শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > জাতীয় > পাটের বিষয়ে সমন্বিত প্রকল্প নেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী

পাটের বিষয়ে সমন্বিত প্রকল্প নেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
বীজ উৎপাদন থেকে শুরু করে পাট বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে একটি সমন্বিত প্রকল্প নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উচ্চফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন বিষয়ে সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আজকে যৌথভাবে মিটিং করলাম। বেসরকারি সংস্থাসহ আরও যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তাদেরকেসহ একটি সমন্বিত কর্মসূচি নেব। পাট বীজ উৎপাদন এবং উৎপাদন করলেই হবে তা চাষির কাছে বিতরণ, কৃষকের উৎপাদিত পাট দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রির নিশ্চয়তা দেয়াসহ ভ্যালু চেইনের প্রত্যেকটি জায়গা আমাদের অ্যাড্রেস করতে হবে। না হলে আমরা সফল হবো না।’

তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম ফাইবার তন্তু পরিবেশের ক্ষতি করছে, তাই পাটের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দুই মন্ত্রণালয়কে পাটের জোগান দিতে হবে। আপনারা (পাট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা) জানিয়েছেন আমরা তিন বছরের মধ্যে (পাটের বীজ উৎপাদনে) স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি অর্থেরও কোনো সমস্যা হবে না। বীজ করতে এত বেশি টাকার দরকার হয় না।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, দুই মন্ত্রণালয় ও আরও যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন সবাইকে নিয়ে আমরা সমন্বিত একটি প্রকল্প করব। পাট বীজের ক্ষেত্রে আমরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল হব না। পাটকে আমরা বাংলাদেশের চাষিদের জন্য একটা লাভজনক ফসলে উন্নীত করব। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে পাট আবার অসাধারণ ভূমিকা রাখবে।’

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘পাট দিবসের প্রোগ্রামে প্রধানমন্ত্রী আমার পাশে ছিলেন, হঠাৎ করে বললেন, বিজেআরআইতে (বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট) গেছিলা? আমি বলি- না। তিনি বললেন, কীসের মন্ত্রী হইছো তুমি, এখনও বিজেআরআই যাও নাই। আমাকে নেগলেট করলেন। আমরা বিজেআরআই যাব ঠিক করলাম, এর মধ্যেই করোনা এসে গেল। করোনার কারণে আমরা যেতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘পাটের বীজ রবি-১ সম্পর্কে জানতে পারলাম, চাষের ক্ষেত্রে সময় কমিয়ে আনার ব্যাপারটা আপনাদের (কৃষি মন্ত্রণালয়) হাতে আছে। ভর্তুকি প্রকল্পের মাধ্যমে দেয়া গেলে ভাল, না হলে ভর্তুতির জন্য আলাদা যদি যেতে হয়, সেই বিষয়ে সুপারিশ করছি। ভর্তুকি দিয়ে হলেও আমরা পাট বীজের উৎপাদনটা যেন করতে পারি। পাটপণ্যে ভারত আমাদের ওপর এন্টি ডাম্পি ডিউটি বসিয়েছে, এজন্য আমরা ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার পাটপণ্য ভারতে রফতানি করতে পারিনি। সেটাকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা অন্যান্য দেশে গিয়ে ৪০ শতাংশ গ্রোথ করেছি।’

পাট বীজের ক্ষেত্রে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজেরদের পায়ে দাঁড়াতে হবে জানিয়ে পাটমন্ত্রী বলেন, ‘এছাড়া আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, তাতে অনেকের চক্ষুশূল হতে পারি। পাটটা আমাদের নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে না হলে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দেবে। কৃষকরা যদি পাট উৎপাদন করতে না পারে আমাদের শিল্প বসে পড়বে। একটার সঙ্গে একটা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। কৃষককে লাভবান করতে হবে।’

এ বছর পাটের দাম বেশি হওয়ায় শিল্প কারখানাগুলো কিনতে পারছিল না জানিয়ে গোলাম দস্তগীর বলেন, ‘ব্যবসায়ী প্রস্তাব দিয়েছিল রফতানির ওপর ডিউটি বসিয়ে দেন। আমরা ডিউটি বসানোর চিন্তা-ভাবনা করছিলাম, এটার প্রধানমন্ত্রীর নলেজে যায়, তিনি বলেছেন খবরদার তুমি এই ধারায় যাবে না। কৃষকরা যদি এবার লাভবান হয় আগামী বছর কৃষকরা বেশি উৎপাদন করবে, লাভবান না হলে ফসল করবে না।’

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পাটের সোনালী দিন ফিরে পাব। পাট হবে সবচেয়ে বড় রফতনি পণ্য।’

বৈঠকে কৃষি সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, সাবেক কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানসহ দুই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অধীন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।