শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > চাকরিপ্রত্যাশীরা বিপাকে ॥ একই দিনে রাকাব-প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষা

চাকরিপ্রত্যাশীরা বিপাকে ॥ একই দিনে রাকাব-প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: একই সময়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) এবং প্রি-প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার চাকরি প্রত্যাশী।

আগামী ১৬ অক্টোবর শুক্রবার রাকাবের কোষাধ্যক্ষ ও সুপারভাইজার এবং প্রি-প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে পরীক্ষা নেয়ার তারিখ নির্ধারণ করেছে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান।

রাকাব ও প্রি-প্রাথমিকে চাকরির পরীক্ষায় আবেদনকারীরা বাংলানিউজকে জানান, গত ৩ অক্টোবর মোবাইল বার্তার মাধ্যমে আগামী শুক্রবার ২২ জেলায় প্রি-প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার তথ্য জানানো হয়।

ওই ২২ জেলার মধ্যে উত্তরবঙ্গে পাঁচ জেলা পড়েছে। জেলাগুলো হলো নাটোর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারী।

ঠিক এর দুইদিন পর ৫ অক্টোবর রাকাব বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, আগামী শুক্রবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ ও সুপারভাইজার পদে নিয়োগ পরীক্ষা হবে।

পরীক্ষার্থীরা জানান, রাকাবের ওই দুই পদের জন্য রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার চাকরি প্রত্যাশীরা আবেদন করেছেন। এ ১৬ জেলার মধ্যে প্রি-প্রাথমিকের শিক্ষক পদে আবেদন করা পাঁচ জেলার পরীক্ষার্থীরাও রয়েছেন। ফলে ওই পাঁচ জেলার চাকরি প্রত্যাশীদের যে কোনো একটি পরীক্ষায় অংশগ্র নিতে হবে।

নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার আরিফুল ইসলাম রাকাবের কোষাধ্যক্ষ ও প্রি-প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করেন। একই সময়ে দুই পরীক্ষা সময়সূচির খবর পাওয়ার পর ভেঙ্গে পড়েছেন তিনি।

আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওই দুই পদে পরীক্ষা দেয়ার জন্য অনেক দিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। প্রস্তুতিও বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে এসে, যে কোনো একটি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

তিনি জানান, তার সরকারি চাকরির আবেদন করার বয়স প্রায় শেষের দিকে। সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরির পরীক্ষা না দিতে পারাটা তার জন্য অনেক বড় ক্ষতি। এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুরোধ জানান। তার মতো অনেকেই এই ক্ষতির শিকার হবেন, যোগ করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চাকরি প্রত্যাশীরা অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালি ও উদাসীনতার কারণেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চাকরি পরীক্ষার্থীদের কথা না ভেবে তারা নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে তারা আবেদন করেছেন। তাই পরীক্ষায় যেন সবাই ঠিক ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন সেই বিষয়টি অবশ্যই কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় আনা উচিত।

একই সমস্যায় পড়েছেন রাসেল আহম্মেদ। তিনি বলেন, এমনিতেই চাকরির বাজার খুবই খারাপ। চাকরির পরীক্ষা দেয়ার সুযোগই অনেক কম হয়। এই সময়ে পরীক্ষা দিতে না পারাটা খুবই হতাশার।

চাকরি প্রত্যাশী ও সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, কয়েক হাজার চাকরি প্রত্যাশী এ সমস্যায় পড়েছেন।

একাধিক চাকরি প্রত্যাশী জানান, রাকাব ও প্রাথমিকের তিন পদে আবেদনকারীর সিংহভাগই স্নাতকোত্তর উর্ত্তীর্ণ। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই তাদের প্রস্তুতিও অনেক ভালো। সবার দাবি, এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হোক।

বিষয়টি দুই বিভাগের পক্ষ থেকে আলোচনা করে সমাধান করার অনুরোধ জানান তারা।

এ বিষয়ে রাকাবের কর্মী ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আবদুল লতিফ বাংলানিউজকে বলেন, পরীক্ষার বিষয়টি আগে থেকেই নির্ধারণ করা হয়েছে। সুতরাং এটা পরিবর্তন করা যাবে না। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। এ কারণে জায়গার সমস্যাও আছে। তাই পরীক্ষাটি ওই দিনেই নেয়ার পরিকল্পনা আছে।

একই সময়ে দুই বিভাগের সরকারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার জানা নেই।

রাকাব সূত্র জানায়, কোষাধ্যক্ষ পদে আবেদন করেছেন ১৭ হাজার ৪০৭ জন, আর সুপারভাইজার পদে আবেদন করেছেন ২৬ হাজার ৩৩২ জন। এদিকে প্রাথমিকে ওই পাঁচ জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও প্রায় ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

তবে রাকাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, দুই শিফটে কোষাধ্যক্ষ ও সুপারভাইজর পদে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তাই অনেকেই বিকেলের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।

এ বিষয়ে চাকরি প্রত্যাশিদের পাল্টা যুক্তি, অনেকেরই সকালে দুই পরীক্ষা এক সঙ্গে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া প্রাথমিকের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে প্রতিটি জেলায়। আর রাকাবের পরীক্ষা হবে শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। নীলফামারি, ঠাকুরগাঁ থেকে এসে কীভাবে পরীক্ষা দিবেন- প্রশ্ন রাখেন তারা।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে গত দুইদিন ধরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। দফতরে না পেয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সূত্র জানায়, সকাল দশটা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রি প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে এবং রাকাবে দুই শিফটে সকাল ১০টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত বেজোড় সংখ্যা (রোল) ও বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত জোড় সংখ্যার রোল নম্বর পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম