বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ভারতের নয়াদিল্লিতে চলন্ত বাসে প্যারা-মেডিকেল ছাত্রীকে গণধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। ভারতের একটি আদালত শুক্রবার স্থানীয় বেলা আড়াইটায় এই রায় ঘোষণা করেন।মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি হলো- মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত ও অক্ষয় ঠাকুর।
গতবছর ১৬ ডিসেম্বর ২৩ বছর বয়সী প্যারা-মেডিকেল ছাত্রী তার এক পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখে ফেরার সময়ে দক্ষিণ দিল্লির একটি বাসস্টপ থেকে তাদের ভুল বুঝিয়ে বাসে উঠিয়ে নেন যাত্রী সেজে বসে থাকা অভিযুক্তরা। এরপর পুরুষ বন্ধুটিকে মারধর করে ওই তরুণীকে একে একে ধর্ষণ ও পাশবিক অত্যাচার করে তারা। তারপরে তাকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়।
দেশে বেশ কিছু দিন চিকিৎসার পর সংকটজনক অবস্থায় তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যায় ভারত সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি তাকে। গত ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যায় ওই তরুণী। এ ঘটনায় সারা দেশে তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়। দিল্লিসহ দেশজুড়েই অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
দিল্লিতে চিকিৎসাকালে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেন ওই তরুণী। ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের অবশ্য তার আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ঘটনার রাতে ওই বাসে ছিল মোট ছয়জন অপরাধী। শুনানি শুরু হওয়ার পর মার্চ মাসে তিহার জেলে আত্মহত্যা করে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত রাম সিংহ। সে-ও এই সব ক’টা অপরাধেই জড়িত ছিল বলে জানান বিচারকরা। ষষ্ঠ অভিযুক্তের বয়স ১৮ না পেরোনোয় তার বিচার হয়েছে কিশোর অপরাধীদের বিশেষ আদালতে। গত ৩১ আগস্ট সংশোধনাগারে তিন বছর কাটানোর শাস্তি হয়েছে তার। যদিও ঘটনার দিন সবচেয়ে নৃশংস আচরণ করেছিল ওই কিশোরই।
বিশেষ আদালতের বিচারকরা জানিয়েছেন, ধর্ষিতার বয়ান থেকে শুরু করে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট, আঙুলের ছাপ থেকে মোবাইল ফোনের অবস্থান সব সাক্ষ্যপ্রমাণই বলছে ধর্ষণের সময় সেখানে ছিল, মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত ও অক্ষয় ঠাকুর। গণধর্ষণ ও খুনের পাশাপাশি মুকেশ-বিনয়-অক্ষয় ও পবনকে অপহরণ-ডাকাতি-চক্রান্ত-প্রমাণ নষ্টের চেষ্টার মতো মোট ১৩টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।