শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > জাতীয় > ভোটার টানার পে-কমিশন

ভোটার টানার পে-কমিশন

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়াতে না পারলেও স্থায়ী পে-কমিশন গঠন প্রায় চূড়ান্ত করেছে সরকার। একই সঙ্গে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ারও ঘোষণা থাকছে। তবে কবে নাগাদ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হবে সে বিষয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞরা মনে করছেন, ভোটার টানতেই নির্বাচনের আগে পে-কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সিপিডির তরফ থেকে আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি একটি স্থায়ী পে-কমিশন গঠন করার কথা। শ্রমিকদের জন্যও পে-কমিশন করা দরকার। সরকার এটি করছে ভালো কথা।

কিন্তু এটি আরও আগে করা দরকার ছিল। শেষ সময়ে এসে তড়িঘড়ি করে পে-কমিশন ঘোষণা দিয়ে এটি তো সরকার বাস্তবায়ন করতে পারবে না। কেননা পে-কমিশন গঠন, তার কার্যক্রম শুরু করা একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এত সময় তো বর্তমান সরকারের হাতে নেই। সুতরাং এ সরকারের আমলে এই পে-কমিশনের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার মেয়াদের শেষ সময়ে জনপ্রিয় কিছু কাজ করে থাকে। তারই অংশ হিসেবে সরকার হয়তো এ ধরনের কাজ করতে যাচ্ছে। যেহেতু সামনে নির্বাচন, সুতরাং এটি তো সহজেই অনুমেয় ভোটার টানতেই সরকার এ ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে পে-কমিশন কাদের নিয়ে করা হবে, সেটিও দেখার বিষয়। এখানে দক্ষ এবং যোগ্য লোকদের নিয়ে যেন পে-কমিশন গঠন করা।

উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালের ১২ নভেম্বর সপ্তম বেতন কাঠামো ঘোষণা করেছিল। সেবার সের্বাচ্চ বেতন বেড়েছিল ৭৪ শতাংশ আর সর্বনিম্ন ৫৬ শতাংশ। সর্বোচ্চ বেতন ৪০ হাজার আর সর্বনিম্ন বেতন ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ১০০ টাকা।

স্বাধীনতার পর সাতটি বেতন কমিশন গঠন করা হয়। ২০০৯ সালে ঘোষণা করা হয় সপ্তম বেতন কমিশন। এর আগেও ছয়টি বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। তবে কোনো সরকারই পে-কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি। প্রতিবারই সচিব কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। ষষ্ঠ বেতন কমিশন ঘোষণা হয়েছিল ২০০৫ সালে। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১৩ লাখ। এর মধ্যে চাকরিতে সক্রিয় রয়েছেন প্রায় ১১ লাখ।

এদিকে গতকাল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্থায়ী পে-কমিশনের ঘোষণা অক্টোবরেই আসছে। পাশাপাশি এ সরকারে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দেওয়া হবে মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা। সচিবালয়ে গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়নের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটেই আমি স্থায়ী পে-কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আগামী মাসেই সেটি ঘোষণা করা হবে। সরকার পে-কমিশনের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতাও ঘোষণা করবে কি না জানতে চাইলে মুহিত বলেন, হ্যাঁ, মহার্ঘ ভাতাও দেওয়া হবে। আমরা তো আরও কিছুদিন আছি। আমাদের আমলেই মহার্ঘ ভাতা দিয়ে যাব।

গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল, মহাসচিব এমএ আলীমসহ অন্য নেতারা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তারা মন্ত্রীর কাছে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, রেশন ও অবসরকালীন আর্থিক সুবিধার দাবি জানান।

জবাবে অর্থমন্ত্রী তাদের বলেন, সরকারের শেষ সময়ে এসে সব দাবি পূরণ করা কঠিন। তবে দুয়েকটি দাবি সরকার বিবেচনা করবে। মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়া আর্থিক প্রতিবেদন আইন-২০১৩-এর বিল সংসদের এই অধিবেশনেই উপস্থাপন করা হবে বলেও মন্ত্রী জানান। তবে একটি মহল আইনটি পাসের বিরোধিতা করছে বলেও জানান তিনি। সকালের খবর