বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৭ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > অর্থ-বাণিজ্য > ঘনীভূত হলো বৈদেশিক ব্যাংকিং সঙ্কট

ঘনীভূত হলো বৈদেশিক ব্যাংকিং সঙ্কট

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘনীভূত হলো বৈদেশিক ব্যাংকিং সঙ্কট। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের ঝুঁকির অভিযোগে ১১টি বেসরকারি ব্যাংককে তাদের এক্সচেঞ্জ হাউজ বন্ধ করে দিতে বৃটেনের বার্কলেস ব্যাংক তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফে বেশি কিছু করার নেই। কারণ, গভর্নর ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত পার্লামেন্ট সদস্য রুশনারা আলীর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং ব্যাংকিং এ জটিলতা নিরসনে চিঠিও দেয়া হয়েছে। কিন্তু ফলাফল ভাল হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো চেষ্টা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ মুখপাত্র বলেন, ভুক্তভোগী ব্যাংকগুলোর উচিৎ হবে কিভাবে তাদের ব্যাংক ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যায় সে বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধের মাধ্যমে বৃটেনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জানা গেছে, গত ১০ই জুলাই থেকে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কয়েকটি ব্যাংকের জন্য ১ মাস সময় বাড়ানো হয়েছে। সূত্রগুলো বলছে, কার্যকর পদেেপর অভাবেই বৃটেনে বাংলাদেশী ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলত হলো। তবে এ উদ্যোগ থেকে বার্কলেসকে সরে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেীশ বংশোদ্ভূত পার্লামেন্ট সদস্য রুশনারা আলী। সমপ্রতি যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় একটি নিবন্ধে তিনি বলেছেন, এরই মধ্যে লেবার পার্টির ৪৫ জন এমপি এবং আমি চিঠি দিয়ে বার্কলেসকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছি। আমরা বার্কলেসকে বলেছি, অর্থ প্রেরণকারী কোম্পানিগুলোকে কিছুটা সময় দেয়ার জন্য, যাতে এ সময়ের মধ্যে সরকার ও নজরদারি কর্তৃপগুলো এ ব্যবসাটি টিকিয়ে রাখার জন্য উপায় খুঁজে বের করার সুযোগ পায়। রুশনারা আরও লিখেছেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে ৭০% অর্থ প্রেরণকারী এজেন্ট দারুণ তির শিকার হবে। এর ভয়াবহ প্রভাব পড়বে হাজার হাজার পরিবারের ওপর। সূত্র জানায়, মূলত দেশটির সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের সিদ্ধান্তে অটল। আর তাই এর বাইরে গিয়ে বাংলাদেশী কোন বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকিং না করার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির ব্যাংকগুলো। এ প্রোপটে নতুন করে আর কোন ব্যাংককে বৃটেনে এক্সচেঞ্জ হাউস খুলতে অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র মতে, তবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। কারণ সেটি বৃটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এবং সরকারের যথাযথ অনুমোদন নিয়ে পুরোপুরি ব্যাংকিং চালাচ্ছে। এর বাইরে বেসরকারি এক্সিম ব্যাংক নিজের উদ্যোগে বিকল্প ব্যাংক খুঁজে নিয়েছে। এ ছাড়া আরও চার থেকে পাঁচটি ব্যাংক হয়তো কার্যক্রম চালু রাখতে পারবে। সূত্র জানায়, অর্থ পাচারের ঝুঁকির কথা জানিয়ে বৃটেনের কোন ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর হিসাব রাখতে চাইছে না। এ প্রক্রিয়া থেমে যাওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স পাঠানোর বৈধ পথ বন্ধ হয়ে গেল। ফলে হুন্ডির মাধ্যমে তারা দেশে টাকা পাঠাতে বাধ্য হবে। এতে করে দেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং অর্থ পাচার বাড়বে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বর্তমানে সোনালী ব্যাংকসহ, আইএফআইসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংকসহ ১৭টি ব্যাংকের কার্যক্রম রয়েছে। তবে আলোচনা করে হয়তো বড়জোর ৫ থেকে ৭টি ব্যাংক তাদের কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ পেতে পারে।