০১২ সালে বাংলাদেশের মাটিতে হওয়া এশিয়া কাপের জন্য। মাঝের সময় তিনি খেলে ফেলেন ৩৩টি ইনিংস।

এমন নয় যে এই ৩৩ ইনিংসে খুবই অফফর্মে ছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। বরং মাঝের সময়টা ৮৫, ৯১ ও ৯৪ রানের ইনিংসও খেলেছিলেন শচিন। তবু পাওয়া হয়নি সেঞ্চুরি। এর মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভাগা ইনিংসটিই ছিল ওভাল টেস্টে খেলা ৯১ রানের ইনিংসটি।

সেদিন নিশ্চিত সেঞ্চুরির দিকেই এগুচ্ছিলেন শচিন, ব্যাটিং করছিলেন ৯১ রানে। টিম ব্রেসনানের একটি ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি খেলতে ভুল করেন শচিন, আঘাত হানে প্যাডে। আবেদন করেন ব্রেসনান, আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার রড টাকার। তবে সেটি আউট না দিলেও হতো, একদম নিশ্চিত লেগ বিফোর ছিল না সেটি।

টিভিতে রিপ্লেতে দেখা যায়, বলটা সামান্য ছুঁয়ে যেত লেগস্টাম্পকে। যা দেখে রেগে আগুন হয়ে যায় ভারতীয় সমর্থকরা। নিজেদের রাগ মেটানোর জন্য আম্পায়ার রড টাকার ও বোলার টিম ব্রেসনানকে দেন মৃত্যু হুমকি। এতদিন পর এসে সে কথা জানালেন ব্রেসনান নিজেই।

ইয়র্কশায়ার ক্রিকেটের এক পডকাস্টে তিনি বলেন, ‘আমি এবং আম্পায়ার, দুজনই মৃত্যুর হুমকি পেয়েছি। সেই ঘটনার অনেকদিন পর পর্যন্ত আমরা এই হুমকি পেতাম। আমি টুইটারে পেতাম এসব হুমকি আর আম্পায়ারকে তার বাসার ঠিকানায় নানান ভয় দেখানো হতো।’

‘আম্পায়ারকে বলা হতো, তুমি এটা আউট দিলে কীভাবে? বলটা লেগস্টাম্পে লাগত না। সেই ম্যাচের কয়েকমাস পর তার (রড টাকার) সঙ্গে আমার দেখা হয়। সে বলছিল, দেখো আমি এখন নিরাপত্তাকর্মী সঙ্গে নিয়ে চলি। তার বাসার আশপাশের পুলিশি পাহারা থাকত।’

সে ম্যাচের শচিনের আউটের কথা মনে করে ব্রেসনান বলেন, ‘তখন তার (শচিন) ৯৯টি সেঞ্চুরি। সেই সিরিজে বিসিসিআইয়ের কারণে রিভিউ রাখা হয়নি। টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচ ছিল, ওভালে। বলটা হয়তো লেগস্টাম্পের বাইরে দিয়েই যেত। তবে আম্পায়ার আউট দিয়ে দেন। সে (শচিন) হয়তো নিশ্চিতভাবেই সেঞ্চুরি পেতে পারতো। তবে আমরা সিরিজ জিতে বিশ্বের এক নম্বর দল হয়ে যাই।’