শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > জামদানি, বেনারসি, টাঙ্গাইল সেই সঙ্গে কাঞ্জিভরম, দাবাং-২

জামদানি, বেনারসি, টাঙ্গাইল সেই সঙ্গে কাঞ্জিভরম, দাবাং-২

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন শাড়ি। শাড়ি বাংলার নারীর ঐতিহ্যের পোশাক। আর এ কারণে এই পোশাকের প্রতি আগ্রহও বেশি। ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর শাড়ির দোকানগুলো সেজেছে বাহারি আইটেম নিয়ে। ডিজাইন ও কারুকাজের তারতম্য ভেদে নেয়া হচ্ছে দাম। রাজধানীর অভিজাত গুলশান এলাকার পিংক সিটিতে প্রধান আকর্ষণ ১ লাখ টাকার তসরের ওপর পাড়ের কারুকাজ করা শাড়ির। এটি কেনার জন্য ক্রেতা সাধারণের আগ্রহও চোখে পড়ার মতো। শুধু তাই নয় সেখানে সবচেয়ে বেশি চাহিদা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সিল্কের শাড়ির। পিংক সিটির গুলশান শাড়িঘরে কাঞ্জিভরম শাড়ির চাহিদা বেশি। এর দাম সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা। লেহেঙ্গার দাম ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। পাশাপাশি রয়েছে ঢাকাই জামদানি যা পাওয়া যাবে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। গুলশান শাড়িঘরের একজন কর্মকর্তা জানান, অন্য শাড়ির পাশাপাশি ঢাকাই জামদানির চাহিদাও প্রচুর। সব পছন্দের প্রথম সারিতে আছে এই জামদানি শাড়ি। সবার কাছেই প্রিয়। এ ছাড়া রয়েছে মিরপুরের বেনারসি শাড়ি। রমজানের শুরুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাজার তেমন না জমলেও। হরতালের পর প্রথম শুক্রবার শপিং মলগুলোতে ছিল ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়। স্টাইল ওয়ার্ল্ডে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে ভারতীয় ডিজাইনারদের তৈরী শাড়ি ও থ্রিপিস পাওয়া যায়। এজন্য ক্রেতাদের আকর্ষণ ও সেই দিকে প্রতিবারই থাকে। সেখানে কথা হয় ক্রেতা আনিকা রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান আমি সবসময়ই ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে শাড়ি কিনে থাকি। আর এখানে তো বাইরের সব ডিজাইনারদের তৈরী শাড়ি থাকে এবং তার মধ্যে থাকে নতুনত্ব। এবার পার দিয়ে কাজ করা শাড়িটি পছন্দ হয়েছে। আরেকজন ক্রেতা শ্যামলী বলেন, প্রতিবারই আমি রমজানের শুরুতেই ঈদের কেনাকাটা সেরে ফেলি কিন্তু এবার হরতালের কারণে করতে পারিনি। তাই আজ এসেছি। এবার আগেই ভেবে নিয়েছি ঈদে শাড়ি নিবো। স্টাইল ওয়ার্ল্ডের এসব ডিজাইনের শাড়ি পাওয়া যাবে ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৮৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। শাড়ির পাশাপাশি তাদের এখানে পাওয়া যাচ্ছে ভারতীয় ডিজাইনারদের তৈরী লেহেঙ্গা যার দাম পড়বে ২০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। রূপম শাড়িঘরে পাওয়া যাচ্ছে তসরের ওপর পাড়ের কাজ করা শাড়ি যার দাম ৪ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। মহারানী কাতান ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৭২ হাজার টাকা পর্যন্ত। সিল্ক শাড়ি ৬ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। চেন্নাই কাতান পাওয়া যাবে ৮ হাজার থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া রয়েছে মিরপুরের বেনারসি শাড়ি, টাঙ্গাইলের তাঁত ও ঢাকাই জামদানি। লেহেঙ্গা পাওয়া যাবে ৬ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকায়। অন্যদিকের পিংক সিটির আর একটি শাড়ির দোকান মেহেজাবিন শাড়ি ঘরে পাওয়া যাচ্ছে তসর, দুপিয়ান, কাতান শাড়ি এগুলোর দাম পড়বে ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই দোকানে সবচেয়ে বেশি চাহিদা দুপিয়ান ও তসর শাড়ির। বিক্রেতা আবু হামিদ জানান, ভারতীয় শাড়ির চাহিদা বেশি এবং বিক্রিও হচ্ছে বেশি। নিউ মার্কেটেও জমে উঠেছে শাড়ির বাজার। বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে সেখানে। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা হচ্ছে নেটের তৈরী শাড়ির। যার ওপরে পাথরের কারুকাজ করা। এসব শাড়ির দাম পড়বে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। শুধু নেটের শাড়িই নয় পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সিল্কের শাড়ি। ইন্ডিয়ান সিল্কের পাশাপাশি চাহিদা রয়েছে রাজশাহী সিল্কের। এসব সিল্কের শাড়ির দাম আড়াই হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এসব শাড়ির পাশাপাশি ক্রেতারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিচ্ছে দেশী শাড়ি। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের তাঁত এবং ঢাকাই জামদানি গ্রহণযোগ্যতা বেশি। জামদানি শাড়ির দাম পড়বে ১৫০০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে তাঁতের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকায়। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, ইস্টার্ন প্লাজায়ও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। বেশির ভাগ ক্রেতার পছন্দের তালিকায় প্রথম পোশাক হলো শাড়ি। ইস্টার্ন প্লাজার দোয়েল শাড়িজে কেনাকাটা করতে আসা রাহিমা বলেন, অনেক দূর থেকে এখানে শাড়ি কিনতে এসেছি। প্রতিবারই এখান থেকে শাড়ি কিনি। কারণ, এখানে সব ব্যান্ডের এবং বাহারি ডিজাইনের শাড়ি পাওয়া যায়। আর বিশেষ করে শাড়িগুলো ডিজাইন থাকে বর্তমান ফ্যাশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য। দোয়েল শাড়িজের বিক্রেতা কামাল আহমেদ বলেন, আমাদের এখানের শাড়ির চাহিদা ব্যাপক। কারণ হলো, আমরা শাড়িগুলো বাইরের ডিজাইনারদের দিয়ে তৈরি করি। এবারে আমাদের উল্লেখযোগ্য শাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে দাবাং-২ শাড়ি, মানবী, রাশী, বড়ে আচ্ছে লাগতা হ্যায়। এসব শাড়ি শিফন, সিল্ক, দুপিয়ান, তসর কাপড়ের ওপর পাড় দিয়ে কারুকাজ করা। এসবের দাম পড়বে আড়াই হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা। যার ডিজাইন করা হয়েছে দু’টি কালারের কাপড় এবং পাড় ব্যবহার করে। মনে রেখ শাড়িজে পাওয়া যাচ্ছে বুটিকের বিভিন্ন ডিজাইন পাশাপাশি ইন্ডিয়ান সিল্কের শাড়ি। এছাড়া জ্যোতি, লামিহা, রাইসা, অঞ্জলী শাড়ি ঘরেও পাওয়া যাচ্ছে ক্রেতাদের চাহিদা ও মানসম্মত শাড়ি। দাম ক্রেতা সাধারণের আয়ত্তের মধ্যে।