শুক্রবার , ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ , ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > শুভ মহালয়া কল্পনা রাণী রায়

শুভ মহালয়া কল্পনা রাণী রায়

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ আজ শুভ মহালয়া। পিতৃপরে শেষে দেবীপরে শুরু। চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই চন্ডীতেই রয়েছে কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে দেবী দুর্গার।

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসবশারদীয় দুর্গাপুজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মহালয়া। শুক্রবার ভোরে চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে আবাহন ঘটবে দেবী দুর্গার। দেবীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে মর্ত্যলোকে। আগামী বৃহ¯পতিবার ষষ্ঠীপুজার মধ্য

দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত আজ শুক্রবার থেকেই সনাতন দুর্গাপুজার আগমনধ্বনি শুনতে পাবেন।

শাস্ত্রীয় বিধান মতে, মহালয়ার অর্থ হচ্ছে মহান আলোয় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে আবাহন। দুর্গাপুজার দুটি পরে (১৫দিনে একপ) রয়েছে, একটি হলো পিতৃপ, অন্যটি দেবীপ। অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপরে শেষ হয়, আর পরের দিন প্রতিপদ তিথিতে শুরু হয় দেবীপরে। আগামীকাল মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হচ্ছে সেই দেবীপ।

ধর্ম মতে, এই দিনে দেব-দেবীকূল দুর্গাপুজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। মহালয়ার দিন ভোরে মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আবাহন জানানো হয়। এদিন গঙ্গাতীরে ভক্তরা মৃত আত্মীয়স্বজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনায় তর্পণ করে থাকেন।

সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন। যার ফল হচ্ছে মড়ক মতথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ, মহামারীর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া । বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী স্বর্গলোকে বিদায় নেবেন গজে (হাতি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে বসুন্ধরা সুজলা, সুফলা ও শস্যপূর্ণ হয়ে উঠবে।

পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি এই পুজার আয়োজন করায় দেবীর এ পুজাকে বাসন্তী পুজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে শ্রী রামচন্দ্র শরৎকালে দেবী দুর্গার পুজা করেছিলেন। অকালে তথা শরৎকালে অনুষ্ঠিত হওয়া এই পুজা তখন থেকেই অকালবোধন নামে পরিচিত ।

উল্লেখ্য, আকাশবানী কলকাতার সকালবেলার (বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে চারটা) বিশেষ প্রভাতী অনুষ্ঠানে প্রয়াত বীরেন্দ্র কিশোর ভদ্র’র মহিষাসুর মর্দ্দিনী অনুষ্ঠানটি এক সময়ে মহালয়ার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। রঙিন টিভি আর ইন্টারনেটের যুগে বেতার যন্ত্র বলতে গেলে বিদায় নিয়েছে। এখন রেডিওতে এফ.এম ছাড়া অন্য কোনো তরংগের (মিডিয়াম ওয়েভ, শর্ট ওয়েভ) অনুষ্ঠান মোবাইল টাওয়ারের কারণে বেতারে আর শোনাও যায়না। ফলে মহালয়ার সকাল বলতেই বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র’র সেই দরাজ গলাটি বাংলাদেশে অন্তত আর ভেসে আসে না। তবে তার করে যাওয়া রেকর্ডেই আজ মন্দিরে মন্দিরে শোনা যাবে, চন্ডীর মন্ত্র:

জয়ন্তী মংগলাকালী ভদ্রকালী কপালিনী

দুর্গাশিবা, মাধাত্রী, স্বাহা স্বধা নমোহস্তুতে

সর্বমংগলমংগল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে

শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়নী নমোহস্তুতে।

শরণাগত দীনার্ত পরিত্রাণ পরায়নে

সর্বস্যার্তিহরে দেবী নারায়নী নমোহস্তুতে।

যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা

নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ, নমস্তস্যৈ নমঃ নমঃ ।

কর্মসূচি: মহালয়া উপলে মহানগর সার্বজনীন পুজা কমিটি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পুজামন্ডপে ভোর ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পুজা এবং মহালয়ার বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।