শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > শীর্ষ খবর > জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর তদারকিতে রোহিঙ্গাদের জন্যে সেফ জোন প্রতিষ্ঠার আহবান

জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর তদারকিতে রোহিঙ্গাদের জন্যে সেফ জোন প্রতিষ্ঠার আহবান

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর তদারকিতে একটি সেফ জোন প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ও অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী অধ্যাপক ড. লা মিন্ট। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গারা নিজদেশে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। তা না হলে এ প্রচেষ্টার কোনো মূল্য নেই।

অধ্যাপক লা মিন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মিয়ামারে রোহিঙ্গাদের জন্যে শান্তি রক্ষা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে একটি সেফ জোন প্রতিষ্ঠার জন্যে জাতিসংঘকে অনুরোধ করার আহবান জানান। সেফ জোন না হলে আমরা বার্মা সরকারের হাতে শেষ হয়ে যাব, এমন মন্তব্য করেন অধ্যাপক লা মিন্ট।

এক সাক্ষাতকারে অধ্যাপক লা মিন্ট বলেন, আমরা তিন মিলিয়ন মানুষ ছিলাম। আমাদের ওপর হত্যাযজ্ঞা চলছে। মিয়ানমারে ফিরে গেলে ফের হত্যাযজ্ঞ শুরু হতে পারে। রোহিঙ্গাদের ওপর ‘হলোকাস্ট’ ঘটনানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের কোনো জাতিগত পরিচয় বা নাগরিকত্ব নেই। স্ট্যাটাস না থাকার ফলে আমাদের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে সমস্যা হচ্ছে, মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এসব বিষয় অনুভব না করলে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা বৃথা।

অধ্যাপক লা মিন্ট বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জায়াগা জমি কিছুই নেই। সব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এগুলো আর ফেরত দিবে না। দ্বিতীয়তঃ আগে যেমন বার্মা সরকার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ব্যবহার করেছে এখনও ঠিক তেমন ব্যবহার করবে। শরণার্থী শিবিরে আটকে রাখবে, কোন অধিকার নাই, পড়াশোনা করতে দিবে না, চাকরি দিবে না। তারা প্রাণের ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তাদেরকে ফেরত দেন, তাহলে ডিসপোস্ট গভর্নমেন্ট ইস নাথিং ইনটু আওয়ার প্রোটেকশন। যদিও তারা যায় ভলেন্টিয়ার হিসেবে যাবে, তারা তাদের মনের খুশি মতো যাবে। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে প্রোটেকশন, ওয়েলফেয়ার উন্নয়ন, কমিউনিটি উন্নয়ন এবং বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। যারা ফিরে যাবে ৯০-এর দশকের আইন অনুযায়ী তাদেরকে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে অনেক বড় আইন হচ্ছে রেসিজম ’ল।

চীন-ভারতের মতো কোন কোন দেশ বলছে, তারা রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে বাড়ি-ঘর বানিয়ে দিবে। যাতে তারা ফিরে সেখানে থাকতে পারে। আপনার কি মনে হয় তাতে অবস্থান পাল্টাবে ?

জবাবে লা মিন্ট বলেন, এগুলো সব রেসক্টিটেট। এগুলো আসলেই কিছুই না। তারা বার্মাকে ক্লাইন্ট হিসেবে ডিল করছে।

বাংলাদেশ সরকার বলছে তারা এ প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআরকে যুক্ত করতে চায়। এটাতে ফারাক হবে বলে আপনি কি বিশ্বাস করেন ?

জবাবে লা মিন্ট বলেন, বার্মা এটাকে গ্রহণ করছে না। তারা বলছে প্রক্রিয়া শেষ করতে দুই বছর সময় লাগবে। মিয়ানমারে ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা নিয়ে গেলে বাংলাদেশে ৬ লাখ ৫০ হাজার অর্থাৎ প্রায় ৭ লাখের মতো এসেছে। আর বাকিগুলো মানুষ কোথায় থাকবে ? এখানে সমাধান হলো জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি ও ঘরবাড়িতে ফিরতে দেওয়া, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারা যাতে মৌলিক অধিকার নিয়ে বাঁচার সুযোগ পায় সে সুযোগ সৃষ্টি করা।

এ মুহূর্তে রিপেট্রেশন নিয়ে এত হইচই হচ্ছে বাংলাদেশ মিয়ানমার এত সংশয়বোধ করছে। আপনার কথায় মনে হচ্ছে, আপনি আশাবাদী নন?

অধ্যাপক লা মিন্ট বলেন, কিভাবে আশাবাদী হব, আমাদের ওপর এধরনের নির্যাতন প্রথম নয়। গত ৪০ বছরে এ নিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, তাদের বাড়ি ঘরে আগুন, লুটপাট পঞ্চমবারের মত হল। জাতিসংঘ এটাকে কিভাবে দেখছে সেট্ওা এক বড় প্রশ্ন?

আমাদের সময়.কম