বৃহস্পতিবার , ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ , ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > প্রবাস > রুশনারা আলীর উদ্যোগে- বারকেস ব্যাংককে ৪৬ ব্রিটিশ এমপি’র চিঠি

রুশনারা আলীর উদ্যোগে- বারকেস ব্যাংককে ৪৬ ব্রিটিশ এমপি’র চিঠি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ব্রিটেনে বন্ধের ঝুঁকিতে পড়া অর্থ আদান-প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচাতে রুশনারা আলী এমপির উদ্যোগে সাড়া দিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৪৬ জন এমপি বারকেস ব্যাংক কর্তৃপরে কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। ১০ই জুলাই ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী পরিচালক এনটনি জেনকিন্স বরাবর লেখা এ চিঠিতে তারা মানি ট্রান্সফার এজেন্সিগুলোর অ্যাকাউন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী মানি ট্রান্সফার এজেন্সিগুলোকে রায় গত ২রা জুলাই হাউজ অব কমন্সে বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু করেন। তারই অংশ হিসেবে এ চিঠি দেয়া হয়। সম্প্রতি তিনি তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে রেমিট্যান্সের গুরুত্ব তুলে ধরে গার্ডিয়ান পত্রিকায় একটি নিবন্ধও লিখেছেন। উল্লেখ্য, বারকেস ব্যাংক ব্রিটেনের অধিকাংশ মানি ট্রান্সফার এজেন্সিকে তাদের হিসাব বন্ধ করে দেয়ার কথা জানিয়ে ১০ই জুলাই পর্যন্ত সময় দেয়। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঝুঁকিতে পড়ে। যার মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের মালিকানাধীন ১১টিসহ বাংলাদেশী দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মানি ট্রান্সফার ব্যবসায় অবৈধ অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নের মতো ঝুঁকি থাকায় বারকেস এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানায়। ইতিমধ্যে বারকেস অ্যাকাউন্টগুলোর মেয়াদ এক মাস বাড়িয়েছে। চিঠিতে এমপিরা বলেন, বিশ্বব্যাংকের হিসাবে
২০১২ সালে বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্সের প্রবাহ ছিল ৫৩০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে শুধু ব্রিটেন থেকে রেমিট্যান্স গেছে প্রায় ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা ব্রিটিশ সরকারের বৈদেশিক সাহায্য বরাদ্দের পাশাপাশি আরেকটি গর্বের বিষয়। এ ছাড়া প্রতি বছর বিশ্বে দারিদ্র্য বিমোচনসহ নানা কারণে যে পরিমাণ আর্থিক সাহায্য বিলি হয়, তার চেয়ে রেমিট্যান্সের এ পরিমাণ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে এর ভূমিকা অনেক গুণ বেশি। তারা বলেন, ব্যবসায়িক ঝুঁকি বিবেচনায় যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার বারকেসের রয়েছে। কিন্তু কোন কনসালটেশন ছাড়া হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রেখে বাকিদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়ার কারণ তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। তারা অ্যাকাউন্টগুলো অন্তত ৬ মাস চালু রাখার দাবি জানান। যাতে ব্রিটিশ সরকার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অথরিটি) এ বিষয়ে সমাধান খোঁজার সুযোগ পায়। চিঠিতে আরও বলা হয়, বারকেসের সিদ্ধান্তের কারণে ব্রিটেনের মানি ট্রান্সফার ব্যবসা বড় বড় কোম্পানির দখলে চলে যাবে। এসব কোম্পানি একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ পেলে গ্রাহকরা আর্থিক তির শিকার হবেন। তারা বলেন, উন্নত কিংবা উন্নয়নশীল দেশের মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। বৃটেনে বসবাসকারী প্রবাসীরা সহজপথে তাদের নিজ নিজ দেশে অর্থ পাঠাতে না পারলে তাদের পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনরা এর তির শিকার হবেন, যা বৃটেনের ভাবমূর্তির জন্য ভাল হবে না। তারা বিষয়টির একটি স্থায়ী সমাধানে ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। বিবৃতিতে স্বারকারী এমপিদের মধ্যে পাঁচজন শ্যাডো কেবিনেট মেম্বার রয়েছেন। স্বারকারী ৪৬ জন এমপি হলেন, রুশনারা আলী (বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো), হ্যারিয়েট হারম্যান কিউসি, (ক্যাম্বারওয়েল অ্যান্ড প্যাকহাম), লিয়াম বায়ার্ন (বার্মিংহাম হজহিল), সাদিক খান (টুটিং), মার্গারেট হজ (বার্কিং), স্টিফেন টিম (ইস্টহাম), কিথ ভাজ (লেসটার ইস্ট), ডেভিড লেমি (টুটেনহাম), জন স্পেলার (ওয়ার্লি), ডেম জুয়ান রুডক (লুইসাম- ডেভটফোর্ড), চুকা উমানা (স্ট্রেথাম), জিম ডাউড (লুইসাম ওয়েস্ট অ্যান্ড পেনেজ), লিয়ান ব্রাউন (ওয়েস্টহাম), স্টেলা ক্রিজি (ওয়ালথামস্টো), লিজ কেন্ডাল (লেস্টার ওয়েস্ট), জন অ্যাশওয়ার্থ (লেস্টার সাউথ), ইভান লুইস (বারি সাউথ), স্যার টনি ক্যানিংহাম (ওয়ার্কিংটন), চি অনওয়ারা (নিউ ক্যাসেল আপনটাইন সেন্ট্রাল), ডায়ান অ্যাবট (হ্যাকনি নর্থ অ্যান্ড স্টোক নিউনটন), সিমা মালহোত্রা (ফেলথাম অ্যান্ড হ্যাসটন), শাবানা মাহমুদ (বার্মিংহাম-লেডিউড), এনডি লাভ (এডমনটন), গ্ল্যান্ডা জেকসন (হ্যামস্টিড অ্যান্ড কিলবার্ন), কেইট হো (ভক্সহল), ম্যাক হিলার (হ্যাকনি সাউথ অ্যান্ড সর্ডিচ), স্টিভ রিড (ক্রয়ডন নর্থ), জন ক্রায়ার (লেইটন অ্যান্ড ওয়ানস্টিড), বিরেন্দ্র শার্মা (ইলিং সাউথহল), স্টিভ পাউন্ড (ইলিং নর্থ), কেবিন ব্রানান (কার্ডিফ ওয়েস্ট), ক্যালভিন হপকিংন্স (লুটন নর্থ), সাইমন ড্যানজুক (রচডেল), গ্যারাথ থমাস (হ্যারে ওয়েস্ট), জনাথন রেনলড (স্টেলিব্রিজ অ্যান্ড হাইড), জিম ফিজপ্যাট্রিক (পপলার অ্যান্ড লাইম হাউজ), জন ক্রোডাস (ডেগেনহাম অ্যান্ড রেইনহাম), মাইক গ্যাইপস (ইলফোর্ড সাউথ), জ্যারিমি করভিন (ইসলিংটন নর্থ), ইয়াসমীন কোরেশী (বব্বন সাউথ ইস্ট), স্যার জেরাহ্ব কাউফম্যান (ম্যানচেস্টার গরটন), ব্যারি গার্ডনার (ব্র্রেন্ট নর্থ), অ্যানডি স্লাউটার (হ্যামারস্পিথ), মার্ক লাজারউইজ (অ্যাডিনবারা নর্থ অ্যান্ড লি) এবং ক্যারান বাক (ওয়েস্ট মিনিস্টার নর্থ)। এ ছাড়া চ্যান্সেলার জর্জ অসবর্ন, বিজনেস সেক্রেটারি ভিন্স ক্যাবল, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপম্যান্ট সেক্রেটারি জাস্টিন গ্রিনিং, ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি সাজিদ জাবিদসহ সরকারের ৬টি বিভাগে এ চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়।