এম. আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর গণ জাগরণ হবে। ৭০’এর নির্বাচনে যেমন ভোটের বিপ্লব হয়েছিল এবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোটের বিপ্লবে ধানের শীষের বিজয় হবে। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শক্তিশালী কেন্দ্র কমিটি গঠন করে ভোটের আগের দিন রাত থেকে কেন্দ্র পাহাড়া দিতে হবে। ভোটের আগের রাতে যেন সিল মেরে ব্যালটবাক্স ভরে রাখতে না পারে সে ব্যাপারে কড়া পাহারা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আগামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গিয়ে বিরোধী দলে গেলে আমরা তাদের কোন ক্ষতি করবো না। তাদের নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করবো। বাংলাদেশের জনগণের প্রতিটি ভোট খালেদা জিয়ার মুক্তিকে তরান্বিত করবে।
আ স ম আব্দুর রব আরো বলেন, ১৯ মার্চ রাত থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হিন্দু মুসলমান মা বোনদের উপর যে কমান্ডো বাহিনী অত্যাচার করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়েছে, সেই বাহিনীর কমান্ডারের হাতে শেখ হাসিনা নৌকা তুলে দিয়েছে।
তিনি শনিবার বিকালে টঙ্গীতে ধানের শীষের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন সরকারের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে জনসভায় আরো বক্তৃতা করেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহরাব উদ্দিন প্রমুখ।
আসম রব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সব কিছুর শেষ আছে, মরাকে মেরে লাভ নেই। আসম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, নজরুল ইসলাম খান, ডা. জাফর উল্লাহ, হাসান উদ্দিন সরকার আমরা যারা এখানে বসে আছি সবাই মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাইনা। আমরা কয়েকবার মারা গিয়েছি। আপনিতো মুক্তিযুদ্ধ দেখেন নাই। আমরা সাবধান করে দিচ্ছি আমাদের জীবনের শেষ অংশে ধানের শীষ নিয়ে ৩০ তারিখে জয়লাভ করার জন্য, গণ বিপ্লব, গণ জাগরণ করার জন্য, এ লড়াই ভোটের লড়াই, এ লড়াই গণতন্ত্রের লড়াই, এ লড়াইয়ে জিততে হবে। এ লড়াই বাঁচা মরার লড়াই।
জনসভায় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এবার আমরা যুদ্ধে নেমেছি। এ যুদ্ধে তাদের কাছে অস্ত্র আছে আমাদের কাছে নেই। মানুষ আমাদের পক্ষে আছে, ওদের পক্ষে নেই। এখন ভোটের লড়াই শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দিলে তারা লেভেল হয়ে যাবে। এ ভয়ে তারা নির্বাচনে লেভেল ফিল্ড দিচ্ছে না। যতই অত্যাচার নির্যাতন করুক আমরা এখন জবাব দিব না। ৩০ তারিখের নির্বাচনে এমন জবাব দিব যে তারা মুখ দিয়ে আওয়াজ করতে পারবে না। তিনি বলেন, যতই অত্যাচার নির্যাতন করুন না কেন আপনারা ঘাবড়াবেন না। এবার লড়াই হবে ভোটের ও ব্যালটের।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন, দুঃশাসনের অবসান, ব্যাংক লুট, দুর্নীতি ও অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্বাচন। মানুষের অধিকার রক্ষার নির্বাচন। ক্ষমতাসীনরা হারতে চায়না তারা ক্ষমতা ছাড়তে ভয় পায়। যারা অত্যাচারী হয় আল্লাহ তাদের পছন্দ করে না। তারা পরাজিত হবে। তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থে নেত্রীর মুক্তির স্বার্থে মাটি কামড় দিয়ে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মাঠে থাকতে হবে।
ডা. জাফর উল্লাহ জনসভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের জয় হয়ে গেছে, ২ জানুয়ারী ন্যায় বিচারের মধ্যেমে খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহরাব উদ্দিন জানান, এই জনসভাটি দুপুরে টঙ্গী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। প্রশাসন মাঠটি ব্যবহারের অনুমতিও প্রদান করে কিন্তু সকাল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই মাঠটি অন্যায় ভাবে দখল করে রাখে। পরে প্রার্থী সালাহ উদ্দিন সরকারের বাস ভবন প্রাঙ্গনে জনসভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
টঙ্গীর জনসভা শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বে ময়মনসিংহহের উদ্দেশ্যে সড়ক পথে যাত্রা করেন। বিকালে তারা শ্রীপুরের মাওনায় গাজীপুর-৩ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীর পথ সভায় যোগ দেন।