শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > জাতীয় > নিহত ব্যক্তিদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাঞ্জলি

নিহত ব্যক্তিদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাঞ্জলি

শেয়ার করুন

কামাল আহমেদ ॥
ঠিক এক বছর আগে পয়লা জুলাই, রাত নয়টার দিকে প্রথম খবর আসে গুলশানে বিদেশিদের প্রিয় হোলি আর্টিজান বেকারিতে সশস্ত্র হামলা হয়েছে। কিছুদিন আগে থেকেই দেশের নানা জায়গায় সহিংস উগ্রপন্থী বা জঙ্গিদের একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটতে থাকায় সবার মধ্যে উদ্বেগ ও শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের পুলিশ, র‌্যাব কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে এরপর আর কিছুই জানানো হচ্ছিল না। বরং দেশীয় সূত্রগুলোর আগেই মধ্যরাত নাগাদ বিদেশ থেকে বেকারির ভেতরের ছবিসহ অনেককে জিম্মি করার খবর প্রচার করে বিশ্বের সবচেয়ে নিন্দিত জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সংবাদ সংস্থা আমাক।

বেকারির ভেতরে যাঁরা আটকা পড়েছিলেন, তাঁদের পরিজন-নিকটাত্মীয়দের কাছেও ফেসবুক-টুইটারের কল্যাণে সেই সব খবর পৌঁছে যায়। তাঁরা রাতভর প্রায় পাগলের মতো ছোটাছুটি করেছেন, জানতে চেয়েছেন কী হচ্ছে ভেতরে। শনিবার সকালে টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যায়, হোলি আর্টিজানের ভেতরে আটকে পড়া এক মেয়ের বাবা-মা পুলিশের মহাপরিদর্শকের গাড়ির গতি রোধ করে তাঁদের মেয়ের খবর জানতে চেয়েছিলেন। পরে আমরা জেনেছি, তাঁরা তাঁদের মেয়ে তারিশি জৈনের কথা জানতে চেয়েছিলেন এবং তারিশিকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। রাতভর জিম্মি নাটক ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চলার পর সেনা কমান্ডোরা সেখানে অভিযান চালান সকাল আটটার কিছু আগে। সেখানে রাতভর কী ঘটেছিল, আমরা তার নানা খণ্ডচিত্র বিভিন্ন সূত্র থেকে পেতে থাকি । কিন্তু সেই বিভীষিকার পূর্ণাঙ্গ চিত্রটি আমরা এখনো জানি না। ৩ জুলাই রোববার জাপানের তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সেইজি কিহারা ঢাকায় ছুটে এসে জানতে চেয়েছিলেন জাপানি নাগরিকদের কখন হত্যা করা হয়েছে। নিহত বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলেন ইতালীয়রা। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রীও টেলিফোন করে কখন, কীভাবে, কী ঘটেছিল তা জানতে চেয়েছিলেন। বিদেশি এসব নাগরিকের পরিবার এবং সরকারগুলো এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রত্যাশা করে।

অত্যন্ত সম্ভাবনাময় তরুণ ফারাজ আইয়াজ হোসেন, অবিন্তা কবির, ইশরাত আখন্দ কিংবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান তারিশি জৈনের বাবা-মায়েরা কি এখনো তাঁদের সব প্রশ্নের জবাব পেয়েছেন? প্রিয়জনের অন্তিম মুহূর্তগুলোর কথা সবাই জানতে চান। কেন এমন হলো? রাতেই অভিযান চালানো হলো না কেন? তা হলে কি আরও কয়েকজনের জীবন রক্ষা হতো? রাষ্ট্রের নিরাপত্তাব্যবস্থা কেন এসব মৃত্যু ঠেকাতে পারল না? কী হলে আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ থাকবে? এই প্রশ্নগুলোর জবাব দেওয়ার দায়িত্ব তো আমাদের রাজনীতিকদেরই।

শনিবার দুপুরের দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ সম্পর্কে একটি বিবৃতি পাঠ করা হয় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তরের এক সংবাদ সম্মেলনে। প্রথমে জানানো হয়, নিহতের সংখ্যা ২০ এবং তাঁরা সবাই বিদেশি। কিন্তু সন্ধ্যায় আরেকটি ব্যাখ্যায় জানানো হয় যে নিহতদের মধ্যে তিনজন আসলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তাঁরা জীবিত অবস্থায় সাতজনকে উদ্ধারের কথা জানিয়ে বলেন, মাত্র কুড়ি মিনিটেই সেনা কমান্ডোদের অভিযান শেষ হয়েছে। সন্দেহভাজন এক হামলাকারীকে জীবিত অবস্থায় আটকের কথাও তখন জানানো হয়। কিন্তু পরে জানা যায় যে তাঁরও মৃত্যু হয়েছে এবং হামলায় তাঁর যুক্ততার প্রমাণ মেলেনি। দেশের সবচেয়ে রোমহর্ষক ও প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে এটিই ছিল একমাত্র বিবৃতি। তারপর থেকে আজ অবধি এ বিষয়ে কোনো প্রেসনোট কিংবা সরকারি ভাষ্য প্রকাশ করা হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীও সেদিন (২ জুলাই) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে হামলার জন্য দেশি-বিদেশি একটি চক্রকে এই হামলার জন্য দায়ী করে বলা হয়, এরা দেশের অগ্রযাত্রা বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক পথে মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়ে তারা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। সহিংস উগ্রপন্থী বা জঙ্গিরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এবং গণতান্ত্রিক পন্থায় মানুষের মন জয় করার বিষয়টি যে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ধারণা করা যায়, ওই বক্তব্যের অংশবিশেষের লক্ষ্য ছিল সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ।

হোলি আর্টিজানে হামলার পর সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলো জঙ্গিবাদের হুমকিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তা দমনে তৎপর হয়েছে। গত এক বছরে তাতে বেশ সফলতাও এসেছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের উদ্দীপনায় উজ্জীবিত হয়ে নবরূপে সংগঠিত নব্য জেএমবির (জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ) প্রথম সারির সংগঠক ও নেতাদের অনেকেই পুলিশ ও র‌্যাবের অভিযানে নিহত হয়েছেন (বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা সত্তরের মতো)। গ্রেপ্তারের সংখ্যাও কম নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের একাধিক কর্তাব্যক্তির দাবি, এই জঙ্গিদের ক্ষমতা অনেকটাই নিঃশেষ হয়ে গেছে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা ততটা উচ্ছ্বসিত নন। বরং তাঁদের মতে, নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রমে একটি সমন্বিত ও সুপরিকল্পিত নীতিকৌশলের অভাব সুস্পষ্ট। সে কারণেই এসব জঙ্গি তৎপরতার বিস্তৃতি ও সামর্থ্য সম্পর্কে অসংলগ্ন এবং ক্ষেত্রবিশেষে পরস্পরবিরোধী তথ্য প্রকাশ পায়। একদিকে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা গ্রেপ্তার হন, অন্যদিক দিয়ে তাঁরা জেল থেকে বেরিয়ে যান। বিচারে দীর্ঘসূত্রতা, তদন্তে গাফিলতি অথবা রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার সুযোগ পায় সন্দেহভাজনেরা। বিভ্রান্তির শিকার তরুণদের জঙ্গি মতাদর্শ থেকে ফিরিয়ে আনার কর্মসূচি বা কার্যক্রম প্রায় না থাকার মতোই। আর যাঁরা সংশোধন হতে চান, রাষ্ট্র তাঁদের পুনর্বাসন ও নিরাপত্তারও যে দায় নেবে, সে রকম আস্থা অর্জনের মতো কোনো পরিকল্পনার কথাও শোনা যায় না।

হোলি আর্টিজানে হামলার ঠিক এক দিন পর ক্ষমতাসীন জোট ১৪ দল একটি রাজনৈতিক উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছিলেন, ঠিক সেই সুরই প্রতিধ্বনিত হয়েছে জোটের কার্যক্রমে। বিপরীতে, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় জাতীয় মতৈক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল, সেটিও সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে। সরকার যেমন ওই আহ্বান গায়ে মাখেনি, তেমনি সরকারের বাইরের অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও বিএনপি এক টেবিলে আলোচনায় আনতে পারেনি। ফলে দেশে জঙ্গি মতাদর্শের বিরুদ্ধে একটি জাতীয় রাজনৈতিক মতৈক্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ কাজে না লাগাতে পারার ব্যর্থতার দায় রাজনৈতিক দলগুলো এড়াতে পারে কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।

হোলি আর্টিজানে জঙ্গিদের হামলাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন নজির সৃষ্টি করেছে। একসঙ্গে এতজন বিদেশি নাগরিককে হত্যার মতো ঘটনা এ দেশে এর আগে আর কখনোই ঘটেনি। হামলাকারীদের প্রচারিত বক্তব্য অনুযায়ী, তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধু অমুসলিমদের হত্যা করা। এ রকম বিবৃতিও এই প্রথম। হামলার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে হোলি আর্টিজান বেকারি বেছে নেওয়ার মূল কারণ, সেখানে বিদেশিরাই বেশি যেতেন। এসব বিদেশির মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশে বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা। আরও ছিলেন বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা। বোঝাই যায়, খুব হিসাব–নিকাশ করেই হামলার লক্ষ্য বাছাই করা হয়েছিল, যাতে অর্থনীতিতে প্রভাবটা গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী হয়। জিম্মি হত্যার জন্য কুখ্যাত জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের তরফেও ঢাকার ঘটনাটিই ছিল প্রথম তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কোনো শহর, যেখানে তারা জিম্মি করে নৃশংসতার দৃষ্টান্ত স্থাপনের দায়িত্ব দাবি করেছে।

বিশ্বজুড়েই সন্ত্রাসবাদ এখন ছোবল মারছে এবং সন্ত্রাসীদের হামলায় ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ কিংবা ধর্মে-বর্ণে কোনো ভেদাভেদ নেই। নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারে হামলার শিকার যেমন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন বাংলাদেশিও। লন্ডনের টিউব হামলায়ও তা-ই। কিন্তু ঢাকার হামলায় বিদেশিদের প্রাণহানির পর পাশ্চাত্যের প্রতিক্রিয়ায় তাই অনেকেই কিছুটা বিস্মিত হন। ঢাকার রাস্তায় সাঁজোয়া যানের প্রহরা নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের চলাচলের দৃশ্যে সেই প্রতিক্রিয়ার প্রতিফলন ঘটে। ওই সব দেশের কূটনীতিকদের পরিবারের জন্য ঢাকা এখনো নিষিদ্ধ। এ ধরনের প্রতিক্রিয়ায় আমরা ব্যথিত হলেও তা মেনে নিই। নিবন্ধের শুরুতে যেসব প্রশ্নের কথা বলেছিলাম, সেগুলোর জবাব না মিললে ভিন্ন কিছু আশা করা অর্থহীন। অপরাধ সব দেশেই হয়। কিন্তু অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করা এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে একই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধের প্রস্তুতি রাষ্ট্র ও তার বিচারব্যবস্থা, অর্থাৎ আইনের শাসনের জন্য অপরিহার্য। আইনের শাসন বা সুশাসনের প্রশ্নে আমরা কি সেই আস্থা অর্জন করতে পেরেছি?

হোলি আর্টিজানে এই নজিরবিহীন হামলার পর একটি তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি উঠেছিল। আশা ছিল এ ধরনের তদন্ত ওই হামলার পটভূমি, সেই রাতের বিশদ বিবরণ, জঙ্গিবাদীদের সংগঠিত হওয়ার অজানা কাহিনিগুলো উদ্ঘাটন করবে; অপরাধীরা চিহ্নিত হবে। নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর প্রস্তুতি ও সামর্থ্যে কোনো ঘাটতি ছিল কি না, তা নির্ধারণ করবে। ভবিষ্যতের জন্য করণীয় সুপারিশ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর সে দেশে গঠিত হয়েছিল দ্বিদলীয় নাইন-ইলেভেন কমিশন। হামলার প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২০০৪ সালের ২২ জুলাই ওই কমিশন যে প্রতিবেদন দিয়েছিল, তার সুপারিশ মেনে সে দেশে সিআইএ ও এফবিআইয়ের পারস্পরিক রেষারেষি বা ঠেলাঠেলি বন্ধে নতুন একটি দপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি নামের এই দপ্তর এখন ২২টি গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয় করে এবং এর প্রধান মন্ত্রীর মর্যাদার অধিকারী। ব্রিটেনে ২০০৫ সালের ৭ জুলাই টিউব ও বাসে যে সন্ত্রাসী হামলা হয়, সেই কথিত সেভেন সেভেন হামলার বিষয়েও একই ধরনের তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়, যার রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালের মে মাসে। ওই তদন্ত রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই ব্রিটেন সন্দেহভাজন উগ্রপন্থীদের চলাফেরার স্বাধীনতার ওপর আদালতের অনুমোদনক্রমে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু করেছে। জঙ্গি মতাদর্শ থেকে ফেরানোর (ডির‌্যাডিকালাইজেশন) কর্মসূচি নিয়েছে। ভারতে ২০০৬ সালে যে মুম্বাই হামলার ঘটনা ঘটেছিল, সেই হামলার তদন্তেও মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার এ রকম একটি কমিটি করেছিল, যা রামপ্রধান কমিটি নামে পরিচিত, যারা তিন বছর ধরে তদন্তের পর ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে রিপোর্ট দিয়েছে।

বাংলাদেশেও এ ধরনের কমিশন একেবারে নতুন নয়। বিডিআর বিদ্রোহের বিষয়ে আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন কমিশন যে তদন্ত প্রতিবেদন সরকারের কাছে দিয়েছিল, তা সরকারিভাবে প্রকাশ করা না হলেও গণমাধ্যমে তার অনেক তথ্যই বেরিয়েছে। সুপারিশগুলোর কথাও আমরা জানি। অবশ্য, ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলার বিষয়ে যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রহসন হয়েছিল, তেমন কিছু হলে তাতে হতাশাই বাড়ে। তবে সত্য উদ্ঘাটনের একটা আন্তরিক উদ্যোগ যে প্রয়োজন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর জিজ্ঞাসার জবাব দেওয়ার জন্য তা প্রয়োজন। দেশের ভেতরে আমাদের শিক্ষা গ্রহণের জন্য তা আরও জরুরি। আর বিশ্ব সম্প্রদায়ের আস্থা অর্জনেও এর গুরুত্ব কম নয়। অথচ সেই পথে আমরা হাঁটছি না। উপরন্তু, নিহতদের জন্য সরকারিভাবে কোনো স্মারক অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে আমরা কী বার্তা পাঠালাম?

কামাল আহমেদ: সাংবাদিক। প্রথম আলো