বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ রাজনৈতিক বিবেচনায় দ্বিতীয় দফায় আজ আরো পাঁচটি নতুন বীমা কোম্পানির লাইসেন্সের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
আইডিআরএর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বুধবার এটি অনুমোদন দেওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে ওই দিন আইডিআরএ কর্তৃপক্ষ একাধিকবার সমন্বয় কমিটির সভা করেছে। সভায় পাঁচটি বীমা কোম্পানি চূড়ান্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নির্ধারিত পরবর্তী সভা থেকে এটি ঘোষণা দেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
অনুমোদন পেতে যাওয়া পাঁচটি বীমা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের আত্মীয়ের ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরীর স্বদেশ লাইফ ইনস্যুরেন্স, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্নার ডায়মন্ড লাইফ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। এ ছাড়া আলফা ইসলামী লাইফের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে নাজিমউদ্দিন আহমেদ নামের এক তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীকে।
এদিকে নতুন বীমা কোম্পানির অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করছেন বীমা বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, নতুন বীমার নিবন্ধনসংক্রান্ত প্রবিধানে বলা হয়েছে, নতুন বীমার আবেদন পাওয়ার ৪০ দিনের মধ্যে আবেদন নামঞ্জুর করা যাবে এবং নামঞ্জুর করার অনধিক পাঁচ দিনের মধ্যে আবেদনকারীকে তা জানাতে হবে। আবেদনকারী পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবে।
কিন্তু ইতিমধ্যে সাত মাস অতিবাহিত হলেও প্রথম দফায় যারা বীমা অনুমোদন পাননি, তাদের জানানো হয়নি। ওই আবেদনকারীদের মধ্য থেকেই আরেক দফা লাইসেন্স দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এতে করে আইনি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে নির্বাচনকালীন সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন করে বীমা কোম্পানির অনুমোদন দিতে পারে কি না, তা নিয়েও আইডিআরএর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
বীমা বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে ৬২টি বীমা কোম্পানি রয়েছে, যা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি। বিদ্যমান কোম্পানিগুলোই ঠিকমতো চলতে পারছে না। এই অবস্থায় রাজনৈতিক বিবেচনায় এর আগে ১১টি বীমা কোম্পানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়লে বীমা খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এবং বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ফেব্রুয়ারি বীমাকারীর নিবন্ধন প্রবিধানমালা-২০১৩ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। গেজেট প্রকাশের পর ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দফা বাড়িয়ে ১৫ মে পর্যন্ত নতুন বীমার নিবন্ধনের আবেদন জমা নেওয়া হয়। পরে ৭৭টি আবেদন জমা পড়ে এবং সেগুলো যাচাই-বাছাই করে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে গত ৪ জুলাই ১১টি নতুন বীমা কোম্পানির অনুমোদন দেয়া হয়।