বৃহস্পতিবার , ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ , ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ , ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫

হোম > গ্যালারীর খবর > সর্বনাশা আবুল রসে রসাতলে সরকার

সর্বনাশা আবুল রসে রসাতলে সরকার

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ঢাকা : অক্টোপাসের মতো একের পর এক বিপদ আঁকড়ে ধরছে সরকারের কণ্ঠনালী। বিপদে বিপর্যস্ত হয়ে গত ৪টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গোহারা হেরেছে মতাসীন মহাজোট। এর আগে এবং পরে কয়েকটি ছোট পৌরসভার নির্বাচন হয়ে গেলো। সেগুলোতেও হেরেছে মহাজোট।

সামনে গাজীপুর নির্বাচনের ভয়াবহ বিপদ সংকেত এবং সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের অশনি সংকেত। যার জন্য সরকারের এই করুন দশার শুরু লাক্সমার্কা হাসির জনক সাবেক কথিত সফল যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মহা খোশ মেজাজে। অনেক গুলো জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রমান সাইজের বিশাল বিশাল বিজ্ঞাপন দিয়েই যাচ্ছেন একের পর এক। এছাড়া রাজধানীর ভেতরে ও বাইরে প্রমান সাইজের বড় বড় বিলবোর্ডের সাহায্যে হাসোজ্জ্বল মানুষটি মহা হাস্যকর সব কর্মসৃজন করছেন হররোজ।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা ব্যঙ্গ করে বলেন, উনি আসলেই এক মহা আবুল-মালের চেয়ে বড়।

ঘটনার শুরু জোট সরকারের মতা গ্রহণের দিন থেকেই সেদিন তিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে। তার পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাকো ইন্টারন্যাশনাল সম্পর্কে বহুমুখী বিতর্ক ও নানা অভিযোগ হরহামেশাই আলোচিত হয়ে আসছে এরশাদ এর জামানা থেকেই।

তার ব্যক্তি জীবনও বিতর্কের উর্ধে নয়, বিশেষ করে টিসিবিতে কর্মশালীন সময়ে তার চাকুরী চ্যুতি নিয়ে নানান উপকথা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে বিষাক্ত নাগিনীর উত্তপ্ত নিঃশাসের মতো। তার সৈয়দ উপাধীও প্রশ্নের বাইরে নয়। কাজেই এমন একজন মানুষকে সরকারের সবচেয়ে স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয় প্রদান করা হলো এই প্রশ্ন ছিলো সকলের। আর সরকার দলের সর্বত্র চাপা ােভ আর সীমাহীন বিষন্নতা।

দায়িত্ব পাবার পর একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিতে থাকেন তিনি। আচার- আচরণ, কর্ম-চিন্তা ও চেতনার বহির্প্রকাশে ঘটতে থাকে দুর্ঘটনা গুলো আর যা কিনা সরকারকে ফেলে বিব্রতকর অবস্থায়। শুধু তাই নয় তার প্রতিটি সেবা প্রকল্প নিয়ে সরকারের কর্তাব্যক্তিকে বিপদে পড়তে হবে আগামী দিন এমনই সতর্ক বানী উচ্চারণ করছেন বিশেষজ্ঞগণ। যদি প্রশ্ন করা হয় ঢাকা-চট্রগ্রাম ৪ লেনের কাজকে পেয়েছে কিংবা কতো উচ্চমুল্যে পেয়েছে? অন্যদিকে ইথাল থাই এর সঙ্গে চুক্তি নিয়েও রয়েছে বহু কিছু। রেলের ঢাকা-ভৈরব ডাবল লাইন সহ হাজার হাজার কোটি টাকার ক্রয় বাণিজ্য রয়েছে ভয়াবহ সব চিত্র।এসবের কাছে কালো বিড়াল তত্ত্ব কোন ঘটনাই নয়- একেবারেই নস্যি।

বিগত জোট সরকারের আমলের বিতর্কিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন সহ আরো কয়েকটি ঠিকাদারী কোম্পানী কি করে এই সরকারের আমলে আংগুলে ফুলে কলাগাছ হলো তা নিয়ে মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। হঠাৎ করেই দেখা গেলো কাকরাইলের আসিফ ম্যানসন নামের বহুতল শতকোটি টাকা মূল্যের ভবনটি তমা ভবন হয়ে গেলো। আলাদিনের চেরাগের সেই দৈত্য বা রূপকথার আলাদীনকে বাংলার মানুষ খুঁজছে।

সবশেষে এলো পদ্মা সেতু প্রসঙ্গ। সারা দেশে, সারা বিশ্বে কেবল ছিঃ ছিঃ রব। দেশের মান-মর্যাদা, সরকারের ভাবমূর্তি এবং গ্রহণ যোগ্যতার সামনে ও পেছনে বড় বড় সব প্রশ্নবোধক চিহ্ন পড়ে গেলো। তিনি মন্ত্রিত্ব হারালেন। সামনে এলো দুদক। এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি মোটামুটি একটি অবস্থান ও আস্থা ছিলো এদেশের মানুষের আস্থা স্থলে। জনাব আবুল হোসেনের জন্য পুরো প্রতিষ্ঠানই ইমেজ হারালো। দুধ ও ডাবের পানি দিয়ে পুরো দুদক চত্ত্বর ধোয়া মোছা করলেও আর সেই ইমেজ ফেরানো যাবেনা। দুদক প্রধান গোলাম রহমান বড় কষ্ট নিয়ে বিদেয় নিলেন। যাবার সময় বলে গেলেন যে তার নেতৃত্ত্ব পরিচালিত বাঘ রুপী প্রতিষ্ঠানটির দাঁত ও নখ ছিলোনা। উপড়ে ফেলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন কেনো দুদকের দাঁত ও নখ উপড়ে ফেলা হলো এবং কার জন্য। সূত্র : ডিনিউজ।

প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য হাজারো বিতর্ক যাকে নিয়ে তিনি কিন্তু হেসেই চলেছেন। পত্রিকার পাতায়, অনলাইন মিডিয়ার বর্নাজ্জ্বল কম্পিউটার পর্দায় কিংবা বড় বড় বিলবোর্ডে তিনি অবিরত হাসছেন আর সরকারী দলের ল কোটি অসহায় জনতা কাঁদছেন সারাদেশে। তাদের চোখের পানিতে রসাতলে গেলো ৪ সিটি কর্পোরেশনের সরকারী দলের যোগ্যতম সব প্রার্থীরা। তিনি হাসছেন এখনো এবং সেই ভুবন মোহিনী হাসির ঝংকারে রসাতলে যাচ্ছে সরকার।