শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > খালেদা-তারেকের মামলা বন্ধই বিএনপির শর্ত

খালেদা-তারেকের মামলা বন্ধই বিএনপির শর্ত

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: দুর্নীতির মামলা থেকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হলে চলমান অবরোধ-হরতালের কর্মসূচি থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে পারে। দলটির পক্ষ থেকে কৌশলে সরকারের কাছে এ ধরণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দুই পক্ষের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তবে এ ধরণের কোনো দাবির কাছে সরকার নতি স্বীকার করবে না বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুনীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার চলছে। এই মামলার এই মধ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

আর খালেদা জিয়ার বড় ছেলে, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসামি। এছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। এসব মামলায় তিনি পলাতক আসামি হয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন।

আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্ট ওই সুত্রগুলো জানায়, বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনা বা নতুন নির্বাচনের দাবিকে সামনে রেখে বিএনপি যে আন্দোলন করছে তার নেপথ্যে রয়েছে মা ও ছেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত এসব মামলা।

খালেদা-তারেকসহ দলের উচ্চ পর্যায় থেকে চাওয়া হচ্ছে- মামলা প্রত্যাহার হলে এই আন্দোলন সংগ্রাম না চালিয়ে সরকারকে স্বাভাবিকভাবেই দেশ পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হবে। আর তা না হলে বর্তমান লাগাতার হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি আরও কঠোর কর্মসূচির পথে যাবে দলটি। ২০-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতকে সঙ্গে নিয়েই চলবে সে আন্দোলন।

সূত্রগুলো জানাচ্ছে, দলের ভেতর এরই মধ্যে আলোচনা উঠেছে, এই সরকারকে অন্তত বর্তমান মেয়াদের মধ্যে হটানো যাবে না। এ অবস্থায় আগামী নির্বাচনই ভরসা। আর সে কারণে মামলাগুলো খারিজ না হয়ে যদি উল্টো সাজা হয়ে যায় খালেদা জিয়া সেই নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না। পাশাপাশি তারেক রহমানেরও একই পরিণতি হবে।

এ কারণেই মামলা থেকে অব্যাহতি চাওয়া হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই। সূত্রগুলো বলছে, এ লক্ষে দেনদরবার শুরু হয়েছে আরও অনেক আগে। তবে সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেয়েই চাপ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এসব কর্মসূচির দিকে ঢুকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চাইছে বিএনপি।

সুত্রগুলো আরও জানায়, বিএনপি ভেবেছিলো আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে উৎখাত করতে পারলে মামলা কোনো সমস্যা থাকবে না, তবে আন্দোলনে সুবিধা করতে না পারলে কোনও দিকেই কিছু হবে না। আর সে কারণেই সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।

তবে দলের ভেতরে একটি অংশ মনে করছে, সমঝোতার পথেই সমাধান জরুরি। কারণ তারা মনে করছেন সহিংসতার দায় বিএনপির উপর চেপে যাওয়ায় দলটি রাজনৈতিকভাবে আরও ক্ষতিগ্রস্তই হচ্ছে।

এদিকে, সন্ত্রাস ও হরতাল-অবরোধে রাষ্ট্রের যে ক্ষতি হচ্ছে তার দায় গিয়ে পড়ছে সরকারের ওপর। আর সে কারণে সরকার চাইছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। কিন্তু সূত্রগুলো নিশ্চিত করেই জানাচ্ছে, মামলার ব্যাপারে নতি স্বীকার করে সরকার কোনও সমঝোতায় যাবে না।

ধারণা করা হচ্ছে- বৃহস্পতিবার বিএনপি’র পক্ষ থেকে যে কঠোরতর আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে সেটা সরকারের ওই অবস্থানের কারণেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা বাংলানিউজকে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, আগাম নির্বাচন এই দাবিতে আর বিএনপি নেই। তারা এখান থেকে সরে গিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলা থেকে অব্যাহতি চায়।

বাংলানিউজের কথা হয় সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গেও। তিনি বলেন, মামলাগুলো আওয়ামী লীগের আমলে করা নয়। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা। আর উনি(খালেদা) অব্যাহতি কিভাবে পাবেন। বিষয়টি এমন নয় যে মামলায় তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগের একটি সুত্র জানায়, মামলার অভিযোগ ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিএনপির সিনিয়র ও অভিজ্ঞ আইনজীবীরা অনেকটাই নিশ্চিত এই মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে। আর এ কারণেই তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য, কৃুষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরণের কিছু আমার জানা নেই। তবে এ সময় তিনি এও বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা আদালতে হাজির হবেন না, এটা কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পন্থা হতে পারে না।
‘অবশ্য খালেদা জিয়া এখন গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নেই। তিনি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদী পন্থা বেছে নিয়েছেন,’ দাবি মতিয়া চৌধুরীর। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম