শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > শীর্ষ খবর > কে এই ক্যাসিনো সাঈদ?

কে এই ক্যাসিনো সাঈদ?

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
টেন্ডারবাজি ও ঢাকায় ক্লাব ব্যবসার আড়ালে পরিচালিত অবৈধ ক্যাসিনোয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ায় মহানগর যুবলীগের কয়েকজন নেতার নাম আলোচনায় চলে আসে। এরা ঢাকার ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবহারের মূল হোতা। এদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ অন্যতম। ঢাকার ক্লাবগুলোতে যাতায়াতকারী জুয়াড়িদের কাছে তিনি ক্যাসিনো সাঈদ নামে পরিচিত।

মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গুরু মানেন সাঈদ। সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসার দেখভাল তিনিই করেন। পাশাপাশি তার নিজের জুয়ার ব্যবসা রয়েছে। পাশাপাশি অপরাধ জগতে তার বিচরণ বেপরোয়া। ঢাকায় রয়েছে তার টর্চার সেল। তার হুকুম কেউ তামিল না করলেই টর্চার সেলে এনে নিপীড়ন করা হয়।

সাঈদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। মমিনুল হক সাঈদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। পারিবারিক ঝামেলার কারণে ২০০২ সালে তিনি ঢাকায় আসেন। এর পর মতিঝিলের দিলকুশা সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের সামনের সড়কে দোকানদারি শুরু করেন। চোরাই তেলের ব্যবসাও করতেন।

থাকতেন বঙ্গভবনের চার নম্বর গেটের কোয়ার্টারে। সেখানে তার মামা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর চাকরি করতেন। পরে মোহামেডান ক্লাবে হাউজি খেলার সময় আলমগীর ও তাপসের ফুটফরমায়েশ খাটতেন। ২০০৭ সালের পর যুবলীগের এক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে তার সখ্য হয়।

তার হাত ধরেই সাঈদ ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হন। পরে যুবলীগ মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক হন। এর পর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতির পদ ছেড়ে দেন। ওয়ার্ডে তার পদে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় হাসান উদ্দিন জামালকে।

ক্যাসিনো সাঈদের সেকেন্ড-ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করতে থাকেন জামাল। জামালের মাধ্যমেই আরামবাগ ক্লাব, দিলকুশা ক্লাব, ভিক্টোরিয়া ক্লাবে ক্যাসিনো-জুয়ার আসর বসাতেন সাঈদ।

এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএ ভবনে টেন্ডারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে জামালের পাশাপাশি কামরুল হাসান রিপন ছিল সাঈদের অংশীদার।

সাঈদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনোবাণিজ্যের পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগও আছে। প্রভাব খাটিয়ে বনে গেছেন বিভিন্ন ক্লাবের নেতা।

ডিএসসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেও তিনি বোর্ডসভায় নিয়মিত যেতেন না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া অসংখ্যবার বিদেশে গেছেন। তাকে অপসারণ করতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে ডিএসসিসি।

১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফকিরাপুলে ইয়াংমেনস ক্লাব, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও বনানীর গোল্ডেন ঢাকা ক্লাবে অভিযান চালায় র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাব সূত্র জানায়, এই চারটি ক্লাবের মধ্যে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবটি চালাতেন যুবলীগের বিতর্কিত নেতা মমিনুল হক। এই ক্লাবে নিয়মিত ক্যাসিনো, জুয়া, মাদকের আসর বসত।

র‌্যাবের অভিযানের পরপরই মমিনুল হক সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। সিঙ্গাপুর-থাইল্যান্ডে মমিনুল হকের ক্যাসিনোর ব্যবসা আছে। মাসে দু–তিনবার তিনি বিদেশে যাওয়া –আসা করেন। ফকিরাপুল ও আরামবাগের অনেকেই তাকে ‘ক্যাসিনো সাঈদ’ নামে চেনেন। সূত্র: যুগান্তর