বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৭ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > বিষন্নতা কাটবে বিয়েতে

বিষন্নতা কাটবে বিয়েতে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ বিষন্নতায় ভুগছেন? বিয়ে করে ফেলুন। বিয়েতে আপনার বিষন্নতা এবং মানসিক উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্তি মেলে বলে মনোচিকিৎসক এবং সমাজ মনোবিজ্ঞানীরা পরামর্শ দিয়েছেন। সম্প্রতি এক গবেষণা সমীক্ষায় বিয়েকে বিষন্নতা থেকে মুক্তির এমনই উপায় হিসেবে দেখতে পেয়েছেন গবেষকরা।

সমীক্ষায় বলা হয়, নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য বিয়ে করা খুবই ভাল এবং কল্যাণকর। এতে করে বিষন্নতা, উদ্বিগ্নতা, বিরক্তি এবং নিজের উপর জুলুম ও ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে গবেষকরা মনে করেন।

সেইসঙ্গে বিয়ের মাধ্যমে দুজন নারী-পুরুষ তার আগের বিরূপ অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে মানসিকভাবে বিয়ের পর অনেক বেশিকর্ম উদ্দীপনা লাভ করে।

১৫টি দেশের ৩৪ হাজার ৪৯৩ জন পুরুষ ও নারীর ওপর করা ওই সমীক্ষার ভিত্তিতে গবেষকরা এসব কথা বলেন।

অপরদিকে বিবাহ বিচ্ছেদ, ডিভোর্স, তালাক কিংবা মৃত্যুজনিত কারণে বিধবা-বিপতœীক হওয়ার ফলে নারী-পুরুষ উভয়ের জীবনে মারাত্মক ধরনের মানসিক বিপর্যয় নেমে আসে।

বিশেষ করে এর ফলে নারীদের ক্ষেত্রে মানসিক নিপীড়ন বেড়ে যায়। আর পুরুষের ক্ষেত্রে বেড়ে যায় বিষন্নতা। যাতে মানসিক অসুস্থতার কারণে দ্রুত শারীরিক অসুস্থতাও বেড়ে যায়। হৃদরোগ থেকে শুরু করেন নানান রোগ ব্যাধির প্রকাশ ঘটার আশঙ্কা দেখা দেয়।

নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ ওটেগোর ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট প্রফেসর কেট স্কটের নেতৃত্বে ব্যাপকভিত্তিক ওই গবেষণাটি করা হয়।

গত একদশক জুড়ে উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোতে করা জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেল্থ (ডব্লিউএমএইচ) এর মাধ্যমে সমীক্ষাটি করা হয়।

এ ধরনের গবেষণার সমস্যা সম্পর্কে স্কট বলেন, “নারী-পুরুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিয়ের প্রভাব সম্পর্কিত বহু সংখ্যক আন্তর্জাতিক গবেষণা রয়েছে। এ ধরনের গবেষণা আসলে পুরোপুরি একটি বিতর্কিত এলাকার। কারণ তাতে লিঙ্গ রাজনীতি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত থাকে।”

স্কট জানান, এ ধরনের গবেষণা ও অনুসন্ধানের কাজ ব্যাপক ভিত্তিক হয়ে থাকে। যেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষ এবং অনেক দেশ থাকে।

ফলে এ গবেষণা সমীক্ষায় ব্যাপকভাবে নারী-পুরুষের বিষন্নতা, উদ্বেগ ও মানসিক নিপীড়ন সম্পর্কিত বহু তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছিল।

গবেষণার ফল সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে স্কট বলেন, “আমরা বিয়েতে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কি ধরনের ঘটনা ও প্রতিক্রিয়াগুলো ঘটে সেগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম হই। যারা কখনো বিয়ে করেনি এবং যাদের বিয়ে শেষ হয়ে গেছে- এই উভয় অবস্থার নারী-পুরুষেরে ক্ষেত্রেও আমরা গবেষণা করে প্রতিক্রিয়াগুলো বুঝতে সক্ষম হই।”

তবে এ গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে বিয়ে নারীর চেয়ে পুরুষের জন্য খুবই উত্তম। স্কট বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোর সমীক্ষায় খুবইগুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধান হল, মানসিক স্থাস্থ্যের দিক থেকে বিয়ে নারীর চেয়ে পুরুষের জন্য খুবই উত্তম। তবে আমাদের এ গবেষণা এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয়।”

স্কট বলেন, “যারা কখনো বিয়ে করেনি, আর যারা করেছে এই উভয় নারী-পুরুষের মধ্যে তুলনা করে আমরা দেখতে পেয়েছি, গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্যের বিপর্যয় ও নানান ব্যাধিগুলোর দিক থেকে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই বিয়ে খুবই ভাল ও কল্যাণকর।”

উল্লেখ্য, গবেষণা সমীক্ষাটি সাইকোলজিক্যাল মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়।