শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এটলাস

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এটলাস

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এটলাস বাংলাদেশ বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় প্রায় ৩০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ১১ হাজার শেয়ার হোল্ডার চিন্তিত। এটলাস হোন্ডা কারখানার শ্রমিকরা জানান, ১৯৬৬ সাল থেকে তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার ডিআইটি টঙ্গী শিল্প এলাকায় ২৬৫-২৬৭ প্লটের ৯ একর ৬৪ শতক জমির ওপর এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করা হয় এবং ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ১৯৮৭ সালে পাবলিক লিমিটেডে রূপান্তর করা হয়।

এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাপানের হোন্ডা ব্রান্ডের মোটরসাইকেল সংযোজন, উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছিল। দীর্ঘ ৪৬ বছর হোন্ডার সংযোজন, উৎপাদন ও বাজারজাত করে এলেও জাপান হোন্ডা ব্রান্ডের মোটরসাইকেলটি বন্ধ করে দেয় ২০১১ সালে। হোন্ডা ব্রান্ডের সঙ্গে ভারতের হিরো কোম্পানির ব্যবসা থাকায় হোন্ডা বন্ধ করে দেয়ার পর হিরো হোন্ডা ব্রান্ডের মোটরসাইকেলটি সংযোজন, উৎপাদন ও বাজারজাত করা শুরু করে। ১৯৯৩ সাল থেকে জাপানের হোন্ডা কোম্পানির পাশাপাশি হিরো হোন্ডা পুরোদমে সংযোজন, উৎপাদন ও বাজারজাত করতে শুরু করে এটলাস। একপর্যায়ে হিরো হোন্ডার চাহিদা বেড়ে গেলে হঠাৎ করে হিরো কোম্পানি এটলাসের সঙ্গে ব্যবসা না করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এতে এটলাস কর্তৃপক্ষ তাদের ৩০০ শ্রমিক, কর্মকর্তা/কর্মচারী ও ১০,৮৫৮ জন শেয়ার হোল্ডার নিয়ে বিপাকে পড়ে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের অধীনস্ত এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। হিরো হোন্ডা কোম্পানিটি বেশি বিক্রয় ও মুনাফার আশায় নিটল নিলয় গ্রুপের সঙ্গে মোটরসাইকেল উৎপাদনে চলতি মাসেই চুক্তি করে ভারতের হিরো কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। আরও জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী নিটল নিলয়ের শেয়ার থাকবে ৫৫ শতাংশ আর বাকি ৪৫ শতাংশের মালিকানা পাবে হিরো। হিরো কোম্পানি মোটরসাইকেল উৎপাদনে নিটলের সঙ্গে চুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়ায় এটলাসের সঙ্গে পুরনো চুক্তি নিয়ে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে। এ কারণে দীর্ঘ ৪৭ বছরের পুরনো সরকারের আওতাধীন লাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে।

এ নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে সংযোজন শাখার শ্রমিক মো. নজরুল ইসলাম জানান, আমরা ভবিষ্যতের আশায় এ কারখানায় কাজ করছি। পরিবারের ৪-৫ জনের সদস্য নিয়ে কোন রকমে দিন কাটাচ্ছি। এর মধ্যে যদি কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায় আমাদের পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার মো. মামুনুর রশিদ বলেন, কোম্পানির প্রাথমিক শেয়ার ১০ টাকা হলে তারা প্রতি শেয়ার ৫০০-৬০০ টাকা করে আয় করেন। দেশের পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে শেয়ার বাজারে নাজুক অবস্থা।

এ অবস্থায় ৫০০-৬০০ টাকার শেয়ার ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এর মধ্যে যদি এটলাস বন্ধ হয়ে যায় আমার মতো হাজার হাজার শেয়ার হোল্ডারের কি হবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। উল্লেখ্য, গত ৩০ বছর ধরে ভারতের হিরো কোম্পানি শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে।