শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > গাজীপুরে মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক কারখানায় অগ্নিকান্ড

গাজীপুরে মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক কারখানায় অগ্নিকান্ড

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম এলাকায় মাইওয়ান ইলেকট্রনিক্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে কারখানার ছয়তলা ভবনের ৬তলার গুদামে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ ঘন্টা চেষ্টায় বেলা ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকান্ডে ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।

ভবনটির নিরাপত্তাকর্মী শামিম বলেন, শুক্রবার কারখানা বন্ধ ছিল। ভোরে হঠাৎ করে আগুন লাগলে আমরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই। ভবনটির ষষ্ঠ তলায় কারখানার গুদাম। সেখানে তৈরি ফ্রিজ, টেলিভিশন, রাইস কুকারসহ বিভিন্ন পণ্য মজুদ ছিল।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো: আতিকুর রহমান জানান, আগুনের খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আগুনের প্রচন্ডতা অনুমান করে একে একে জয়দেবপুর, শ্রীপুর, কালিয়াকৈর, টঙ্গী, উত্তরা ও ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট একত্রে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক মো: মামুনুর রশীদ জানান, শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে ছয়তলা কারখানা ভবনের ষষ্ঠ তলার গুদামে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়, পরে তা পাশের আরেকটি ছয়তলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। বেলা সোয়া ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কেউ হতাহত হওয়ারও খবর পাওয়া যায়িনি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলকারাখানা অধিদপ্তরের সহকারী মহা পরিদর্শক মো: মোতালিব মিয়া বলেন, এই কারখানায় নিয়মিত অগ্নি নির্বাপন মহড়ার আয়োজন করা হত না। ছয় তলার ওপরে গুদাম রাখারও নিয়ম নেই। কারখানায় ফায়ার অ্যালার্ম ও অগ্নি নির্বাপনের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছিল না বলে ২০-২৫ দিন আগেও আমরা নোটিস দিয়েছিলাম, কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি। এ কারণে কলকারখানা অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

মাইওয়ান ইলেকট্রনিকস ও মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খানকে অগ্নি নির্বাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ওই সময় কারখানায় কাজ বন্ধ ছিল। কীভাবে ছয় তলায় আগুন লাগল তা আমরা এখনও বুঝতে পারছি না।

কোম্পানির হেড অব মিডিয়া কে.এম.জি কিবরিয়া জানান, কারখানায় তৈরি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক হোম অ্যাপ্লান্স প্রডাক্ট ষষ্ঠ তলায় মজুদ করে রাখা ছিল। তবে সেখানে কত টাকার পণ্যসামগ্রী ছিল সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তিনি। প্রায় দুই হাজারের মত কর্মী এ কারখানার বিভিন্ন বিভাগে কাজ করতেন।

এদিকে আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ শফিউল্লাহকে (বর্তমান এডিসি শিক্ষা) তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গাজীপুরের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি শামসুন্নাহার, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম।