স্টাফ রিপোর্টার ॥
প্রধানমন্ত্রী জনগণের দুর্ভোগের দিকে না তাকিয়ে নোবেল পুরস্কারের জন্য ছুটছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, চালের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশচুম্বি দামের ফলে মধ্যবিত্ত, নিন্মমধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্তদের জীবন হয়ে উঠেছে মানবেতর। এই অবস্থার মধ্যে কিভাবে নোবেল পুরস্কার হাতিয়ে নেয়া যায় সেজন্য তিনি লবিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, মন্ত্রীদের বাগাড়ম্বর বক্তব্যের পরও চালের মূল্য কমেনি। পাইকারি বাজারে দু এক টাকা কমলে ও খুচরা বাজারে চালের দাম এখনও কমেনি। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামছে না।
বিএনপি এ নেতা বলেন, বর্তমানে মিল গেটে সরু চালের দাম রাখা হচ্ছে মানভেদে প্রতি কেজি ৬০-৬৫ টাকা। পাইকারি পর্যায়ে এটি কেজিতে ৬৫-৬৮ টাকা। আর খুচরা বাজারে এ চালের দাম কেজিতে ৬৫-৭০ টাকার মধ্যে এবং গলির মোড়ের বেশিরভাগ দোকানি কোনো সরু চাল ৭০ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না। মোটা চাল এখনও ৫০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছেনা।
এদিকে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, কাঁচা তরিতরকারীসহ নিত্যপণ্যের দাম এখন আকাশচুম্বি। ৬০ টাকার নীচে কোন তরিতরকারী কেনা যাচ্ছেনা। কাচঁবাজারে সকল পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বাজারে আগুন জ্বলছে। চাল-ডাল-লবন-তেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। এরই মধ্যে কয়েক দফা গ্যাস-বিদ্যূতের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। আবারও বিদ্যূতের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগ বাস্তবায়ন চুড়ান্ত পর্যায়ে আছে।
রিজভী অভিযোগ করেন, শোনা যায়-এজন্য (নোবেল পুরস্কারের ) প্রধানমন্ত্রী নাকি টাকার বিনিময়ে লবিষ্টও নিয়োগ করেছেন। তিনি জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক ফোরামে গিয়েও রোহিঙ্গা সংকটের কোন সুরাহা করতে না পেরে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসছেন। রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন কারনে বাংলাদেশ বর্তমানে গভীর সংকটে নিপতিত থাকলেও আওয়ামী নেতারা এখন প্রধানমন্ত্রীকে পুরস্কার এনে দেয়ার লবিংয়ে ব্যস্ত। যেন রোম যখন জ্বলছে, নীরু তখন বাঁশী বাজাচ্ছে’। বাংলাদেশের মানুষ এখন মহাদুর্যোগে। ভয়াল দু:শাসনের কবলে গোটা জাতি, আর প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারের পেছনে ছুটছেন। প্রধানমন্ত্রী বন্দুকের নল তাক করে রাষ্ট্রের সকল অঙ্গকে নিজের কর্তৃত্বে আনতে এখন মরিয়া।
রিজভী বলেন, মিয়ানমার বাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের চুক্তিতে মিয়ানমার সম্মত হয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে এ ধরণের চুক্তি ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। মিয়ানমারের মন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের সময়ও সেখানে রোঙ্গিাদের ওপর বর্বর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। তাদের নির্যাতনে সেখান থেকে এখনও হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, গতকাল সোমবার বিকালে হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে ১০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছেন। এছাড়া টেকনাফের নাইট্যংপাড়া ও শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্ট দিয়েও রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুই বলেননি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশবাসীকে মন ভোলানো কথা বলেছেন। বৈঠকটি আইওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন একটি সুদীর্ঘ বিলম্বিত পথ। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তাসহ স্বদেশে ফেরত নেয়ার কোন তাগিদ নেই সেখানে। রোহিঙ্গাদের দুর্দশা বিক্রি করে পুরস্কার প্রাপ্তির আশায় উৎসবে ব্যস্ত সরকার। গণবিরোধী নীতির কারণেই ইতিহাসের রঙ্গমঞ্চে আওয়ামী লীগ বরাবরই খলনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল এর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় একটি বানোয়াট ও হীন রাজনৈতিক্ উদ্দেশ্যপ্রনোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দায়ের করে সোহেলকে নানাভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। বিএনপি’র পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান রিজভী জানাচ্ছি।