শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫

হোম > জাতীয় > সন্তানদের সঙ্গে রাজপথে মায়েরাও

সন্তানদের সঙ্গে রাজপথে মায়েরাও

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥
গাজীপুর: রাজধানীতে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ফ্যাস্টুন হাতে রাজপথে দাঁড়িয়েছেন মায়েরাও।

মায়েরা বলেন, আমরা রাজপথে সন্তানদের লাশ আর দেখতে চাই না।

তাদের ফ্যাস্টুনে লেখা ছিল- ‘সন্তানের রক্ত আর না, প্রয়োজনে মায়েদের রক্ত নিন, তবুও ওদের বাঁচতে দিন’। ‘আমি একজন মা, আমার সন্তানের রক্ত আর দেখতে চাই না।’

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চান্দনা চৌরাস্তা, শিববাড়ি মোড়, টঙ্গীসহ বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা গাড়ির চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেসের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। এতে গাজীপুরের সড়ক-মহাসড়কে গাড়ির সংকট দেখা দিলে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টঙ্গীর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা টঙ্গী স্টেশন রোড, কলেজ গেট এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এ সময় পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরে যেতে বলে। তারা অবরোধ না তুলে গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করলে একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে দুপুর দেড়টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি।

অপরদিকে বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তায় স্থানীয় কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে মহাসড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় তারা মহাসড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহন আটকে চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চায়। এক পর্যায়ে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা তাদের নয় দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিরাপদ দূরত্বে থেকে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়। একই সময় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শহরের শিববাড়ি মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। তারা দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করে ৯ দফা মেনে নেয়ার আহ্বান জানায়। শিক্ষার্থীরা দুপুর আড়াইটার দিকে অবরোধ কর্মসূচি শেষ করে বাড়ি ফিরে যায়।

গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানান, শিক্ষার্থীরা যানবহনের ফিটনেস এবং চালকেদের ড্রাইভিং লাইসেন্স যাচাই করছে। এতে করে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

গাজীপুরে স্থানীয় একটি কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান, পুলিশ ঘুষ খেয়ে অপরিণত চালকদের গাড়ি চালাতে সহযোগিতা করছে। গাড়ির ফিটনেস এবং চালকের লাইসেন্স না থাকলেও তাদের গাড়ি চালাতে তারা সহায়তা করছে। এজন্য সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে, মানুষ মরছে।

গাজীপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহামেদ সরকার জানান, পরিবহনের চালক ও শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নামলেই তারা হয়রানি ও হামলার শিকার হচ্ছেন। তাই তারা যানবাহন চালানো থেকে বিরত রয়েছেন।