শনিবার , ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > Uncategorized > শিরোপা লড়াইয়ে মাঠে নামছে রিয়াল-অ্যাতলেতিকো

শিরোপা লড়াইয়ে মাঠে নামছে রিয়াল-অ্যাতলেতিকো

শেয়ার করুন

স্পোর্টস ডেস্ক ॥

ঢাকা: এক দলের সামনে প্রতিশোধ নেওয়ার হাতছানি! আরেক দল অপেক্ষায় আরেকটি শিরোপা উল্লাসে মাতার। এমনই এক স্নায়ুক্ষয়ী, রুদ্ধশ্বাস ও উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের সামনে দাঁড়িয়ে দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ। তিন মৌসুমের মধ্যে যে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল রূপ নিয়েছে ‘মাদ্রিদ ডার্বি’ ম্যাচে।
শনিবার (২৮ মে) মিলানের সান সিরো স্টেডিয়ামে ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত পৌনে ১টায়। ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় ম্যাচে শেষ হাসি কে হাসবে সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা!

জিনেদিন জিদান কী পারবেন খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে রিয়ালকে শিরোপা এনে দিতে? নাকি দিয়েগো সিমিওন নিজেকে আরো অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবেন? সব প্রশ্নেরই উত্তর মিলবে সান সিরোর ফাইনাল শেষে।
২০১৪ সালে অ্যাতলেতিকোকে হারিয়েই গ্যালাকটিকোদের বহুল প্রতীক্ষিত ‘লা ডেসিমা’র (দশম চ্যাম্পিয়নস লিগ) অপেক্ষার অবসান ঘটে। এবার জিদানের রিয়ালের ১১তম ইউরোপিয়ান কাপ উঁচিয়ে ধরার চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে, নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় থেকে আর মাত্র এক ম্যাচ দূরে অ্যাতলেতিকো।

পর্তুগালের লিসবনে ২০১৪ আসরের ফাইনালে প্রায় জিতেই যাচ্ছিল অ্যাতলেতিকো। প্রথমার্ধের ৩৬ মিনিটে দিয়েগো গোদিনের গোলটিই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারক হতে পারতো। কিন্তু, অন্তিম মুহূর্তে রিয়ালকে উদ্ধার করেন সার্জিও রামোস। ইনজুরি সময়ের শেষ মিনিটে স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের নাটকীয় গোলেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। পরে অতিরিক্ত সময়ে গ্যারেথ বেল, মার্সেলো ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোলে লা ডেসিমা জয়ের উল্লাসে ফেটে পড়ে লস ব্লাঙ্কসরা।
তবে একটা পরিসংখ্যানে অ্যাতলেতিকোই এগিয়ে। ২০১৪ আসরের ফাইনালে হারের এখন পর্যন্ত ১০ বার রিয়ালের মুখোমুখি হয়েছে সিমিওনের শিষ্যরা। তার মধ্যে একবারই হারের মুখ দেখা অ্যাতলেতিকো পাঁচ ম্যাচে জয়োল্লাসে মাতে।

সে যাই হোক, লিসবনের পুনরাবৃত্তি হওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অভিজ্ঞতা রিয়ালকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে বলে মনে করেন সিআর সেভেন, ‘আমরা সঠিক পথেই রয়েছি। লা লিগায় ভালোভাবে শেষ করেছি এবং শনিবারের ম্যাচে সবাই ভালো ফলাফল অর্জন করতে চায়, যেটা রিয়ালের মৌসুম নির্ধারণ করে দেবে। এটি অর্জনের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

‘অনেক সময়ের অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এদিক থেকে আমরা কিছুটা সুবিধা পাব। দু’বছর আগে কী হয়েছিল সেদিকে অ্যাতলেতিকো সতর্ক থাকবে। আমি মনে করি, ম্যাচটি অন্যরকম হবে। অ্যাতলেতিকো জিততে চাইবে কিন্তু আমরাও প্রস্তুত। নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলবো এবং জয়ের ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী।

এদিকে, উরুর ইনজুরির কারণে রোনালদোর পূর্ণ ফিটনেসের ঘাটতির গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন জিদান। ফাইনালে পর্তুগিজ তারকা সেরা রূপে ফিরবেন বলেই জানিয়েছেন ফ্রেঞ্চ কিংবদন্তি। তবে স্বদেশী সেন্টার ব্যাক রাফায়েল ভারানকে পাচ্ছেন না জিদান। ইনজুরির কারণে সম্প্রতি ফ্রান্সের ইউরো স্কোয়াড থেকেও বাদ পড়েন ভারান। অপরদিকে, সিমিওনের হাতে পূর্ণ শক্তির দলই রয়েছে।
শেষ পাঁচবারের মুখোমুখি সাক্ষাতে দু’বার অ্যাতলেতিকো ও এক ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রোনালদো-বেল-বেনজেমারা। বাকি দুই ম্যাচ ড্র হয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সবশেষ দেখায় রিয়ালের মাঠেই রিয়ালকে ১-০ গোলে হারের লজ্জায় ডোবান গ্রিজম্যান-ফার্নান্দো তোরেসরা।

কিছু তথ্য:
# ১৪ বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে রিয়াল। অন্য কোনো টিমেরই এমন কীর্তি নেই। এর মধ্যে রেকর্ড ১০ বার শিরোপা ঘরে তোলে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তাদের সবশেষ চারটি শিরোপা আসে যথাক্রমে ১৯৯৮, ২০০০, ২০০২, ২০১৪ সালে।

# তৃতীয়বারের মতো (১৯৭৪, ২০১৪, ২০১৬) চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে অপেক্ষায় অ্যাতলেতিকো। আগের দু’বারই (বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে প্রথমবার, ১৯৭৪) তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়।

# এ নিয়ে গত চার বছরে তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে একই দেশের দু’টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ২০১৩ সালে বায়ার্ন-বুরুশিয়া (জার্মানি), ২০১৪ সালে রিয়াল-অ্যাতলেতিকো (স্পেন) ও এ বছরও একে অপরের মুখোমুখি মাদ্রিদের দুই ক্লাব। গতবার ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাসকে হারিয়ে ট্রেবল জয়ের উল্লাসে মেতেছিল স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সেলোনা।