বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৭ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > মামলাকারীকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি বাংলাদেশের

মামলাকারীকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি বাংলাদেশের

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী খাতুনের মৃত্যুর জন্য দেশটির সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করতে চলেছেন যে দুজন মানবাধিকার কর্মী, তাদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বাংলাদেশ। মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ ফেলানী হত্যা নিয়ে যাতে আর না এগোনো যায়, তার জন্যই বাংলাদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। বিসিসি বাংলার কলকাতা প্রতিনিধি অমিতাভ ভট্টশালী রিপোর্টটি করেছেন। ওই রিপোর্টে বলা হয়, সীমান্ত হত্যা নিয়ে সরব এমন একটি ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের প্রধান কিরীটি রায় জানিয়েছেন, ফেলানী খাতুনের মৃত্যু নিয়ে ভারতের সুপ্রীম কোর্টে যে জনস্বার্থ মামলা করার পরিকল্পনা নিয়েছেন, তার নথিপত্র যোগাড় করতে ও ফেলানীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তিনি ও প্রাক্তন বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত বাংলাদেশের ভিসার জন্য আবেদন করেছিলাম ৬ দিন আগে। প্রতিদিনই তাদের বলা হচ্ছিল ঢাকা থেকে ভিসার অনুমতি আসেনি। আজকের বিমানে (গতকাল) তাদের ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষমেশ ভিসা ছাড়াই পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন। রিপোর্টে বলা হয়, মি. রায় বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন আর সীমান্ত হত্যা নিয়ে যৌথভাবে কাজও করে থাকে তার সংগঠন। বাংলাদেশে যেতে চাওয়ার কারণ হিসাবে আবেদনে কী লিখেছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে মি রায় বলেন, ‘আমি পর্যটক ভিসার আবেদন করেছিলাম। আর প্রাক্তন বিচারপতি সেনগুপ্তর কাছে বাংলাদেশের কয়েকটি সংগঠনের আমন্ত্রণপত্র ছিল। ওই সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র আর ব্লাস্ট। যার কর্ণধার সারা হোসেন। এরকম সংগঠনগুলোর আমন্ত্রণপত্রেরও স্বীকৃতি দিল না উপ-হাইকমিশন। তবে ভিসার সাক্ষাতকারের সময়ে আমরা অফিসারদের বলেছিলাম ফেলানী খাতুনের পরিবার যাতে বিচার পায় সেজন্যে একটা জনস্বার্থ মামলা করব আমরা। সেই জন্যই বাংলাদেশ যাব আমরা।’ কিরীটি রায় বলেন, প্রতিদিনই আমাদের বলা হচ্ছিল ঢাকা থেকে ভিসার অনুমতি আসেনি। কিন্তু শেষমেষ ভিসা ছাড়াই পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে যে বার্তাটা বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন দিল, সেটা স্পষ্ট যে তারা চাইছে না যে ফেলানী হত্যা নিয়ে কেউ কোনও পদক্ষেপ নিক।’ বাংলাদেশের কিশোরী ফেলানি খাতুন ২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি ভোরে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার অন্তর্গত চৌধুরীহাট সীমান্ত চৌকির কাছে কনস্টেবল অমিয় ঘোষের গুলিতে মারা যান। ওই ঘটনার আড়াই বছর পরে বিএসএফের নিজস্ব আদালত অভিযুক্ত কনস্টেবল অমিয় ঘোষের বিচার করে তাকে নির্দোষ বলে রায় দেয়। গত সপ্তাহে সেই রায়কে স্বীকৃতি না দিয়ে পুনর্বিচারের নির্দেশ দিয়েছে বিএসএফ। ভারতের সুপ্রীম কোর্টে ওই ঘটনার বিচার চেয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা করতে চাইছে মানবাধিকার সংগটন ‘মাসুম’। সংগঠনের প্রধান কিরীটি রায় বলেন, যে তারা বাংলাদেশে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়ায় ফেলানীর পরিবারকে ভারতে আনা যেতে পারে। যদি ভারত সরকার তাদের ভিসা দেয়। সুপ্রীম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার জন্যই ফেলানীর পরিবারের ভারতে আসা প্রয়োজন। মি. রায় ও প্রাক্তন বিচারপতি মলয় সেনগুপ্তকে ভিসা না দেওয়ার কারণ হিসাবে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কোন আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে ভিসা নীতিমালার শর্তগুলি পূরণ না করতে পারার জন্যই ওই দু’জন সহ মোট ১৫ জনের ভিসার আবেদন আজ (গতকাল) বাতিল করা হয়েছে। আর কোন দূতাবাস বা হাইকমিশনই ভিসা না দেওয়ার জন্য জবাবদিহি করে না। তবে উপ-হাইকমিশনের সূত্রগুলো এটাও জানিয়েছে যে মি. রায় ২০০৯ থেকে প্রতি বছরই কখনও এক কখনও দু’বার বাংলাদেশ সফর করেছেন। এ বছরের মার্চেও তিনি বাংলাদেশ সফর করেছেন। প্রতিবারই পর্যটক ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে তিনি কি কাজ করেন- সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে রিপোর্টে।