শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > ফের আসছেন প্রধানমন্ত্রী, তাই আতঙ্ক…

ফের আসছেন প্রধানমন্ত্রী, তাই আতঙ্ক…

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ তে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এক বছর ২ মাস পর (৯ এপ্রিল) ফের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে আসছেন। আগের বার পরিদর্শনে এসে ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেসবের প্রায় ৯০ ভাগই বাস্তবায়ন হয় নি।

এ-কারণে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) চেয়ারম্যানসহ অনেকই আতঙ্কে আছেন। কেননা এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আগের নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নের প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।

দু’একদিনের মধ্যেই সার্বিক অগ্রগতি রিপোর্ট পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। আর এজন্য অনেকের ঘুম হারাম।

এতদিন যারা স্বার্থের কারণে বিধি-বিধানের মারপ্যাঁচে আটকে রেখেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বাস্তবায়ন।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, তারাই নাকি এখন পদ নিয়ে বেশি চিন্তিত।তারা তাই পদ রক্ষায় তদবির শুরু করে দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতনদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন আসলে তাদের করার কিছুই ছিল না।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এ-ও জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছেন বিপিডিবির বড় কর্তারা। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলোর বাস্তবায়নে তাদের সময়োচিত উদ্যোগ ও ভূমিকাই বেশি প্রয়োজন ছিল। কয়েকটি বিষয়ে খোদ বিপিডিবি’র প্রতিবন্ধকতার কারণেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বাস্তবায়ন সম্ভব হয় নি।

বিদ্যুৎ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার মধ্যে ১১ তম দফাটিতে ছিল রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বিপিডিবির আওতাভুক্ত বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ও গ্রাহকদের নিয়ে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গঠন করা। কিন্তু একবছর পেরিয়ে গেলেও তার কোনোই অগ্রগতি নেই।

২০০৫ সালে গঠিত রাষ্ট্রীয় এই কোম্পানিটি এখন কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির আওতাবর্হিভূত রংপুর বিভাগের ৫৮ উপজেলায় ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৮০ জন গ্রাহক রয়েছেন। আর রাজশাহী বিভাগের ৭২ উপজেলায় আছেন ৬ লাখ ১৬ হাজার ১৫০ জন গ্রাহক। এই গ্রাহকদের নিয়েই নতুন এই কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার কথা।

নতুন এই কোম্পানি গঠনের প্রধান লক্ষ্য ছিল, সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপিডিবির দুর্নীতি-লুটপাটের পথ বন্ধ করা। এখন এসব এলাকায় সিস্টেম লস দেখানো হচ্ছে প্রায় ১৭ শতাংশের মতো। এর বেশিরভাগের পেছনে আছে অবৈধ সংযোগ।

কোম্পানি গঠন করার পর অফিস নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির বোর্ড গঠন এবং এমডি নিয়োগ দেওয়া হয় ২০০৫ সালেই। সেই এমডি বসে বসেই অবসরে গেছেন ২০১১ সালে। এরপর কার্যক্রম শুরু না হওয়ার কারণে নতুন কাউকে আর এমডি নিয়োগ দেওয়া হয় নি।

নওজোপাডিকোর পরিচালক (অর্থ) মশফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন শুধু দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার জন্য চিঠি দিবে বিপিডিবি। কিন্তু সেই চিঠিটিই দিচ্ছে না তারা।

অন্যদিকে একই সঙ্গে গঠিত সাউথ জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গঠনের বিষয়েও অগ্রগতি শূন্য। এছাড়া সেন্ট্রাল জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গঠনের নির্দেশ থাকলেও এদিকটায়ও কোনোই অগ্রগতি নেই।

দফায় দফায় মিটিং হলেও বিপিডিবি ছাড় দিতে চাচ্ছে না। তারা নানাভাবে টালবাহনা করে যাচ্ছে। কখনও সিবিএ’র বিরোধিতা, কখনও অন্য বাহনা দিয়ে কালক্ষেপণ করে যাচ্ছেন তারা।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলানিউজকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর অনেকগুলো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি এ কথা সত্য। বিপিডিবি যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি, তা আমরা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিব।

তবে বিপিডিবির পক্ষ থেকে আগামী ৩১ মে’ পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

বিপিডিবিকে পেট্রোবাংলার মতো করপোরেশনে রূপান্তর করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সে বিষয়েও অগ্রগতি শূন্যের কোঠায়।

বিদ্যুৎ আইন-২০১৪ প্রণয়নের কথা থাকলেও তাতেও খুব বেশি অগ্রগতি নেই। খসড়াতেই আটকে আছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সংসদের আগামী বাজেট-অধিবেশনে আইনটি উঠতে পারে।

নেপালে যৌথ বিনিয়োগে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আমদানি করার বিষয়টি এখনও আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ। অষ্টম দফায় ছিল সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেরামত করার জন্য আলাদা ‘অপরেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স কোম্পানি’ গঠনের বিষয়।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় এই কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। কিন্তু তা-ও সেই অনুমোদন পর্যন্তই। বাস্তবে তা বাস্তবায়নের কোনো আলামত নেই। তবে ত্রিপুরা থেকে ১’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে কাজের অগ্রগতি হয়েছে। লাইন নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম