শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > নিরাপত্তা রক্ষায় বিমানবন্দরগুলোতে কাজ করছে সরকার

নিরাপত্তা রক্ষায় বিমানবন্দরগুলোতে কাজ করছে সরকার

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো দিয়ে দেশে যাতে কোনো প্রকার বিস্ফোরক দ্রব্য ও বিপদজনক ডিভাইস প্রবেশ করতে না পারে এজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আধুনিক সরঞ্জামাদি যুক্ত করতে যাচ্ছে সরকার।

পাশাপাশি বিমানবন্দরের যাত্রী, ব্যাগেজ, কার্গো স্ক্রিনিং ও চেকিংয়ের সক্ষমতাও বৃদ্ধি করা হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পযর্টন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সূত্র জানায়, নাশকতা-সন্ত্রাস রোধে আধুনিক সরঞ্জামাদি সংযুক্ত করা হলে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো। সেই লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে ৯০ কোটি ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে কেনা হবে আন্তর্জাতিক মানের এসব যন্ত্রপাতি।

সূত্র আরো জানায়, বিমান বন্দরে আবশ্যিক ঝুঁকি বিবেচনায় স্ক্রিনিং, চেকিংয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ যাত্রী ও কার্গো ফ্যাসিলিটেশনের উন্নয়ন করা হবে। স্ক্রিনিং চেক পয়েন্টে যাত্রী, ব্যাগেজ ও কার্গো স্ক্রিনিং-চেকিং কাযর্ক্রম দ্রুত করা হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পযর্টন মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়ভার দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ওপর।

বেবিচক-এর ডেপুটি পরিচালক (পরিকল্পনা) এ কে এম মঞ্জুর আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, যে কোনো নাশকতা ও অনৈতিক কার্যকলাপ ঠেকাতেই আমাদের এ নতুন উদ্যোগ। বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই আমাদের এ জরুরি উদ্যোগ। বিমানবন্দরগুলোতে বিশ্বব্যাপী এখন নিরাপত্তার বিষয়টি প্রধান হিসেবে দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিয়মিত ভাবে যুক্তরাজ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করে থাকে।

মঞ্জুর আহমেদ বলেন, বিমানবন্দর সমূহে নাশকতা-সন্ত্রাস রোধে নেওয়া মহাপরিকল্পনা চলতি বছরেই বাস্তবায়ন সম্পূর্ণ করা হবে। যেমন প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই সেট এক্সপ্লেসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস) কেনা হবে। ছিট-কম্পিউটেড টমোগ্রাফি ব্যবস্থাও থাকবে।

নিরাপত্তার স্বার্থে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে আট সেট ডুয়েল ভিউ এক্সরে স্ক্যানিং মেশিন কেনা হবে। ১৪ সেট ডুয়েল ভিউ এক্সরে স্ক্যানিং মেশিন ফর কেবিন উইথ ট্রে রিট্রান সিস্টেম কিনতে ব্যয় করা হবে ১১ কোটি টাকা। প্রায় ৮ কোটি ব্যয়ে কেনা হবে ৯ সেট আন্ডার ভেহিক্যাল স্ক্যানিং মেশিন ও ১৪ সেট এক্সপ্লেসিভ ট্রেস ডিডেক্টর(ইডিটি)।

চার কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয় সেট লিকুইড এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশ সিস্টেম ও একটি ডাবল ক্যাব পিকআপ কেনা হবে ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় করে। ইটিভি কনসুমাবেলস ফর এক্সপ্লোসি ট্রান্স ডিডেক্টর মেশিনসহ নতুন জনবল নিয়োগ করা হবে নিরাপত্তা ও ট্যাক্সসহ গুরুত্ত্বপূর্ণ পদে।

তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে সরঞ্জামগুলো কিনে তিনটি বিমান বন্দরে স্থাপন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ(বেবিচক)। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে জরুরি সরঞ্জামাদি সরবরাহ ও সংস্থাপন করা হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পযর্টন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পর্যটন ও জাতীয় রফতানি বাণিজ্য বিশেষ করে তৈরি পোশাক ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের অবদান অতি গুরুত্বপূর্ণ। বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক ইউরোপ ও আমেরিকায় রফতানি হয়। তাই আমদানিকারক দেশগুলোর চাহিদা বিবেচনা করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ সকল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের মাধ্যমে পরিচালিত সকল পণ্যবাহী বিমানের তল্লাশি ব্যবস্থা আরো আধুনিকায়ন করা হবে।

তাছাড়া, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিয়মিত ভাবে যুক্তরাজ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করে থাকে। যুক্তরাজ্য পরিবহন বিভাগ গত ৩১ অক্টোবর ২০১৫ সালে সিনাইয়ের বিস্ফোরক আক্রমণের প্রেক্ষিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ কয়েকটি বিমানবন্দরের জন্য কিছু ‘বিমানবন্দর-নিরাপত্তা’ নীতিমালা পরিবর্তন করেছে। এর অংশ হিসেবে তাদের বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি বাংলাদেশের হযরত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসমূহের নিরাপত্তা সুবিধাদি পরিদর্শন করে। যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি দল বন্দরের তল্লাশি ব্যবস্থা উন্নয়নের জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন।

এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ‘জিরোটলারেন্স’ প্রদর্শন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি প্রাধনমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশের বিমানবন্দর সমূহের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে অনুষ্ঠিত জরুরি এক সভায় বিমানবন্দর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও শক্তিশালী করা হচ্ছে।

নিরাপত্তা জোরদার করতে তিনটি বিমান বন্দরে অতিরিক্ত জনবলও নিয়োগ দেওয়া হবে। আপাতত হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আড়াইশ অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। এয়ারফোর্স, পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে এসব সদস্য নেওয়া হবে। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে পরবর্তীতে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।

এই প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (বিমান ও সিএ উইং) আবুল হাসনাত মো. জিয়াউল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘তিনটি বিমান বন্দরের নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হবে। এছাড়া অতিরিক্ত জনবলও নিয়োগ দেওয়া হবে। আপাতত হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ২৫০ অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই একশ জন অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ হয়েছে।’ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম