শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > জাতীয় > বাংলাদেশ ব্যাংকের ছোট্ট আগুনে বের হচ্ছে বড় নিরাপত্তাহীনতা

বাংলাদেশ ব্যাংকের ছোট্ট আগুনে বের হচ্ছে বড় নিরাপত্তাহীনতা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৪ তলাতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বড় ধরনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। এ সব বিষয় চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২৩ মার্চের রাতের আগুন কর্মদিবসে বা মধ্যরাতে সংঘটিত হলে যে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হতো সে সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা মনে করছে, রাত সাড়ে ৯ টায় আগুনের ঘটনা ঘটার কারণে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। রাত সাড়ে ৯ টায় আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ভবনের পেছনের সাধারণ মানুষ দেখার ফলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে পেরেছে। এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এ অগ্নিকান্ড রাত সাড়ে ৯ টাতে না হয়ে মধ্যরাত বা দিনে আগুনের সুত্রপাত হলে অনেক প্রাণহানি ও পুরো অর্থনীতি ঝুকিতে পড়তো পারতো।

৩০তলা ভবনে কর্মদিবসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো। এক ফ্লোরে আগুন লাগার পর ফায়ার সিসটেম কাজ না করার কারণে অনেকেই সময় মত জানতে পারতো নাা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফায়ার সিসটেমের এই ঘাড়তির বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। ফলে যখন জানতে পারতো তখন আগুন ছড়িয়ে পড়তো এবং  তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটতো। আবার ২৩ মার্চ রাতের এ আগুন মধ্যরাতে সংঘঠিত হলে মানুষ ঘুমিয়ে পড়তো ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসতে আসতে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ধসে পড়তে পারতো। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হতো, সেই সাথে আইটি ব্যবস্থাপনা, নথিপত্রসহ সব কিছু অকেজো হয়ে পড়তো। ফলে আর্থিক খাতের পুরো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়তো। আর এর ধাক্কা লাগতে পারতো পুরো অর্থনীতিতে।

গত ২০১৬ সালের মার্চে রিজার্ভ চুরি যাওয়ার পর মনোস্তÍÍাত্বিক সমস্যা তৈরি হলেও অর্থনীতিতে কোন প্রভাব পড়েনি। যা সরকার সামলে নিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের  ৩০তলা ভবনের মত বহুতল প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বড় বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটতে পারতো। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাজনিত যেসব ঘাড়তি আছে সেগুলো চিহ্নিত করেছে। ইতিপূর্বে নিরাপত্তার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে বাস্তবায়িত হয়নি, সে সব বিষয়কেও বিবেচনায় এনে বাস্তবায়নে দ্রুত কাজ করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা, আইটি নিয়ন্ত্রণ সিসটেম ও নথিপত্র কিভাবে উচ্চতার নিরাপত্তার বলয়ে আনা যায়-এ কথাও চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাতে আগুন বা কোন কারণে এ সব কার্যক্রমে বিপর্যয় হয় তা বিকল্প পথে কাজ চালিয়ে নিতে পারে-এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্দ্ধতন ওই সুত্রটি নিশ্চিত করেছে। এ ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে নিরাপত্তার ব্যাপারে চুড়ান্ত পরিকল্পনা করবে। তবে এখনি আন্ত:বিভাগের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে যে সব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব তা ইতোমধ্যে তা শুরু হয়েছে।