বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৭ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > বাসর রাতের ভালোবাসা মজা

বাসর রাতের ভালোবাসা মজা

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ আজ নিলয় ও নীলার বাসর রাত। বাসর রাতটা ওদের চমত্কারভাবে কাটছে । বিচিত্র রঙের রঙিন ফুলে সজ্জিত বিছানায় দুজন পাশাপাশি বসে নতুন এক স্বপ্নের রাজ্যে প্রতিটি মুহূর্ত অতিবাহিত করছে । দুজনের অন্তর আজ এক হয়ে গেছে । দুজনে মিলে ঠিক করেছে আজকের এই মধুর রাতটা সত্যিকার অর্থেই মধুর করবে, প্রেম-ভালোবাসা-দেহ-মন আদান প্রদানের মাধ্যমে সারারাত কাটিয়ে দেবে, এক মুহূর্তও ঘুমাবে না । অথচ ওদের বিয়েটা আজকালকার মত প্রেমের বিয়ে না । পারিবারিকভাবে দুজনের বিয়ে হয়েছে । অল্পসময়ের মধ্যে একে অন্যকে অন্তর দিয়ে ভালোবেসে ফেলেছে । নিলয় নীলাকে এখন বুকের সাথে আলতো করে জড়িয়ে রেখেছে । নীলার গালে-মুখে-কপালে চুমু খাচ্ছে । নীলা কিছুটা লজ্জা পেলেও ভালোবাসার ডাকে সাড়া দিচ্ছে, দু’চোখ বুঝে নিলয়ের গালে একটা চুমু খেল । এখন দুজন বিছানায় শুয়ে পড়ল। নিলয় নীলাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলল, তোমাকে আমি খুব ভালোবাসি। সারাজীবন ভালোবাসব। এর আগে আমি কোনা মেয়েকে ভালোবাসতে পারি নি। কোন মেয়েও আমাকে ভালোবাসে নি। তাই সব ভালোবাসা তোমার জন্য রেখেছি। নীলা বলল, কোন মেয়েকে ভালোবাসতে পার নি কেন ? নিলয় বলল, একজনকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম কিন্তু সে আমাক বাসে নি। তুমি কাউকে ভালোবাসতে ? নীলা বলল, না ,তবে একটা ছেলে আমার সাথে প্রেম করার চেষ্টা করেছিল । নিলয় : তুমি কী করলে ? নীলা : আমি রাজি হই নি ।

নিলয় : ঘটনাটা খুলে বল। তবে বলতে না চাইলে থাক । নীলা : খুলেই বলি নইলে তুমি ভুল বুঝতে পার ! নিলয় : দূর বোক ! তোমাকে আমি খুব ভালোবেসে ফেলেছি । ভুল বুঝব কেন ? নীলা : তারপরেও খুলে বলি, আমি কোন কথাই গোপন রাখতে চাই না, ছেলাটার নাম জয়। আমি তাকে কথনো দেখি নি। মোবাইলে তার সাথে পরিচয়। আমাকে কল করে প্রথমে বন্ধু হতে চেয়েছে । আমি ভালমন্দ তেমন কিছু বলি নি । সে মাঝে মাঝে কল করে প্রায় জোর করেই আমার সাথে কথা বলত ।একদিন তো প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ফেলল । আমি আগে কিছু না বললেও এবার সাথে সাথে প্রত্যাখ্যান করলাম । নিলয় বলল, প্রত্যাখ্যান করলে কেন ? নীলা বলল, প্রেম জিনিসটা আমার কখনো ভালোচোখে দেখা হয় নি। আর পরিবার থেকেও প্রেম করতে নিষেধ ছিল ।কারণ আমার বড়বোন প্রেম করে বিয়ে করে সুখি হতে পারে নি । অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে । অন্যদিকে আমার এক বান্ধবী প্রেম করে প্রতারিত হয়ে আত্মহত্যা করেছে। তুমিই বল এ অবস্থায় পরিবারের কথা অমান্য করে প্রেম করার সাহস আমি কোথায় পাব ? নিলয় : ছেলেটাকে তা বলেছিলে ? নীলা : বলিনি, শুধু বলেছি বিয়ের আগে আমি প্রেম করব না । নিলয় : সে কী বলল ? নীলা : প্রথমে খুব অনুরোধ করেছিল। কেন করব না জানতে চেয়েছিল। কিন্তু আমার এক কথা, আমি প্রেম করব না। তারপর ছেলেটা একদিন আমাকে হুমকি দিয়ে বলেছে, দাঁড়া তোকে বিয়ে করে তোর সাথে প্রেম করব। মনে রাখিস। আমি বলেছি, আচ্ছা যা ! যা পার করিস ।

নিলয় : এরপর কী হল ? নীলা : আর কিছু হয় নি । সে আর কল করেনি। আমার তো আর কল করার প্রশ্ন আসে না। এখন কল দিয়ে বলা লাগে, কীরে? আমায় বিয়ে করেছিস না ? আয় প্রেম কর। তবে শুনে রাখ, আমার বিয়ে হয়ে গেছে, এখন স্বামীর সাথে বাসর রাত কাটাচ্ছি। নিলয় : তাহলে কল করে বল । নীলা : কী দরকার কল করার ? ও কথা তো এমনি বললাম । আমি ওকে আর কখনো মনে করতে চাই না । আমি জিতেছি ও হেরেছে, ব্যাস এখানেই শেষ । নিলয় : শেষ হবে না ।ও তোমার সাথে সারাজীবন জোকের মত লেগে থাকবে । নীলা : ইস! এত সোজা। তাহলে ওকে আমি আস্ত রাখব । নিলয় : আস্তই রাখবে ,জড়িয়ে রাখবে । নীলা : তুমিও ঐ পাগলটার মত কী বলছ? নাকি সন্ধেহ করছ ওর সাথে আমি প্রেম করেছি ,এখনো করছি। নিলয় : না না ,সন্ধেহ করব কেন ? তুমি ফুলের মত পবিত্র একটা মেয়ে। তুমি ওকে কল করে শুধু বলবে যে তুমি এখন আমার সাথে বাসর ঘরে । নীলা : ঠিক আছে দিচ্ছি । নীলার ছেলেটার নম্বর মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল। মোবাইলে নম্বর উঠিয়ে কল দিল, একটু পর রিং বাজল । তখনই নিলয়ের মোবাইলটা বেজে উঠল। সেটাও নীলার কাছে ছিল । একহাতে সেটা তুলে বলল, তোমার মোবাইলটাও বাজছে । বলার সাথে সাথে মোবাইলের স্কিনে নাম দেখল, নীলাঞ্জনা (নীলা) এবং নীলার মোবাইল নম্বর ।

নীলা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল । নিলয় বলল, কী ব্যাপার ? কী হয়েছে ? নীলার হতভম্ব ভাবটা এখনো কাটে নি । নিলয় বলল, বুঝেছি তোমার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে । শোন, সেই ছেলেটা হারে নি, যা বলেছে তাই করেছে । নীলা হেসে বলল ,ওরে শয়তান ! তুমিই সেই ছেলেটা ? নিলয় এবার নীলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল, ইয়েস ম্যাডাম, আপনার জন্য আমি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম । যখন বুঝলাম প্রেমের পথে হবে না তখন সিদ্ধান্ত নিলাম এর চেয়েও সহজ পথ আছে, ঘটকের মাধ্যমে বিয়ে করতে হবে আপনাকে । নীলা একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল, ভালো করেছেন ! আসলে আমারও তখন মাঝে মাঝে আপনার কথা শুনে প্রেম করতে ইচ্ছে হতো । আপনি এত মধুর কথা বলতেন আর খুব ভালোও ছিলেন ।

আপনি আমাকে এত ভালোবাসতেন, খুব অনুতপ্ত ছিলাম। সারাজীবনই একটা অপরাধবোধ কাজ করত । যাক বাঁচা গেল, যতটুকু ভালোবাসা দিয়েছেন ততটুকু ফিরিয়ে দেবার পথ হয়ে গেল । নিলয় বলল, আসলে আমি তোমাকে না পেলে বাঁচতাম না । তাই এই পথের আশ্রয় নিয়েছিলাম। নীলা বলল ,আমারও এখন মনে হচ্ছে তুমি আমার জীবনসাথী না হলে আমিও বাঁচতাম না । নিলয় নীলার ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে ওকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলল, যে ভালোবাসা এতদিন পাই নি তা আজ আদায় করে নেব। নীলা নিলয়ের বুকের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে বলল, এতদিন যত কষ্ট দিয়েছি আজ একদিনেই তোমাকে তার হাজারগুণ ভালোবাসা দিতে চাই । এরপর ওরা মধুর এক ভালোবাসার জগতে চলে গেল । হাজার বছর ওরা সেখানে থাকতে চায় । আজ বাসর রাতের ভালোবাসার মাধ্যমে সেই জগতের শুরু ।