শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > খালেদার শ্রদ্ধা নিবেদন ঘিরে শহীদ মিনারে হাতাহাতি

খালেদার শ্রদ্ধা নিবেদন ঘিরে শহীদ মিনারে হাতাহাতি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা : একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বায়ান্নর ভাষাশহীদদের প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শ্রদ্ধা নিবেদনকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবিদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে রোভার স্কাউটের সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাক্কায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক মাটিতে পড়ে যান।

অভিযোগ উঠেছে, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে খালেদা জিয়া নিজে নিয়ম ভেঙেছেন। শহীদ বেদিতে খালি পায়ে পা রাখার রেওয়াজ থাকলেও শহীদদের প্রতি এক প্রকার অসম্মান দেখিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনেকেই জুতা নিয়ে সেখানে ওঠেন। জুতা পরে অবাধ বিচরণের পাশাপাশি সেখানে তাদের জুতা হাতে নিয়ে ছোড়াছুড়ি করতেও দেখা গেছে।

বায়ান্নর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একুশে ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ২০ মিনিটে শহীদ মিনারের উদ্দেশে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে রওয়ানা হন খালেদা জিয়া। দলের সিনিয়র নেতারা তার সঙ্গী হন।

খালেদা জিয়ার গাড়িবহর পথে দুই দফায় পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন। প্রথমবার হাই কোর্ট মোড়ে, দ্বিতীয়বার দোয়েল চত্বরে। পুলিশি বাধা পেরিয়ে অবশেষে রাত ১টা ২৫ মিনিটে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ কয়েকজন শিক্ষক এ সময় খালেদা জিয়াকে এগিয়ে আনতে গেলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা তাদের ধাক্কা দিয়ে শহীদ বেদির দিকে এগিয়ে আসেন। এ সময় ঢাবির ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. জিয়াউর রহমান পড়ে যান।

শহীদ মিনারে খালেদা জিয়ার ফুল দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রেখেছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু সেই স্থানে ফুল না দিয়ে খালেদাসহ দলের নেতা-কর্মীরা মূল বেদিতে ওঠার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গের নেতা-কর্মীরা শহীদ বেদিতে উঠতে গেলে সেখানে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবিরা বাধা দেন। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর চড়াও হন। এতে রোভার স্কাউটের সদস্য মো. তানসির রাব্বি (বাঁধন), রিয়াজ ও জুবায়েরসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

জুবায়ের ডান হাতে, বাঁধন ডান পায়ে হাঁটুর নিচে এবং রিয়াজ এক পায়ে আঘাত পেয়েছেন। শহীদ মিনারে র‌্যাবের অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্রে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে মো. তানসির রাব্বি (বাঁধন) বাংলামেইলকে বলেন, বায়ান্নর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিতে উঠছিলেন, ঠিক তখনই উনার দলের কর্মীরা আমাদের ধাক্কা দিয়ে মূল বেদির দিকে দৌড় দেয়। এ সময় আমরা নিচে পড়ে যায় এবং তারা আমাদের উপর দিয়েই চলে যায়।

এদিকে, বিএনপির চেয়ারপারসন ও নেতা-কর্মীদের শহীদ বেদি থেকে নামাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রোভার স্কাউট, বিএনসিসির সদস্যরা যখন গলদঘর্ম, ঠিক তখনই শহীদ মিনারের ডান পাশ দিয়ে বিশৃঙ্খলভাবে হঠাৎ করে দৌড়ে প্রবেশ করতে থাকেন বিএনপির কিছু নেতাকর্মী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবার ব্যারিকেড তৈরি করেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মাইকে তখন ঘোষণা আসে, আপনারা শান্তভাবে ও সম্মানের সহিত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করুন। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা কর্ণপাত করেননি কারো কথায়।

জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বাংলামেইলকে বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে পুলিশকে দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে বাধা দিয়েছে, হামলা চালিয়েছে। এজন্য তিনি নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দৃঢ মনোবল ও অনমনীয় সিদ্ধান্তের কারণে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে দেশনেত্রী শেষ পর্যন্ত বায়ান্নর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তবে তিনি (খালেদা জিয়া) শহীদ মিনারে যাওয়ার পথে দলের নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ চালায় পুলিশ। এতে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অর্ধ-শতাধিক নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বাংলামেইল২৪ডটকম