শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > জাতীয় > কুয়েতে মানবপাচার: এমপি শহীদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে

কুয়েতে মানবপাচার: এমপি শহীদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
কুয়েতে মানবপাচারের বিরুদ্ধে নতুন করে ধরপাকড় শুরু হলে নতুন একটি কোম্পানির নাম আলোচনায় চলে এসেছে। ওই কোম্পানি ১০ হাজার কর্মী কুয়েতে নিয়ে তাদের কাছ থেকে দুই কোটি দিনার আদায় করেছে।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম ওরফে পাপুলুর নামও এসেছে এই মানবপাচারের অভিযোগে।

তবে দেশটিতে গ্রেফতার অভিযান শুরুর আগেই এমপি শহীদ দেশে চলে এসেছেন বলে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আরব টাইমস অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে।

ওই অনলাইনটির খবরে দাবি করা হয়, কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাসের প্রতিবেদনে উঠে আসা এমপি শহীদের মানবপাচারের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা।

বাংলাদেশে একটি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে অনলাইনটি জানায়, ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক মানবপাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলেছেন। তিনি এমপি শহীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

খবরে দাবি করা হয়, ওই আইনপ্রণেতার বিরুদ্ধে যদি মানবপাচারের অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণ হয়, তবে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে– এমন অবস্থান বাংলাদেশ সরকারের।

দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী একটি অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে প্রবাসী ও বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে যেতে প্রত্যেকের কাছ থেকে দুই হাজার ও আবাসিক খরচ ৫০০ কুয়েতি দিনার আদায় করা হয়েছে।

গোয়েন্দাদের প্রকাশ করা প্রাথমিক প্রতিবেদন জানিয়েছে, ওই কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাংলাদেশ থেকে আসা প্রতিনিধি ও দালাল রয়েছে। তিনি সবার কাছে কমিশন বণ্টন করে দেন। আর লাভের বড় অংশটি যায় কোম্পানির মালিকের কাছে। গত দুই বছরে এভাবে তিনি বিশাল অঙ্কের অর্থের মালিক হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানবপাচারের বিরুদ্ধে কুয়েতের সিআইডির অভিযানের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে এক সপ্তাহ আগে এমপি কুয়েত ছেড়ে যান। কুয়েতে তার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি পাঁচ মাস ধরে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে না।

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত আরব টাইমসের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়েতে জনশক্তি রফতানির জন্য সরকারি কার্যাদেশ পেতে ঘুষ হিসেবে সেখানকার সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাদের পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি দিয়েছেন এমপি শহীদ। তার সম্পদের বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে সেখানকার এক নাগরিকের সঙ্গে যৌথ অংশীদারত্বে ব্যবসা শুরু করেছেন।

এ বিষয়ে কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম জানিয়েছেন, গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ বিষয়ে জানতে কুয়েত সিআইডির সঙ্গে দূতাবাস থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে তদন্ত চলমান বলে সিআইডি দূতাবাসকে এ মুহূর্তে কোনো তথ্য দিতে অপারগতা জানিয়েছে।

তবে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে দূতাবাসের অন্য একটি সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি জানতে সিআইডিতে যোগাযোগ করা হয়। বিস্তারিত কিছু না জানালেও আটক একজন বাংলাদেশির মাধ্যমে ওই অপরাধী চক্রের মানবপাচারে যুক্ততার বিষয়টি সিআইডি দূতাবাসকে জানিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে শহীদ গণমাধ্যমকে বলেন, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার কারণে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি এ ধরনের কোনো অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত নই। আমি সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি।