শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ সব ভাস্কর্য রক্ষায় রিটের শুনানি কার্যতালিকা

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ সব ভাস্কর্য রক্ষায় রিটের শুনানি কার্যতালিকা

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যসহ দেশের সব ভাস্কর্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন শুনানির জন্য আজকের কার্যতালিকায় রয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে ভার্চুয়ালি এ রিটের ওপর শুনানির কথা রয়েছে।

সোমবার দেশের সব ভাস্কর্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য করা রিট আবেদনের ওপর শুনানি করতে গেলে আজকের জন্য দিন ঠিক করেন সংশ্লিষ্ট আদালত।

আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের উপস্থিতিতে ভার্চুয়ালে আজ এই রিটের শুনানি হবে।’

গত রোববার (৬ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট উত্তম লাহিড়ী এ রিটটি করেন। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ দেশের সব ভাস্কর্য রক্ষায় রিট আবেদন করা হয়। রিটে দেশের সব জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিটে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনে নৈরাজ্য/বিশৃঙ্খলা/অনাচার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম/পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমামকে (খতিব) রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের নৈরাজ্য ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ভাস্কর্য নিয়ে জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতের আঁধারে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় স্থানীয় মাদরাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- শহরের জুগিয়া পশ্চিমপাড়া ইবনে মাস্উদ (রা.) মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০) এবং শিক্ষক আল-আমিন (২৭) ও ইউসুফ আলী (২৬)। গ্রেফতার দুই মাদরাসাছাত্র পুলিশকে জানিয়েছেন, ইসলামি বক্তা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক ও ফয়জুল করিমের বয়ান শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন।

তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাত ২টা ৫ মিনিটের সময় যখন মাদরাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়েন, তখন তারা দুজনে গোপনে মাদরাসা থেকে বের হয়ে হেঁটে শাহীন কাউন্সিলরের বাসার সামনে দিয়ে কানাবিল মোড় পার হন। এরপর কমলাপুর হয়ে মজমপুর রেললাইন ধরে ফজলুল উলুম মাদরাসার পাশ দিয়ে পাঁচ রাস্তার মোড়ে ভাস্কর্যের কাছে আসেন। তারপর ভাস্কর্য নির্মাণকাজে ব্যবহৃত বাঁশের মই দিয়ে উপরে উঠে নাহিদুল ইসলামের ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে আবু বকর মিঠুন ও সবুজ ইসলাম দুজন মিলে রাত ২টা ৫ মিনিট থেকে রাত ২টা ১৩ মিনিট পর্যন্তু নির্মাণাধীন ভাস্কর্যটির বিভিন্ন জায়গায় হাতুড়ি দিয়ে জোরে আঘাত করেন। ভাস্কর্যটির ক্ষতিসাধন করে পুনরায় হেঁটে মাদরাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে মাদরাসার শিক্ষক আল-আমিন ও ইউসুফ আলীকে তারা ভাস্কর্য ভাঙচুরের বিষয়টি জানালে দুজনই তাদের মাদরাসা থেকে দ্রুত পালিয়ে যেতে বলেন। পরে আসামিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ওই দুই শিক্ষককে মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও চরমোনাই পীর সৈয়দ ফয়জুল করীমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সোমবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে এ মামলাটি করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।