শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > শীর্ষ খবর > যমুনার ওপর দুই রেলসেতুর প্রস্তাব

যমুনার ওপর দুই রেলসেতুর প্রস্তাব

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের উত্তর-পশ্চিম-পূর্বাঞ্চলের দূরত্ব কমানো এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে রেলওয়ের সমতা বৃদ্ধির জন্য যমুনা নদীর ওপর পৃথক দু’টি রেলসেতু নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাক বিশিষ্ট একটি এবং ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ ঘাট রেলসেতু নির্মাণ করা হলে দূরত্ব কমার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় এ দু’টি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করেছে। আগামী সোমবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে।

অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সার-সংপে থেকে জানা গেছে, ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাক বিশিষ্ট সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আর ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ ঘাট পর্যন্ত অ্যাপ্রোচ লিঙ্কসহ প্রায় ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রেলসেতু নির্মাণে ব্যয় হবে আনুমানিক দুই হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এডিবি’র অর্থায়নে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের মাধ্যমে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রকল্প দু’টির সম্ভাব্যতা সমীা কার্যক্রম চলমান আছে। সমীা শেষ হলে সঠিক ব্যয় জানা যাবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের আগে সড়ক ও রেলওয়ের ফেরিই ছিল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন হলেও বিধি-নিষেধ থাকায় সেতুর এক পাশ দিয়ে শুধু ব্রডগেজ (বিজি) ও মিটারগেজের (এমজি) যাত্রীবাহী ও অপোকৃত হালকা ওজনের মালবাহী ট্রেন সর্বোচ্চ ২০ কি.মি. গতিতে চলাচল করতে পারছে।

নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু-স্বাভাবিক গতিতে অধিক সংখ্যক ট্রেন পরিচালনার স্বার্থে স্বতন্ত্র রেলসেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন বলে মনে করে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

পৃথক দু’টি সেতু নির্মিত হলে মালামাল আমদানি ও রফতানির জন্য রেলপথের ব্যবহার বৃদ্ধি, মালামাল পরিবহনে উন্নতমানের ট্রেন সার্ভিস প্রবর্তন, অধিক সংখ্যক যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন পরিচালনা নিশ্চিতকরণ, রেলওয়ের জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী করিডোরের সেকশনাল ক্যাপাসিটি বর্ধিতকরণ, সড়ক পথের চেয়ে তুলনামূলক কম সময়ে ও বেশি নিরাপদে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন নিশ্চিতকরণ সম্ভব হবে।

সেতু দু’টি নির্মিত হলে দেশের যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য সমস্যার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু বন্ধ থাকলে প্রস্তাবিত সেতু দিয়ে জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় ব্যবহার করা যাবে।

অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সার-সংপে থেকে আরও জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিপত্রের আলোকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে সেতু দু’টি নির্মিত হবে। যে কোনো দাতা দেশ বা সংস্থা এ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে পারবে বলে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে।

এছাড়া ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ ঘাট সেতু নির্মিত হলে রংপুর, দিনাজপুরের সঙ্গে জামালপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকার যোগাযোগের দূরত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।

প্রকল্পের কম্পোনেটের মধ্যে সেতু ছাড়াও অ্যাপ্রোচ রেল লিঙ্ক, প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ, প্রস্তাবিত রেলসেতুর উভয় পাশে স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিপত্রের আলোকে পিপিপি’র ভিত্তিতে সেতু দু’টি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্প দু’টি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে বাস্তবায়নে পদপে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘সেতু দু’টি নির্মাণ করা গেলে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকাসহ পূর্বাঞ্চলের দূরত্ব কমার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।’