মঙ্গলবার , ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ , ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ , ৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > কূটনীতিক শাহনাজের বিবাহ বর্হিভূত অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে বিব্রত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

কূটনীতিক শাহনাজের বিবাহ বর্হিভূত অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে বিব্রত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকাঃ আবার আলোচনায় কূটনীতিক শাহনাজ গাজী। নিউইয়র্কে একটি অপ্রীতিকর ঘটনায় তাকে নিয়ে দেশ-বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। সম্প্রতি কয়েকটি ছবি নিয়ে আবারও শুরু হয়েছে তোলপাড়। বর্তমানে তিনি চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশ মিশনে কনসাল জেনারেলের দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিবাহ বর্হিভূত অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে বিব্রত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শাহনাজ গাজীকে নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিতর্ক রয়েছে। ২০১০ সালে নিউইয়র্কের গ্রান্ড হায়াত হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর তত্কালীন ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মাহবুবুল হক শাকিলের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তার ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও মাহবুবুল হক শাকিলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এখনও বহাল রয়েছে।

সূত্র জানায়, শাহনাজ গাজীর ওপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা নাখোশ। তাদের অনেকে অভিযোগ করে বলেন, নিউইয়র্কের ঘটনার পর শাহনাজ গাজীকে নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি হলেও শাহনাজ গাজীকে রাখা হয়েছিল বহাল তবিয়তে। সম্প্রতি আবারও তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ছবি ফেসবুকসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হচ্ছে। এতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার সমপর্যায়ের ক্যাডার কর্মকর্তারা বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে পারছেন না। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে বিএনপি সমর্থক একজন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গেও তার সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে তখন অনেকের মধ্যে কানাঘুষা ছিল।

এদিকে শাহনাজ গাজীকে নিয়ে পত্রপত্রিকায় খবর ছাপা হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি। ফেসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাসে শাহনাজ গাজী দাবি করেন তার ও শাকিলের ছবিগুলো ফটোশপের কারসাজি। তবে ইমেজ ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ছবিগুলো ফটোশপের মাধ্যমে করা হয়নি। এগুলো বাস্তবে তোলা ছবি।

তাছাড়া নিউইয়র্ক কাণ্ডের পরও তাদের একসঙ্গে বেশ কয়েকবার গুলশানের সামদাদো রেস্টুুরেন্টে দেখা গেছে। সেখানে তাদের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি তুলেছিলেন রেস্টুরেন্টটির কর্মচারী আলবার্ড। তিনি জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় আমি শাকিল স্যার ও শাহনাজ ম্যাডামের হাস্যোজ্জ্বল দৃশ্যের ছবি তুলে দিয়েছি। তারা একে অন্যের খুব ঘনিষ্ঠ বলেও জানতাম।

এদিকে শাহনাজ গাজী নিজেও এর আগে ছবিগুলো সম্পর্কে বলেছিলেন, ছবিগুলো কোথায়, কখন কী অবস্থায় তুলেছি তা তো এখন বলতে পারব না।

তবে মাহবুবুল হক শাকিলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানান, শাহনাজ গাজীর সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন। একসঙ্গে বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি তুলেছেন। এগুলোর কোনোটাই ফটোশপে বা অন্য কোনোভাবে তৈরি নয়।

২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের গ্রান্ড হায়াত হোটেলে শাহনাজ গাজীর কে মাহবুবুল হক শাকিলের অশোভন আচরণের অভিযোগ ওঠে। সে সময় শাহনাজ গাজী পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দফতরের পরিচালক ছিলেন। এই ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরে নিউইয়র্ক থেকে দেশে ফিরে আসেন শাকিল। পরে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারির পদটিও ছাড়তে হয় তাকে। তবে শাহনাজ গাজী ছিলেন বহাল তবিয়তে। ওই ঘটনার পর তাকে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশ মিশনে ডেপুটি কনসাল জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে এ বছরের শুরুতে চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশের নতুন মিশন খোলা হলে শাহনাজ গাজীকে কনসাল জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। একাধিক সূত্র জানায়, ওই ঘটনায় শাকিলের কোনো দায় ছিল না। এ ব্যাপারে আশ্বস্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী তাকে ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি আরও উচ্চতর পদে (বিশেষ সহকারী, মিডিয়া) নিয়োগ দেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক আসুদ আহমেদ বলেন, শাহনাজ ম্যাডাম ও শাকিল সাহেব দুজনই সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। নিঃসন্দেহে তারা অনেক বিবেকবান। তাদের নিয়ে যা শোনা যাচ্ছে তা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত। তাই এখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প থেকে অফিশিয়ালি বিষয়টিকে বিবেচনা করা হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।