শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > মেট্রোরেলে সংসদ ভবনের মুল স্থাপত্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে

মেট্রোরেলে সংসদ ভবনের মুল স্থাপত্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যেও মেট্রোরেল প্রকল্পকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর যানজট নিরসনের পাশাপাশি এ প্রকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উত্তরা থেকে মাত্র ৩৮ মিনিটেই পৌঁছানো যাবে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের সন্নিকটে। সেই মেট্রোরেল প্রকল্পের অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবনের পূর্ব পাশ মনিপুরি পাড়া এলাকা দিয়ে সংসদ ভবন এলাকায় মেট্রোরেলের কাজ শুরু হয়েছে। নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ভূ-তাত্তিক জরিপের কাজ শুরুকরেছে ওই প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট কন্সট্রাকশনস লিমিটেড। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নেওয়া এ প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে রয়েছে এনকেডিএম অ্যাসোসিয়েশন। তবে পরিবেশ ও নগরপরিকল্পনাবিদরা মনে করছেন এমনটা হলে সংসদ ভবনের মুল স্থাপত্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে ।

সংশ্লিষ্টসূত্র মতে, মেট্রোরেল প্রকল্প গ্রহণের পর থেকে এনিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে সংসদ ভবনের পূর্ব পাশ মনিপুরিপাড়া এলাকা দিয়ে ওই রেল লাইন বসানো হলে তা সংসদ ভবনের সৌন্দর্য্যহানি ঘটাবে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। সেটা জাতীয় সংসদের স্থপতি লুই আই কানের নকশা লঙ্ঘন হবে বলেও দাবি করা হয়। কিন্তু অভিযোগ আমলে না নিয়েই প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করা হয়েছে।
মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সংসদ এলাকার কেমন সৌন্দর্য্যহানি ঘটাবে এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আকতার মাহমুদ আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, “আমরা আন্দোলন করেছিলাম যেন না হয়। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ঢাকায় মত একটা মেগাসিটিতে যেন মেট্রোরেলের ব্যবস্থা থাকে তাই কিছুই বলছিনা। তবে এখন যেদিক দিয়ে যাচ্ছে তা হলে সংসদ ভবনের মুল স্থাপত্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে”
বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, মেট্রোরেলের জন্য যে খরচ হবে ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকা সেই টাকা যদি আমি রেলের মাস্টার প্ল্যানের জন্য ব্যবহার করি তাহলে সারা দেশের রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন করা যায়।সারা বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ উন্নত করা যায়। এর ফলে ঢাকা শহরে এত যানজট থাকতনা। এই ব্যস্থায় যদি ঢাকায় সমস্ত সম্পদ ব্যবহার করা হয় তবে সমস্যার সমাধান হবেনা বরং উল্টোটা হবে। তবে আমারা মনেকরি সারা দেশের রেলের উন্নয়নে ব্যয় করলে খুব ভাল হত।”
তিনি সংসদ ভবনের পাশদিয়ে কিছুতেই মেট্রোরেল হওয়া উচিত নয় উল্লেখ করে বলেন, “এমনটি হওয়া কিছুতেই মেনে নেওয়া যায়না।”
উল্লেখ্য, উত্তরা তৃতীয় পর্যায়, মিরপুরের পল্লবী, রোকেয়া সরণির পশ্চিম, সংসদ ভবনের দক্ষিণ সীমানা দিয়ে ফার্মগেট, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত।
সংশোধিত প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি)তে বলা হয়েছে, মেট্রোরেল পুরোটাই হবে উড়ালপথে। বিদ্যমান সড়কের মাঝখানে আড়াই মিটার জায়গা নেওয়া হবে। উচ্চতা হবে মাটি থেকে আট থেকে ১৩ মিটার পর্যন্ত।
মেট্রোরেলের জন্য ১৬টি স্টেশন প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে—উত্তরার উত্তর, উত্তরা কেন্দ্র, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, আইএমটি, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয়সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম ও বাংলাদেশ ব্যাংক। স্টেশনগুলোও ওপরে হবে এবং নিচ থেকে লিফট বা চলন্ত সিঁড়ির মাধ্যমে যাত্রীদের ওপরে যাওয়ার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
ডিপিপি অনুযায়ী, মেট্রোরেলে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করা যাবে। প্রতি সাড়ে তিন মিনিট পর পর একটি ট্রেন চলাচল করবে। ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩২ কিলোমিটার। চলাচলকারী মোট ২৪টি ট্রেনের প্রতিটিতে ছয়টি বগি থাকবে। প্রতি ট্রেনে ৯৪২ জন বসে এবং ৭৫৪ জন দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে পারবে। মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য প্রতি ঘণ্টায় ১৩ দশমিক ৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হবে। বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম