শুক্রবার , ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ , ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > মালয়েশিয়ায় আটকদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ

মালয়েশিয়ায় আটকদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ কূটনৈতিক প্রতিবেদক: মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযানে আটকদের আনতে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন। দণি-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে বড় ধরনের অভিযানের প্রথম সপ্তাহে ৩৮৭ বাংলাদেশিকে আটকের পর মন্ত্রী সোমবার এ কথা জানান। অবৈধভাবে অবস্থানের জন্য আটক হলেও এদের দেশটিতে জেল-জরিমানা না দিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্যও চলছে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। এদিকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে জানানো হয়, মালয়েশিয়ায় গত বছরের শুরুতে দেওয়া বৈধ হওয়ার সুযোগে ২ লাখ ৬৮ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি বৈধতা নিলেও নানা কারণে ৫০-৬০ হাজার বাংলাদেশি এখনও অবৈধভাবে দেশটিতে থেকে গেছে। মালয়েশীয় সরকার আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর প্রায় দেড় লাখ সদস্য নিয়ে একটি বিশেষ ইউনিট গঠন করেছে।

আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে তাদের অভিযান। যেকোনো স্থানেই এই অভিযান চালানো হবে। এর আওতা থেকে বাদ যাবে না পরিত্যক্ত বাড়ি, খামার, বিনোদন কেন্দ্র, এমনকি ম্যাসাজ পার্লারও। রোববার থেকে যাদের আটক করা হচ্ছে তাদের বৈধতা প্রমাণের কাগজপত্র দেওয়ার জন্য ১৪ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র দেখাতে না পারলে তাদের জায়গা হবে দেশটির বিভিন্ন এলাকায় থাকা ‘ডিটেনশন সেন্টারে’। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের লেবার কাউন্সিলর মন্টু কুমার বিশ্বাস গতকাল জানান, ডিটেনশন সেন্টারে নেওয়ার পর হাইকমিশন শুধু তাদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে দাফতরিক সহায়তা করতে পারে। তবে এদের মালয় আইনে জেল বা জরিমানা থেকে রা করার একটি প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

মালয়েশিয়ায় বৈধ হওয়ার সুযোগ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, এদেরকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে বৈধ হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কথামতো মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসে নিবন্ধন কিংবা পাসপোর্ট নবায়ন করেননি। মোশাররফ বলেন, কয়েক মাস আগে আমার মালয়েশিয়া সফরের সময় সেদেশের সরকারকে অনুরোধ করেছি, যেন আমাদের কোনো লোক আটক হলে তাদেরকে পাসপোর্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানোর জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আশা করছি আমাদের শ্রমিকদের কোনো সাজা হবে না এবং আমরা তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব। মন্ত্রী বলেন, আমি মালয় সরকারকে বলেছি, যদি আমাদের দেশের অবৈধ নাগরিককে শনাক্ত করতে পারি এবং কোনো কাগজ না থাকে তাদের আমরা আউট পাস দিয়ে দেশে নিয়ে আসব।

অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযানের বিষয়ে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমদ জাহিদ হামিদি গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সারাদেশের ৪০টি এলাকায় অভিযান চালিয়ে রোববার মোট ৮ হাজার ১০৫ জন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে ২ হাজার ৪৩৩ জনকে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় আটক করা হয়। এর মধ্যে ৩৮৭ জন বাংলাদেশি বলে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী জানান। মালয়েশিয়ার অভিবাসন দফতরের উপ-পরিচালক সারাভানা কুমার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, অভিযানে প্রায় ৪ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। প্রায় ৩ কোটি জনসংখ্যার মালয়েশিয়ায় মোট শ্রমশক্তির ১৬ শতাংশই বিদেশি।

মালয়েশিয়ার বাংলাদেশের হাইকমিশনের লেবার কাউন্সিলর মন্টু বিশ্বাস গতকাল দুপুরে কুয়ালালামপুর থেকে টেলিফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, মালয়েশিয়ায় ২ লাখ ৬৭ হাজার অবৈধ বাংলাদেশিকে আগে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। সিক্স-পি নামে ওই নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সব মিলিয়ে প্রায় ৪ লাখ কর্মী নিবন্ধিত হন, যাদের মধ্যে ২ লাখ ৬৮ হাজার ছিলেন মেয়াদ শেষে বসবাসকারী। মালয়েশিয়া সরকারের ওই বৈধতা দেওয়ার সুযোগের পর অনেক বাংলাদেশি নতুন করে এখানে আসছেন বলেও মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, লুঙ্গি পরে ভিজিট ভিসায় এরা কুয়ালালামপুর চলে আসছে। এদের কারণে বৈধরা সমস্যার মুখে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ায় এখন বাংলাদেশিদের মধ্যে এক শতাংশও অবৈধ নেই। বৈধদের সুবিধার দিকটি দেখতে হলে এভাবে ভিজিট ভিসায় কাজের জন্য মালয়েশিয়া আসা বন্ধ করতে হবে।