শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > শেখ হাসিনা সরে দাঁড়াতে পারেন, নির্বাচন যেতে পারে এপ্রিলে

শেখ হাসিনা সরে দাঁড়াতে পারেন, নির্বাচন যেতে পারে এপ্রিলে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥ শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে রেখে নির্বাচন নয়- বিএনপির এই অনড় অবস্থানকে আমলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পদ থেকে সরে যেতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে বলা হচ্ছে। সূত্রগুলো জানাচ্ছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন তা নিয়েই এখন দু’পক্ষের মধ্যে দরকষাকষি চলছে। আওয়ামী লীগ চাইছে নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে বর্তমান সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীকে অন্যদিকে বিএনপি চাইছে, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকেই নির্বাচনকালীন সরকার প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হোক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওমরাহ থেকে ফিরে আসার পর রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নাটকীয় কিন্তু রহস্যময় পরিবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিভিন্নভাবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে এমন ইঙ্গিত দেওয়া হয় যে, সরকারী দল, বিরোধী দলের দাবি বিবেচনায় নিয়ে বড় ধরনের ছাড় দিতে প্রস্তুত। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করতেও কিছুটা বেশি সময় নেওয়া হচ্ছে। সূত্রগুলো বলছে, ২৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করা হলেও নির্বাচনের দিনক্ষণ পিছিয়ে দিয়ে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।

বিএনপির একটি সূত্র বলছে, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সমঝোতার পাশাপাশি তারা নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নিয়েও সমঝোতা চায়। তারা চাইছে, বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। একই সঙ্গে ‘দুই সংসদের’ সাংবিধানিক জটিলতা এড়াতে আওয়ামী লীগও এ বিষয়ে একমত হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা বলছেন। উল্লেখ্য, বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি।

রাজনৈতিক পরিস্থিতির এই অগ্রগতিতে বিশ্লেষকরা সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তাদের অনেকেই বলছেন, আওয়ামী লীগ তার প্রতিপক্ষকে আন্দোলন থেকে দূরে রাখার কৌশল হিসেবেই নতুনভাবে সমঝোতার কথা তুলেছে। এই বিশ্লেষকরা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই কঠোর আন্দোলনের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তখনই নতুন করে আলোচনার প্রস্তাব উত্থাপন করছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটু স্থিতিশীল হলেই আবার ফিরে যাচ্ছে আগের যুদ্ধাংদেহী চরিত্রে। তাদের বক্তব্য, এই শেষ সময়ে এসে আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া তাদের দাবি সরকার পূরণ করে নেবে বলে বিএনপি যদি মনে করে তাহলে তারা ঠকবে এবং দেশকে অপেক্ষাকৃত কম ভুগিয়ে একটি সাধারণ নির্বাচন সেরে ফেলার কৃতিত্ব পাবে আওয়ামী লীগ।

এদিকে, আওয়ামী লীগের কিছু সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের ভেতরেই একটি শক্তিশালী পক্ষ রয়েছে যারা চায় না বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হোক। এই অংশটির চাওয়া বা পরামর্শকে গুরুত্ব না দিয়ে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া সরকারের পক্ষে কঠিন হতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এরপরও যদি নির্বাচনকালীন সরকার প্রধানের বিষয়টির সুরাহা হয়, তাহলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সহ নানান ছোট-খাট বিষয় নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলা করে পুরো প্রক্রিয়াটিকে ভেস্তে দেওয়ার সামর্থ্য আওয়ামী লীগের চরমপন্থী ওই অংশটির রয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন।

অন্যদিকে, বিএনপি চরমপন্থী একটি অংশ মনে করে, দাবি আদায়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি না হলে নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে না। তারা মনে করেন, বিএনপিকে সাথে না নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করাটা হবে আওয়ামী লীগের জন্য আত্মহত্যার সামিল। আওয়ামী লীগ এমন ভুল করার দিকে ধাবিত হলে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য নিজেদের ছাড় দেওয়ার কিছু নেই। তারেকপন্থী এই অংশটি মনে করে, আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও ২০১৪-এর শেষ বা ২০১৫-এর শুরুর দিকে এই সরকারের পতন ঘটবে। দুর্বল নৈতিকভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ওই সরকাকে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে যদি বিতাড়িত করা যায় তাহেল তারেক রহমানের নেতৃত্বে শক্তিশালী বিএনপির দীর্ঘ দিনের জন্য বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকার সুযোগ তৈরি হবে বলে তাদের বিশ্বাস।