স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা: দেশে গণতন্ত্রের খোলস আছে, কিন্তু প্রাণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের বৈকালিক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
‘গণতন্ত্র, সুশাসন ও তারুণ্য’ শীর্ষক ওই অধিবেশনে মূল বক্তা হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে আকবর আলি খান বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের খোলস আছে, প্রাণ নেই। আমরা যেসব সংসদ সদস্যকে নির্বাচিত করে পাঠাই, সেখানে তাঁদের যা বলে দেওয়া হয়, সেই মতো কাজ করে।’
গণতন্ত্রের বিকল্প যা আছে, তা গণতন্ত্রের চেয়েও খারাপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সামরিক শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতি ছিল। দুর্নীতি এখনো আছে। এখন দুটো কথা বলতে পারি। কিন্তু সামরিক শাসনের আমলে তা বলা যেত না।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থাকার কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যদি সামরিক শাসনামলের সঙ্গে তুলনা করি, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের শাসকেরা যা-ই হোক না কেন, মানুষের সৃজনশীলতার জন্যই এটুকু সম্ভব হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হালুয়া-রুটির রাজনীতিতে দুর্নীতির বিচার নাই। দুই লাখ দুর্নীতির ঘটনা ঘটলে দুইটার বিচার হয়।’
আকবর আলি তিনটি বিশেষ শ্রেণীকে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান অনুঘটক হিসেবে চিহ্নিত করেন। এই তিনটি শ্রেণী হলো বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিক, কৃষক ও নারী।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওই উপদেষ্টার মতে, প্রবাসী শ্রমিকেরা তাঁদের অর্জিত অর্থ বাংলাদেশে পাঠিয়ে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতি করেছেন। তাঁর মতে, এ দেশের কৃষকদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন বলা হলেও তাঁরাই ১৯৭০-এর দশকের চেয়ে বর্তমানে তিন গুণ বেশি খাদ্য উত্পাদন করেন।
অধিবেশনের সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্র ও সুশাসন নিয়ে হতাশার কারণ থাকলেও আশার দিক হচ্ছে বিরাট তরুণ সমাজ। তারা আছে বলেই দেশ টিকে আছে।’
অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাসহ ৪৫টি অঞ্চলের ৪০০ জনের বেশি তরুণ প্রতিনিধি।