শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > ভারতীয় লেখিকা সুস্মিতা ব্যানার্জিকে হত্যা করেছে তালেবান: পুলিশ

ভারতীয় লেখিকা সুস্মিতা ব্যানার্জিকে হত্যা করেছে তালেবান: পুলিশ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ আফগানিস্তানের সন্দেহভাজন তালেবান ভারতীয় লেখিকা সুস্মিতা ব্যানার্জিকে গুলি করে হত্যা করেছে। ১৯৯০’র দশকে তালেবানের হাত থেকে নাটকীয়ভাবে নিজের মুক্তি নিয়ে বাঙালি লেখিকা সুস্মিতার লেখা বই অবলম্বনে বলিউডে সিনেমা তৈরি হয়েছে।

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে স্বামীর বাসভবনের কাছে ৪৯ বছর বয়সী সুস্মিতার গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ পাওয়া যায়। সন্দেহভাজন তালেবান তাকে বৃহস্পতিবার ভোররাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান দৌলত খান জাদরান জানিয়েছেন, পাকতিকার রাজধানী শারান শহরের উপকণ্ঠে একটি মাদ্রাসার কাছ থেকে সুস্মিতার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।

সুস্মিতার লেখা বই ‘কাবুলিওয়ালার বাঙালি স্ত্রী’ অবলম্বনে ২০০৩ সালে বলিউডে একটি সিনেমা তৈরি হয়।

আফগান পুলিশ মনে করছে, ওই বইটির কারণে জঙ্গীরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে থাকতে পারে। জাদরান জানান, “আমাদের প্রাথমিক তদন্ত বলছে, অতীতে সুস্মিতার কোন লেখা বা বক্তব্যের কারণ তার প্রতি জঙ্গীরা ক্ষুব্ধ ছিল।” তিনি আরো জানান, তালেবান তার প্রতি এতটাই ক্ষুব্ধ ছিল যে, তাকে ২০ বার গুলি করে তারা এবং তার চুলের একাংশ টেনে ছিড়ে ফেলে। আফগান স্বামীসহ সুষ্মিতাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তালেবান। এরপর দু’জনকে শক্ত করে বেঁধে ফেলে তারা। এক পর্যায়ে সুস্মিতার ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে তালেবান। তবে এ সম্পর্কে তালেবানের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সুস্মিতা ব্যানার্জি পাকতিকা প্রদেশের ব্যবসায়ী জানবাজ খানকে বিয়ে করেছিলেন। ১৯৮৯ সালে কোলকাতায় জানবাজের সঙ্গে তার পরিচয় ও বিয়ে হয়েছিল। জানবাজ তাকে আফগানিস্তানে নিয়ে যান। আফগানিস্তানে তিনি নিজেকে সায়েদ কামালা নামে পরিচয় দিতেন।

অবশ্য পরবর্তীতে আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানের পর একবার স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এ অবস্থায় কাবুলের কাছে তালেবানের হাতে ধরা পড়ে যান সুস্মিতা। স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার অপরাধে তাকে তালেবানরা হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি তাদেরকে একথা বোঝাতে সক্ষম হন যে, তিনি ভারতীয় নাগরিক এবং নিজের দেশে চলে যাওয়ার অধিকার তার আছে।

তালেবানরা ওই অবস্থায় তাকে কাবুলস্থ ভারতীয় দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করে এবং তিনি কোলকাতায় চলে যান।

কিন্তু আফগানিস্তানে ফিরে যাওয়া তার জীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। পুরস্কার জয়ী বাঙালি লেখিকা মহেশ্বতা দেবী বলেছেন, আফগানিস্তানে ফিরে গিয়ে নিজের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করা তার ঠিক হয়নি।