শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > খেলা > নতুন চ্যালেঞ্জে রুবেল হোসেন

নতুন চ্যালেঞ্জে রুবেল হোসেন

শেয়ার করুন

স্পোর্টস ডেস্ক ॥
ব্যক্তিগত বিতর্কিত বিষয়ে জেলে গিয়েছিলেন রুবেল হোসেন। কিন্তু জাতীয় দলের এই পেসারকে নিয়েই শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে ২০১৫ বিশ্বকাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ দল। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেবার  টাইগারদের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার নায়ক ছিলেন রুবেল। কিন্তু সেখান থেকে ফিরেই জাতীয় দলে ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়েন। গেল বছর নিউজিল্যান্ড সফরে পেসার মোহাম্মদ শহীদ ইনজুরিতে পড়লে ভাগ্যক্রমে দলে জায়গা হয় তার। কিন্তু শুধু টি-টোয়েন্টি সিরিজেই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে তাকে খুব একটা অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলের হয়ে নিয়মিত খেলার সুযোগ পান তিনি। তবে এই সুযোগ এখন তাকে দাঁড় করিয়েছে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে। প্রথম চ্যালেঞ্জ পারফরম্যান্সের উন্নতি করা। দ্বিতীয়, দলে ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। তবে তার এই চ্যালেঞ্জের পথে বাধা হয়েছে নতুন এক ইনজুরি। এজন্য তাকে ঈদের আগেই যেতে হচ্ছে ছুরির নিচে। গতকাল টেলিফোনে জানতে চাইলে রুবেল হোসেন বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সফর দারুণ কেটেছে। এখানে আমার বড় অর্জন দলে নিয়মিত খেলতে পারা। যেমন পারফরম্যান্স চেয়েছিলাম তেমনটা হয়নি। এখন লক্ষ্য একটাই- নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতি করা ও দলে জায়গা ধরে রাখা। কিছুটা ইনজুরির শিকার হয়েছি। আশা করি ১০ই জুলাই ক্যাম্পের আগেই মাঠে ফিরতে পারবো।’
রুবেল হোসেনের ইনজুরি অবশ্য খেলার মাঠে হয়নি। তিনি মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন, ‘আসলে আমি ইংল্যান্ডে দরজার সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিলাম। এতে আমার বাঁ চোখ আর কানের মাঝের হাড়টা সরে গেছে। শুরুতে তেমন গুরুতর মনে করিনি। দেশে ফিরে যখন দেখলাম ফুলে গেছে তখন বিসিবি চিকিৎসকের পরামর্শে  স্ক্যান করিয়ে জানলাম হাড় সরে গেছে। অপারেশন করতে হবে। আশা করি ঈদের আগেই অপারেশনটা করে ফেলবো।’
দুটি ম্যাচে দল ৩শ’র বেশি রান করে হেরেছে। এমনকি ভারতের বিপক্ষে ২৬৪ রানের পুঁজি পেয়েও বোলাররা কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। তাই সেমিফাইনালে শেষ হয় টাইগারদের স্বপ্ন। ব্যাটিং ভালো হলেও টাইগারদের বোলিংয়ে আলোর অভাব ছিল দারুণভাবে। তবে মাশরাফির সঙ্গে অভিজ্ঞ পেসার হিসেবে রুবেল অন্যদের তুলনায় কিছুটা হলেও সফল ছিলেন। ত্রিদেশীয় সিরিজে ৩টি ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নেন ২টি উইকেট। ৫০ দিনের লম্বা সফরে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলেও কেন বোলাররা সফল হতে পারেননি? এ প্রশ্নের জবাবে রুবেল হোসেন বলেন, ‘প্রথমেই বলছি আয়ারল্যান্ডে উইকেটে ঘাস ছিল। উইকেট থেকে বোলাররা সহায়তা পেয়েছে। সেখানে আমরা খারাপ করিনি। কিন্তু ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বেশিরভাগ উইকেটই ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য আদর্শ। সেখানে উইকেট পেতে হলে বেশ ভালো জায়গায় বল করতে হয়। বোলারদের জন্য উইকেট পাওয়া বেশ কঠিন এই উইকেটে। আমি আমার কথাই বলি। আমি চেষ্টা করেছি। কিন্তু হয়নি। এখানে আরো মনোযোগ দিয়ে বল করার দরকার ছিল, যেটি আমি নিজেই পারিনি। তবে এখান থেকে যে ভুলগুলো করেছি তা শুধরে ভালো করতে চাই।’
রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিনরা না পারলেও হাসান আলী, জশ হ্যাজলউড, জুনাইদ খানরা ঠিক পেরেছেন বল হাতে আলো ছড়াতে। তাহলে কি টাইগারদের বোলিং শক্তিতেই সমস্যা ছিল! এ বিষয়ে রুবেল বলেন, ‘ঠিক তা বলবো না, আমরা যে একেবারে খারাপ বল করেছি তাও না। যেটি সত্যি সেটা হলো আরো ভালো বল করার দরকার ছিল। আমি অন্যদের কথা বলবো না। আমার কাছে মনে হয়েছে আমি যেভাবে বল করেছি তাতে আমার শতভাগ দেয়া হয়নি। যে কারণে উইকেট তেমন একটা পাইনি। আগামী মাসের ১০ তারিখ থেকে ক্যাম্প শুরু হচ্ছে। সেখানে এই ভুলগুলো নিয়ে কাজ করবো। কারণ, এখন যদি দলে আমাকে টিকে থাকতে হয় তাহলে নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতি করাই একমাত্র পথ।’
অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ সফরে আসছে আগস্টে। সফরে অজিরা খেলবে দুটি টেস্ট। তবে টেস্টে রুবেল হোসেনের সম্ভাবনা এখনো ক্ষীণ। মোস্তাফিজ ফিট থাকলে তার সঙ্গে দেখা যেতে পারে তাসকিনকে। আর ইনজুরি কাটিয়ে ফিট থাকলে দলে ফিরতে পারেন পেসার শহীদও। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবে টাইগাররা। দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ সামনে রেখে রুবেল হোসেনের লক্ষ্য দলে সুযোগ পেলেই তার সেরাটা দেয়া। তিনি বলেন, ‘আমার সব সময় একটাই লক্ষ্য, দলে যখনই সুযোগ পাবো যেন নিজের সেরাটা দিতে পারি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলবো আমরা। সেখানে লম্বা সময় বল করতে হবে। তাই চেষ্টা করছি নিজেকে ফিট রাখতে। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।’

মানবজমিন