শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > শীর্ষ খবর > তনু ও মিতু হত্যার তদন্ত এখনও অন্ধকারে

তনু ও মিতু হত্যার তদন্ত এখনও অন্ধকারে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু ও চাকরিচ্যুত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকান্ডের রহস্য বের হয়নি এখনো। এ দুই খুনের ঘটনায় গত বছর দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। মিতু হত্যকা-ে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার ও দুইজনকে ক্রসফায়ার দিয়েছে। পুলিশ বলছে, পলাতক মুসা সিকদার ও কালু ধরা পড়লে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে মুসার স্ত্রীর দাবি, তার স্বামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদিকে তনুর খুনিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরেই। এতে তার মা-বাবা ক্ষুব্ধ। তারা বিচারের আশা এক রকম ছেড়ে দিয়েছেন। আলোচিত এ দুই খুনের রহস্য তদন্তের মধ্যে বৃত্তবন্দি হয়ে আছে। মিতুর বাবা মোশাররফ হত্যাকা-ের জন্য সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকেই মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে এখন সন্দেহ করছেন।

তনু হত্যাকা- : সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা-ের ১৯ মাসেও কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। উদ্ঘাটিত হয়নি হত্যার রহস্য। কারা, কেন তনুকে হত্যা করল এ প্রশ্নের উত্তর গতকাল পর্যন্ত মেলেনি। তনুর বাবা-মার আশঙ্কা হত্যাকা-ের রহস্য বের হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এখন পর্যন্ত মামলার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। মামলার তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলতে নারাজ তদন্ত সংস্থা সিআইডি।

দুই দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তনুর মৃত্যুর কারণ খুঁজে না পাওয়া, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ম্যাচিং কার্যক্রম শুরু করতে না পারা, প্রথম ও দুই দফায় তদন্ত তদারক কর্মকর্তার বদলি এবং মামলার তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় চরম হতাশা ব্যক্ত করেছেন তনুর বাবা-মাসহ স্বজনরা।

২০১৬ সালের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে জঙ্গল থেকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিসের কর্মচারী ইয়ার হোসেনের মেয়ে সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ২১ মার্চ তনুর বাবা বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মাত্র চার দিন এ মামলার তদন্ত করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। পরে ২৫ মার্চ মামলা স্থানান্তর করা হয় ডিবিতে। তারাও চার দিন মামলার তদন্ত চালায়। ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় মামলাটি স্থানান্তর হয় সিআইডিতে।

সিআইডি ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ মামলার তদন্তসহায়ক দলের প্রধানের দায়িত্ব নেন। তার তদারকিতে চলে মামলার তদন্তকাজ। ২১ মার্চ তনুর লাশের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। এতে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত নয় এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেন প্রথম ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা ডা. শারমিন সুলতানা। ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন তনুর বাবা-মা। পরে গত বছরের ২৮ মার্চ আদালত নির্দেশ দেন তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে। ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।

দুই দফা মরদেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার পরও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করতে পারেনি সিআইডি। তনুুর ডিএনএ নমুনায় ৩ ধর্ষণকারীর শুক্রাণু পাওয়া গেলেও ডিএনএ নমুনা ম্যাচিং কার্যক্রমও শুরু করতে পারেনি সিআইডি। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মহসিন উজ জামান চৌধুরী তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেন। ওই বোর্ডের প্রধান ছিলেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহা, আর দুই সদস্য একই কলেজের গাইনি বিভাগের প্রধান করুণা রাণী কর্মকার ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক মো. ওমর ফারুক।

ময়নাতদন্তের সময় নমুনা হিসেবে তনুর শরীর থেকে বিভিন্ন অংশ নেওয়া হয়। পরে সিআইডির ঢাকার মালিবাগের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে ওই নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে চারটি ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি তনুর, অন্য তিনটি তিন পুরুষের। ডিএনএ প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত স্পষ্ট পাওয়া যায়। এ অবস্থায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরির জন্য ডিএনএ প্রতিবেদন পেতে ছয় দফা সিআইডি ও মেডিক্যাল বোর্ডের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়। ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়া ডা. কামুদা প্রসাদ সাহা দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে প্রতিবেদন দিতে রাজি হননি।

গত বছরের ৫ জুন বিকালে কুমিল্লা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগম ডিএনএর পুরো প্রতিবেদন দ্বিতীয় ময়নাতদন্তারী মেডিক্যাল বোর্ডকে দেওয়ার জন্য আদেশ দেন। আদালতের ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি ডিএনএর সাতটি পরীক্ষার প্রতিবেদনই মেডিক্যাল বোর্ডকে দেয়। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর মেডিক্যাল বোর্ড অনেক নাটকীয়তা শেষে দীর্ঘ কালক্ষেপণ করে প্রতিবেদন সিআইডির কাছে জমা দেয়।
এ প্রতিবেদন পাওয়ার পর সিআইডি তদন্তে মূল ভূমিকায় অবতরণ হবে বলে উল্লেখ করলেও জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি তারা। সিআইডির তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিম বলেন, মামলাটির মোটিভ পেয়েছি। তদন্ত এখন দ্বারপ্রান্তে।

এরই মধ্যে এ মামলার একাধিক তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। গত বছর ১১ জুলাই তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিমকে রাজশাহীতে বদলি করা হয়। তার স্থলে প্রথমে আসেন শাহরিয়ার হোসেন। তারও বদলি হলে এ ক্ষেত্রে যোগ দেন ব্যারিস্টার মোশাররফ হোসেন। তারও বদলি হলে পুনরায় শাহরিয়ার হোসেন আসেন। এরই মধ্যে সিআইডির পরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম অসুস্থতার কথা জানিয়ে এ মামলার তদন্ত থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহমেদ।

সিআইডির তদন্তে তনুর বাবা মা ও পরিবারে সদস্যদেরই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৭ দফায়। তার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়সহ বেশ কয়েকজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনাস্থল বারবার পরিদর্শন করে তদন্ত কমিটি। সেনাবাহিনীর বেশকিছু লোকসহ ৫২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। তনুর শরীরে পাওয়া তিন পুরুষের বীর্যের ডিএনএ প্রোফাইলের সঙ্গে মেলাতে সেনানিবাসের অন্তত ২৫ জন সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি। তাদের কারো সঙ্গেই ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা মেলেনি বলে জানা গেছে।

সিআইডি মামলার কোনো অগ্রগতি করতে পারেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, আমার মেয়ে হত্যার এক বছর অতিবাহিত হলেও খুনিদের কেউ এখন পর্যন্ত শনাক্ত বা গ্রেপ্তার হয়নি। তিনি বলেন, সার্জেন্ট জাহিদুজ্জামানের স্ত্রী আমার মেয়ে তনুকে ওই দিন বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কুমিল্লা সেনানিবাসের ১২ ইঞ্জিনিয়ার্স ব্যাটালিয়নের সার্জেন্ট জাহিদুজ্জামান ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যাকা-ের রহস্য উন্মোচিত হবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, মেয়ের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তনুর বাবা। গত বছর ২৪ আগস্ট তিনি স্ট্রোক করেন। সবার কাছে বিচার চাইছি। আমরা গরিব বলে এমন একটি হত্যাকা-ের বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

তনুর বাবা মো. ইয়ার হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গরিবের জন্য নেই। এক বছরেও বিচারের কিছুই পেলাম না।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন। তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

মিতু হত্যাকা- : চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যামামলার তদন্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত এ পরিদর্শক বলেন, এই হত্যাকা-ের সঙ্গে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের (মিতুর স্বামী) জড়িত থাকার ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অনেক তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা তাদের তথ্যপ্রমাণ আমলে নিচ্ছেন না। তাই মিতু হত্যাকা-ের আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন।

মোশাররফ হোসেন বলেন, মামলার তদন্তে যেসব মূল বিষয় যুক্ত রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। শুরুতে হত্যাকা-ে সরাসরি জড়িত মুসা সিকদার ও কালু পুলিশের নজরে আছে এমন ইঙ্গিত ছিল। এখন তা নিয়ে আর কথা নেই। মূল কথা হচ্ছে পুলিশ সব তথ্যই পেয়েছে। তা না হলে বাবুল চাকরিচ্যুত হলেন কেন? আর চাকরিচ্যুতির মাধ্যমে তো কেউ খুনের মামলা থেকে রেহাই পেতে পারে না।

চার্জশিটে বাবুল আক্তারের নাম না-ও আসতে পারে এমন ধারণা করে মোশাররফ বলেন, আগে পুলিশ চার্জশিট দিক। আমি মামলার বাদী নই। তাই অভিযোগপত্র মনঃপূত না হলে নারাজি দিতে পারব না। কিন্তু নিহতের স্বজন হিসেবে আদালতে আবেদন তো করতে পারব। সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক আদালত। পুলিশ বিভাগে সিনিয়র-জুনিয়র আছে। আদালতে তা নেই। এমনকি সেখানে হাসিনা-খালেদা বলেও কিছু নেই।

মোশাররফ হোসেন বলেন, শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে কেন বাবুল আক্তার চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন, নিশ্চয় আদালত তা জানতে চাইবেন। বাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন দুই নারীর নাম আমরা পুলিশকে বলেছিলাম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদের ডাকেননি, সাক্ষীর তালিকায়ও রাখেননি। এসব তো মামলায় আনতে হবে। তা বাদ দিয়ে চার্জশিট দিলে বুঝে নিতে হবে, তদন্ত ঠিকভাবে হয়নি। গ্যাপ রয়ে গেছে।
পুলিশের সাবেক এ মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা আরও বলেন, অভিযোগপত্রই মামলার সব কিছু নয়। সাক্ষীর কথা থেকেও অনেক কিছু বেরিয়ে আসতে পারে। সেখানে সংবেদনশীল কিছু থাকলে তার দায় কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নিতে হবে।

মিতু হত্যামামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) মো. কামরুজ্জামান বলেন, তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে কিছু বলাটা এ মুহূর্তে ঠিক হবে না। এ বিষয়ে আমার কারো পক্ষে কিংবা বিপক্ষে বক্তব্য নেই। এতটুকু বলতে পারি, আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে চার্জশিট দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু গত বছরের ৫ জুন ভোরে নগরীর জিইসি মোড়ের বাসার সামনে গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন ওয়াসিম, আনোয়ার, শাহজাহান ও এহতেশামুল হক ভোলা। দুইজন ক্রসফায়ারে নিহত হন। তারা হলেন রাশেদ ও নুরন্নবী। মুসা সিকদার আর কালু নামের দুইজন পলাতক দাবি করে পুলিশ কর্মকর্তারা বলে আসছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা গেলেই হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।

মুসার স্ত্রী শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, মিতু খুন হওয়ার ২০ দিনের মাথায়ই মুসাকে নগরীর বন্দরটিলার একটি বাসা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কাজেই মুসা পুলিশ হেফাজতেই আছে অথবা তাকে খুন করা হয়েছে।

মুসা সিকদারের স্ত্রী পান্না আক্তার বলেন, মিতু হত্যার পর আমরা বন্দরটিলা এলাকায় আত্মগোপন করি। সেখান থেকেই পুলিশ মুসাকে গ্রেপ্তার করে।
পান্না দাবি করেন, বিষয়টি স্পষ্ট করা হোক। পুলিশ বলুক, হয় মুসাকে তারা খুন করেছে অথবা তাদের হেফাজতে রেখেছে। স্বামীর ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন পান্না।

মিতু খুন হওয়ার পরদিন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত তিন আসামির বিরুদ্ধে হত্যামামলা দায়ের করেন তৎকালীন পুলিশ সুপার স্বামী বাবুল আক্তার। কিন্তু গত বছরের ২৪ জুন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে বাবুল আক্তারকে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বাবুল আক্তার চাকরি থেকে ইস্তফাও দেন। তখন এ হত্যাকা-ের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে কথা আসতে থাকে। কিন্তু শুরুর দিকে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন মেয়ের জামাতার পক্ষেই অবস্থান নেন। তবে দিন যতই যায়, ভেতরের নানা কাহিনি বেরিয়ে আসতে থাকে। একসময় মোশাররফ হোসেনও দাবি করেন মিতু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বাবুল আক্তার। তিনি এ ঘটনার পেছনে বাবুল আক্তারের পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়ও তুলে ধরেন।

বাবুল আক্তার এসব বিষয়ে বরাবরই চুপ রয়েছেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামে এসে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে জোরালো অভিযোগ আনেন। এর পর বাবুল আক্তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বলেন, সবাই বিচারক, আর আমি তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই খুনি। ২ হাজার ১৮০ শব্দের ওই লেখায় তিনি নানাভাবে শ্বশুরকে দোষ দেন। তবে কোথাও স্ত্রী হত্যার বিচার দাবি করেননি একবারও। গতকালও বাবুল আক্তারকে ফোন করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি।

সূত্র : আমাদের সময়