মঙ্গলবার , ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ , ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ , ৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > খালেদা-তারেকের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল

খালেদা-তারেকের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: দীর্ঘদিন পর মুখোমুখি কথা-বার্তা হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে। বুধবার সকালে লন্ডন পৌঁছেন খালেদা জিয়া। দুই শীর্ষ কাণ্ডারি তথা মা-ছেলের সাক্ষাতের দিকে তাকিয়ে আছেন দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

এটা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই যে, বিএনপিতে সাংগঠনিক সঙ্কট চলছে বহুদিন ধরেই। ওই অবস্থায় দলটি আন্দোলনে যায়। কিন্তু টানা তিন মাসের আন্দোলন সংগ্রাম ব্যর্থতায় রূপ নেয়। জীবন ও অর্থের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বহু নেতাতকর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হন এই আন্দোলনে। সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারায় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তৃণমূল পর্যায় থেকে সমালোচনাও বাড়ছে। দল পুনর্গঠনে এক ধরনের উদ্যোগ আশা করছেন তারা।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন যাওয়ার আগে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে তিনি ইঙ্গিত দেন যে, দল পুনর্গঠনের ব্যাপারে তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের পরামর্শ নেবেন।

সরকারের বিরুদ্ধে দু’দফায় লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে ব্যর্থ হলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। সেই প্রেক্ষাপটে বিএনপির মাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সেই উদ্যোগ অগ্রসর হতে পারেনি। দলটির নেতাদের অনেকে মনে করছেন, তারেক রহমান লন্ডনে থাকলেও দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়াসহ সব বিষয়েই তিনি ভূমিকা রাখেন।

ফলে এখন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান মুখোমুখি আলোচনায় দল পুনর্গঠনের বিষয়েই গুরুত্ব দেবেন বলে তারা মনে করছেন। মাঠ পর্যায়ের নেতাদের অনেকেই এখন প্রকাশ্যে পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের দিয়ে দলে পরিবর্তন আনার কথা বলছেন।

দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের খুলনা থেকে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘তারা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বৈঠকের দিকেই চেয়ে আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির বর্তমান যে সংকট, তা নিরসনে দলের মাঠ পর্যায় থেকে স্থায়ী কমিটি পর্যন্ত নেতৃত্বের পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের নেত্রী বিভিন্ন সময় আলোচনায় তা প্রকাশ করেছেন এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য তার তারেক রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করা প্রয়োজন। এখন লন্ডনে সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে তা সম্ভব হবে।’

উত্তরাঞ্চলীয় জেলা নাটোরের বিএনপি নেতা এবং সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণ বিবেচনায় নিয়ে দল পুনর্গঠন করা উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেত্রী নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেন, আন্দোলনে পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের কি ভূমিকা ছিল। অনেকে নেত্রীকে ভুল পথে পরিচালিত করে আন্দোলনে নামিয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলনে সেই নেতারা আর মাঠে নামেননি। ফলে পরীক্ষিত এবং ত্যাগী নেতাদের আমরা দলের নেতৃত্বে চাই।’

বলা হয়ে থাকে বিএনপিতে খালেদা জিয়ার পরই তারেক রহমানের অবস্থান। তবে দলটিতে তারেক রহমানের সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের একটা বড় অংশের বেশ দূরত্ব ছিল। সেই সিনিয়র নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসতে পারে বলে দলটির নেতা কর্মীরা ধারণা করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক তারেক শামসুর রহমান বলেন, ‘বিএনপিতে সিনিয়র নেতাদের অনেকে তারেক রহমানকে নিয়ে অস্বস্তিতে থাকতেন, এটা সত্য। আর সেটা বয়সের কারণে হোক অথবা তারেক রহমানের ব্যক্তিগত কারণে হোক, এমন পরিস্থিতি দলে ছিল। এখন তারেক রহমান হয়তো তরুণ এবং সিনিয়রদের সমন্বয় করে স্থায়ী কমিটিতে পরিবর্তন আনবেন।’

দলটির নেতারা এটাও বলছেন, খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ফেরার পর সিদ্ধান্ত কী পাওয়া যায় এবং তা বাস্তবায়নে কতটা সময় নেয়, এসবের ওপর নির্ভর করছে বিএনপির আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার বিষয়টি। বাংলামেইল২৪ডটকম