শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > পোড়ামন, আশিকী-২, জলপরী সোনাক্ষীতে মাত শিশুরা

পোড়ামন, আশিকী-২, জলপরী সোনাক্ষীতে মাত শিশুরা

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদের বাজারে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। বিপণিবিতানগুলোতে এখন নারী এবং শিশুদেরই ভিড় বেশি। পছন্দের জামা-জুতো কিনতে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতার ভারে সরগরম থাকছে বিপণিবিতানগুলো। ঘুরে ঘুরে কে কত সুন্দর পোশাক কিনতে পারে তারই যেন প্রতিযোগিতা। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, ইস্টার্ন প্লাজা, রাজউক ট্রেড সেন্টাসহ বিভিন্ন শপিং মল ও বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে, ছোট্ট সোনামনিদের ঈদের কেনাকাটায় ধুম লেগেছে। মা-বাবা কিংবা বড় ভাইবোনের হাত ধরে ছোট ছেলেমেয়েরা আসছে ঈদের খুশিতে। এবারের ঈদে ছোট বাচ্চাদের পোশাকেও এসেছে বৈচিত্র্য। নামের বাহারেও বাংলা, হিন্দি সিরিয়াল ও সিনেমার প্রভাব। পোড়ামন, আশিকী-২, দাবাং-২, জলপরী, ঝিলিক, কারিনা, সোনাী, পাগলু-২, হাবুডুবু, ফুলকলি, সানা, ভিড়া, মুন্নীসহ অনেক নাম। অভিজাত বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের বিভিন্ন দোকানে ছোটদের পোশাকের শো’রুম ঘুরে দেখা গেছে পোশাকে বরাবরের মতো এবারও বৈচিত্র্যের সমাহার। তবে এবার ভারতীয় পোশাকের চাহিদা বেশি বলে জানালেন লেবেল-১, ব্লক-এ’র ‘বারিশ ফ্যাশনের সেলসম্যান মো. টুটুল রহমান। তিনি জানালেন, ভারতীয় কাপড়ের পাশাপাশি ভারতীয় সিরিয়াল ও সিনেমার ব্রান্ডের পোশাক বেশি পছন্দ ছোট ছেলেমেয়েদের। এখানকার একাধিক বিক্রেতা জানিয়েছেন, ছোট মেয়েদের পোড়ামন, ফুলকলি, ঝিলিক, ভিড়া  ব্রান্ডের ফ্রক ও লেহেঙ্গা পাওয়া যাচ্ছে নির্ধারিত দামে। দাম পড়বে ৭৫০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া সিসে গার্ল, নম্রতা, ইয়েলো ব্যারি, ডিয়োনি ও সুনিতা ব্রান্ডের ফ্রক ও লেহেঙ্গাও বিক্রি হচ্ছে সমানতালে। আছে কোকিলা, রাশি, গোপির নামে লেহেঙ্গা। এর মধ্যে পার্টি ফ্রকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। একেকটি সর্বনিম্ন ১ হাজার ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা করে। বাদ যাচ্ছে না ১০০ পার্সেন্ট লাভ, হাবুডুবু, টাপুরটুপুর, ডিনকাচিকা, আনতাসা, কারিনা নামের ফ্রক ও লেহেঙ্গা। বিদেশী ব্রান্ডের ছেলেদের পোশাকের জন্য অভিভাবকরা বেছে নিচ্ছেন টফি, কিডস, ব্রাকেসহ জেমস বন্ড, সুপারম্যান, ব্যাটম্যান, বেনটেন, ডোরিমন নামের শার্ট ও প্যান্ট। সঙ্গে যোগ হয়েছে পাগলু-২, শাহরুখ, দাবাং-২। ধানমন্ডি থেকে রাইমা ও রিয়াদের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে আসা রোজিনা ইসলাম জানালেন, ঈদে বাচ্চাদের আনন্দ সবার আগে। তাই তাদের খুশির জন্য বৈচিত্র্য খুঁজতে হয়। চাহিদা মেটাতে নতুন ধাচের পোশাক কিনতে হয়। এবারের ঈদেও সেটাই করেছি। বসুন্ধরার শপিং কমপ্লেক্সের লেবেল-১, ব্লক-১-এর স্পাইডারম্যান শো’রুমে নতুন আসা ছোট মেয়েদের ইন্ডিয়ান থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে ২৮ হাজার টাকায়। ছোট ছেলেদের শেরোয়ানি বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার টাকা করে। স্পাইডারম্যান শো’রুমের স্বত্বাধিকারী মো. কামরুল হাসান শাহীন জানালেন, এই কালেকশানগুলো একেবারেই নতুন। দাম একটু বেশি হলেও কাপড় ভাল। ক্রেতারাও আকৃষ্ট হচ্ছেন । বিভিন্ন বিপণিবিতান ও শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, ছোটদের জন্য পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকও কিনছেন কেউ কেউ। এর মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে টপস, লং শার্ট, শর্ট শার্ট, টাইট জিন্সসহ বিভিন্ন রঙের ও দামের গেঞ্জি সেট জানালেন, খিলতে রাজউক ট্রেড সেন্টারের দ্বিতীয় তলার ‘বেবী হ্যাভেনের স্বত্বাধিকারী মো. মনিরুল ইসলাম। এখানে  ভারতের শাড়ি লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকায়। বিভিন্ন নকশার কারুকাজ করা লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে র্সর্বনিম্ন ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকায় বলে জানালেন তিনি। একই শপিং মলের ‘জিপসী ফ্যাশনে ছোট ছেলেদের জিন্স, গ্যাবাডিন প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। ছোট ছেলেদের ম্যাগি শার্ট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। গরমে ছোট ছেলেমেয়েদের সুতির পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। মেয়েদের সুতির ত্রি-পিস সর্বনিম্ন ৫৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করছেন বলে জানালেন জিপসি’র সেলসম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম। রাজধানীর ব্যস্ততম নিউ মার্কেটে এবারেও ছোটদের পোশাকের ব্যাপক সমাহার। ক্রেতারও কমতি নেই। দামেও অভিজাত শপিং মলের চাইতে অনেক কম। নিউ মার্কেটের বেশ কজন ব্যবসায়ী জানালেন, ছোট বাচ্চাদের উজ্জ্বল রঙ বরাবরই পছন্দ। এবারের ঈদ কালেকশানে বর্ষা ও গরমের দিকটা বিবেচনা অনুযায়ী পোশাক বিক্রি করছি আমরা। সেই সঙ্গে দেশীয় ঐতিহ্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছে এসব পোশাকে। নিউ মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে কারুকাজ করা সুতির থ্রি-পিস ও ফ্রক পাওয়া যাচ্ছে সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৮৫০ টাকা পর্যন্ত। পোশাকের শো-রুমগুলোতে ছোট ছেলেদের চেক, স্ট্রাইপ, লুডেড, ডেনিস প্যান্ট, জিন্স প্যান্ট মেয়েদের এমব্রয়ডারির কাজ, লেইস, ফুল ছাপার ফ্রক থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন নিউ ফ্যাশনের মো. মিজান। এছাড়া শিফন, সিল্ক, হাতে কাজ করা পোশাক তো আছেই। ছোট বাচ্চাদের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনতে হচ্ছে নানা রঙের জুতা। সেখানেও বৈচিত্র্য ও নামের সমাহার। এলিফ্যান্ট রোডের নিউ মেরি কিং সুজ তাদের শো’রুম সাজিয়েছে ছোট্ট সোনামণিদের জন্য। নবজাত থেকে শুরু করে সব বয়সী শিশুদের জন্য রয়েছে তাদের আয়োজন জানালেন ব্যবস্থাপক শিপলু। নামও বাহারি। বেবি কুইয়ান, বেবি টঙ্গীয়ার, টারবিকিউব, ইউরিক, জিনলিডা, জিম, সিনড্রেলা, ডোরেমন, টম অ্যান্ড জেরি। এলিফ্যান্ট রোডে বাহারি রঙ ও ডিজাইনের জুতা বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১৮৫০ টাকায়।