বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিনের ৬৫তম জন্মদিন বৃহস্পতিবার। সদ্য ফ্রান্স সরকার কতৃক চিত্রকলায় অসামান্য অবদানের জন্য সে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘নাইট ইন দি অর্ডার অব দ্যা আটর্স অ্যান্ড লিটারেচার’-এ ভূষিত হয়েছেন গুণী এই শিল্পী।
১৯৫০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় মেঘনা নদীর পাড়ে আলগী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শাহাবুদ্দিন। তিনি মাতা মরহুমা সাফিউন্নেছা আহম্মেদ এবং পিতা মরহুম মুক্তিযোদ্ধা তায়েরউদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় সন্তান।
শাহাবুদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে মাত্র ২১ বছর বয়সে প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে ঢাকা শহর এবং দেশের অন্যান্য স্থানে সম্মুখ ও গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেন।
মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা এই দুই অনুষঙ্গই তার চিত্রকার্যের প্রধান উপাদান। এর সঙ্গে ইউরোপীয় চিত্রকলার ঐতিহ্যের মিশ্রণ তার চিত্রকর্মকে করে তুলেছে ভিন্নধর্মী। শিল্পের মিথষ্ক্রিয়ার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের গতিশীল-পেশীবহুল সাহস ও শক্তিমাত্রা মিলিয়ে অতিমানবীয় পুরুষের ছবির অনুরণন তার ক্যানভাসে।
এ ছাড়াও দেশে বিদেশে বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহাত্মা গান্ধী, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার চিত্রকর্মে স্থান পেয়েছে।
তিনি দেশে বিদেশে অগণিত একক ও যৌথ চিত্র প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন। দেশে বিদেশে বিভিন্ন সম্মানজনক পুরস্কার অর্জন করেছেন শিল্পী শাহাবুদ্দিন। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানের শ্রেষ্ঠ শিশু চিত্রশিল্পী হিসেবে ‘প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক’, ১৯৩০ সালে শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী হিসেবে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’, ১৯৭৫ সালে ফ্রান্সের ‘সেলোন দো প্রিন্টক্যাম্প স্বর্ণপদক’ এবং ১৯৮১ সালে শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী হিসেবে উপরোক্ত স্বর্ণপদক পুনরায় লাভ করেন তিনি।
১৯৯২ সালে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ৫০ জন মাস্টার পেইন্টারদের একজন হয়ে বার্সেলোনা অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করেন শাহাবুদ্দিন। ২০০০ সালে বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ লাভ করেন। তার চিত্রকর্ম দেশের এবং বিদেশের বিভিন্ন যাদুঘর, গ্যালারি এবং চিত্রপ্রেমী বিভিন্ন মানুষের ব্যক্তিগত সংগ্রহে রক্ষিত রয়েছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম